সোমবার ২৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চলমান রাজনৈতিক সংকট উত্তরণের উপায়

  |   শুক্রবার, ০৭ মার্চ ২০১৪ | প্রিন্ট

চলমান রাজনৈতিক সংকট উত্তরণের উপায়

ড. আহমদ আবদুল কাদের

dr-Ammed-Quader

দেশে গভীর রাজনৈতিক সংকট চলছে। প্রধানতঃ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করার পর থেকেই সংকট শুরু। দিন যতই গিয়েছে ততই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবীতে আন্দোলন ঘনিভূত হয়েছে। বিভিন্ন জরিপেও দেখা গেছে যে দেশের প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ এ দাবীর সপক্ষে। তাই সরকার আন্দোলন দমন করা ও স্থায়ীভাবে ক্ষমতায় থাকার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে। প্রথমত, তারা নিজেরা ক্ষমতায় থেকে জাতীয় নির্বাচন করার ব্যাপারে পূর্বেই পাকা সাংবিধানিক ব্যবস্থা করে ফেলে। দ্বিতীয়ত, সর্বশক্তি নিয়োগ করে ফ্যাসিষ্ট কায়দায় বিরোধী দলের কর্মসূচী পন্ড করার পদক্ষেপ নেয়। তৃতীয়ত, সিনিয়র নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের পাইকারী হারে গ্রেফতার ও হয়রানী করা হয়। চতুর্থত, শেষ পর্যন্ত ১৮ দল যাতে নির্বাচনে আসতে না পারে তার জন্য বিভিন্ন ধরণের কূটকৌশলের আশ্রয় নেয়।

আন্দোলন দমন করার জন্য বিরোধী দলের কর্মসুচী পুলিশী এ্যাকশনে পন্ড করার ব্যবস্থা করা হয়। দিনের পর দিন বিরোধী দলের অফিসে তালা ঝুলিয়ে রাখা হয়। বিরোধী দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দকে বিভিন্ন হাস্যকর অভিযোগে বার বার গ্রেফতার করা হয়। দেশে সৃষ্টি হয় এক ত্রাসের রাজত্ব। মহাজোট বহির্ভূত দেশের সকল রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ দেশের বুদ্ধিজীবিসমাজ, সিভিল সোসাইটি আলাপ আলোচনার মাধ্যমে উদ্ভূত সমস্যার সমাধানের আহবান জানান। বিদেশী কুটনীতিক, জাতিসংঘ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ সবাই চাপ দয়ে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সব দলের অংশগ্রহনে সুষ্ট ও নিরুপেক্ষ নির্বাচন করার জন্য। কিন্তু সরকার এমন পলিসি গ্রহন করে যেন বিরোধী দল নির্বাচনে না যেতে পারে। কারন, বিভিন্ন জরিপে বিরোধী দলের প্রতি সমর্থন পরিলক্ষিত হয়। তাছাড়াও সেপ্টেম্বর’১৩ তে অনুষ্ঠিত পাঁচটি সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে সরকারী দলের ভরাডুপি ঘটে। এটা পরিস্কার হয়ে যায় দুঃশাসন, গুম-খুন, শেয়ারবাজার, পদ্মাসেতু, হলমার্ক সহ বিভিন্ন কেলেংকারী, হেফাজতের সমাবেশে নিরিহ আলেম উলামার উপর নারকীয় আক্রোমন, হামলা-মামলা, গ্রেফতারী, হয়রানী ইত্যাদি কারনে জনগনের অধিকাংশ সরকার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। তাই তত্ত্বাবধায়ক ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে যে সরকারী জোটের ভরাডুবি হবে এতে সরকারী দলের লোকেরাও নিশ্চিত ছিল। তাই সরকারী পক্ষ কোন অবস্থায়ই তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি না মানার উপর অনমনীয় থাকে।
সর্বশেষ ২৯ ডিসেম্বর ঢাকায় বিরোধী জোট আহুত “মার্চ ফর ডেমোক্রেসী” প্রতিহত করার জন্য সরকার কার্যত ঢাকাকে সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। যাতে কেউ রাস্তায় বের হতে না পারে তার জন্য রাস্তা নামা মাত্র গুলি করার পলিসি গ্রহন করা হয়। জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যাতে তার বাসা হতে বের হতে না পারেন তার জন্য বালি ভর্তি ট্রাক ও জলকামান নিয়ে রাস্তাঘাট বন্ধ ও পুলিশ বাহিনী দিয়ে তার বাসার চারিপাশ ঘেরাও করে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। বস্তÍত হত্যা, গ্রেফতার, হয়রানী ইত্যাদির মাধ্যমে ফ্যাসিষ্ট কায়দায় সরকার যেন তেন প্রকারে নির্বাচন করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠে। বিরোধী দল, দেশের সিভিল সোসাইটি এমনকি ভারত ছাড়া অন্যান্য বড় দেশগুলোর আহবানকে উপক্ষো করে সরকার ৫ জানুয়ারী ভয়াভহ ধ্বংশ যজ্ঞের মাধ্যমে নির্বাচনের নামে এক লোকহর্ষক সার্কাসের আয়োজন করে।

৫ জানুয়ারী নির্বাচন একটি প্রহসনের নির্বাচন ছাড়া আর কিছুই নয়। সেটি এমন নির্বাচন যেখানে ৩০০ আসনে প্রার্থী মাত্র ৩৯০, ইতিহাসে সবচেয়ে কম সংখ্যক প্রার্থী। ১৫৩টি আসনে ১জন ছাড়া কোন প্রার্র্থী পাওয়া যায়নি। তাই সেখানে নির্বাচন করারই প্রয়োজন হয়নি। এর অর্থ দেশের বেশীর ভাগ ভোটারই তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। বাকি ১৪৭টি আসনে নির্বাচন হয়েছে মাত্র ২৩৭ প্রার্থী নিয়ে। সেখানে আবার বেশীরভাগ ক্ষেত্রে আওয়ামীলীগের বিপরীতে আরেকজন আওয়ামীলীগকে দাড় করিয়ে দেওয়া হয়েছে। ৪০টি দলের মধ্যে মাত্র ১২টি দল অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে ১১টি হচ্ছে মহাজোটের শরিক। ১টি হচ্ছে সদ্য গঠিত নামসর্বস্ব দল। বি এন পি সহ নিবন্ধিত ৪০টি দলের দুই-তৃতীয়াংশের বেশী দল এ নির্বাচন বর্জন করেছে। এ নির্বাচন হয়েছে আওয়ামীলীগের নেতৃত্ত্বাধীন মহাজোটের প্রার্থীদের মধ্যে। তাও আবার জাতীয় পার্টির এরশাদকে ভয় দেখিয়ে, তাকে কৃত্রিম রোগী বানিয়ে সি এম এইচ এ ভর্তি করিয়ে তার স্ত্রী রওশন এরশাদের মাধ্যমে জাতীয় পার্টিকে নির্বাচনে আনা হয়েছে। এরশাদ সাহেব প্রকাশ্যে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছেন, তার দলের অনেকেই প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন। অনেককে আবার প্রার্থীতা প্রত্যাতার করতে দেয়া হয়নি। এরশাদ সাহেব এমন একজন এমপি যার প্রার্থীতা জোর করে বহাল রাখা হয়েছে। তাকে জোর জবরদস্তি এমপি বানানো হয়েছে। সেটা এমন নির্বাচন যেখানে পঞ্চাশের অধিক ভোটকেন্দ্রে কোন ভোটারই যায়নি। এটা এমন নির্বাচন যেখানে প্রায় ক্ষেত্রেই ভোটকেন্দ্রে উপস্থিতির হার ৫% -১০%। তদুপরি কৃত্রিমভাবে ভোট বাড়ানোর জন্য আছে জালভোটের ছড়াছড়ি, সীল মারার মহাউৎসব। জোর করে কেন্দ্র দখল । এমন বিষয় নির্বাচনের দিন টিভি মিডিয়াতে এসেছে। কাজেই এটি নির্বাচন নয়, নির্বাচনের নামে একটি তামাশা মাত্র।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে নতুন দলকে নিবন্ধন প্রদান, নির্বাচনে প্রার্থীতা বাছাই, প্রত্যাহার ও মার্কা বন্টন প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে কাজ করার পরিবর্তে সরকারের আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠান হিসাবে কাজ করেছে। সরকার যে ভাবে চেয়েছে সেভাবেই নির্বাচন কমিশন ভূমিকা পালন করেছে।

এ নির্বাচনে সরকার পক্ষ দৃশ্যত বিজয়ী হলেও প্রকৃতপক্ষে তাদের নৈতিক পরাজয় ঘটেছে। সরকার নির্বাচনকে কলঙ্কিত করেছে। তামাসা ও হাস্যকর বিষয়ে পরিণত করেছে। শুধু দু-তৃতীয়াংশ দলই নয় বরং দেশের ৮০-৯০% মানুষ সে নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করেছে। তাছাড়া অনেক চেষ্টা করেও ১৮ দলে কোন ভাঙ্গন সৃষ্টি করতে পারেনি। এমনকি ১৮ দলের বাইরের (মহাজোটের বহিঃর্ভূত) কোন দলকেও সরকার নির্বাচনে নিতে পারেনি। ১৮ দল বহিঃর্ভূত কোন ইসলামী দলকেও এ নির্বাচনে নেয়া সম্ভব হয়নি। এটি অবশ্যই ১৮ দলের আন্দোলনের একটি বিরাট সাফল্য।

৫ জানুয়ারীর তথাকথিত প্রহসনের নির্বাচনের পর থেকে এ সংকট এক নবতর পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। আওয়ামী লীগ মহলে তাদের দমন নীতি ও কুটকৌশলের সাময়িক বিজয়ে চলছে উল্লাস ও স্বস্তি। অন্যদিকে কার্যত ভারত ছাড়া এ নির্বাচনকে কেউ স্বাগত জানায়নি। পশ্চিমা শক্তিগুলো সরকারের উপর ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করে আসছে। সব দলের অংশগ্রহনে দ্রুততম সময়ে আরেকটি নির্বাচন করার জন্য। সরকার এগুলোতে চাপ অনুভব করলেও তারা বাহ্যত আমলে নিচ্ছে না। অপর দিকে তারা বিরোধী দলের নেতা কর্মীদের অব্যাহত গ্রেফতার ও হয়রানী করে যাচ্ছে। চলছে অসংখ্য গুম খুনের ঘটনা। যৌথ বাহিনীর অভিযানের নামে ক্রস ফায়ারে রাজনৈতিক কর্মীদের হত্যা, মানুষের বাড়ীঘর পুড়িয়ে দেয়ার মতো ঘটনা ঘটছে। তদুপরি মানুষের কন্ঠকে স্তব্ধ করার নানা কূট কৌশলের আশ্রয় নেয়া হচ্ছে। সংসদে সরকারী দল ও তথাকথিত বিরোধী দলকে সাথে নিয়ে চলছে নব্য বাকশাল কায়েমের প্রক্রিয়া ও ষড়যন্ত্র। তথাকথিক নির্বাচনের আগে প্রধান মন্ত্রী বারবার বলেছেন দশম সংসদ নির্বাচন সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা ও নিয়ম রক্ষার নির্বাচন। এখন মন্ত্রিরা বারবার বলছেন যে তারা ৫ বছর পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবেন। তদুপরি ১৯ দলকে বেকায়দায় ফেলার জন্য তড়িঘড়ি করে উপজেলা নির্বাচন দিয়েছে। সরকারের ষড়যন্ত্র বুঝার ফলে প্রস্ততির অভাব সত্ত্বেও ১৯ দল নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে শক্তি প্রয়োগ, কেন্দ্র দখল, জালভোট ইত্যাদি সত্ত্বেও বিরোধী দল প্রথম দুই দফা নির্বাচনে ব্যাপকভাবে জয় লাভ করেছে।

বর্তমান সংকট কাটিয়ে উঠার জন্য এখন সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে। প্রধান মন্ত্রি বারবার বলেছিলেন যে দশম সংসদ নির্বাচন নিয়ম রক্ষার নির্বাচন। নিয়ম রক্ষার নির্বাচনতো হলো। এখন একটি সুষ্ঠ ও সবদলের অংশগ্রহনে নিরপেক্ষ অনুষ্ঠানে সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে। ৫ বছর ক্ষমতায় থাকার বাগাম্বর পরিহার করে দ্রুত ১৯ দলের সঙ্গে একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে সংলাপ শুরু করতে হবে। আলোচনার মাধ্যমে যতদ্রুত সম্ভব একাদশ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পদ্ধতি ও সময় নির্ধারন করতে হবে। তাহলেই দেশ সম্ভাব্য ভয়াবহ পরিনতির হাত থেকে রক্ষা পেতে পারে। দেশ, জাতি ও গনতন্ত্রের স্বার্থে সরকারকে সুবিবেচকের পরিচয় দিতে আহবান জানাচ্ছি।

এদিকে বি এন পি আপাতত আন্দোলন স্থগিত করে ঘর গোছানোর কাজে ব্যস্ত। আওয়ামী লীগ ও বিদেশীদের কথায় বি এন পির কেউ কেউ শরীকদের সম্পর্কে নেতিবাচক মনোভাব পোষন করতে শুরু করেছে। চলছে টানাপোড়েন। কারো কারো মধ্যে ভাবখানা এমন যে বি এন পি একাই ক্ষমতা যাওয়ার জন্য যথেষ্ট। কোন শরীকদলের প্রয়োজন নেই। কিন্তু বিগত ৯১ থেকে ইতিহাস ভিন্ন কথা বলে। স্বৈরাচার উত্তর ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বি এন পি সরকার গঠনের মতো যথেষ্ট আসন পায়নি। জামায়াতের সমর্থন নিয়েই তাদের সরকার গঠন করতে হয়। ৯৬ সালে বি এন পি একা নির্বাচন করে এবং বিরোধী দলে পরিনত হয়। পরবর্তীতে আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে খেলাফত মজলিস ও অন্যান্য কয়েকটি ইসলামী দলের সমন্বয়ে গঠিত তদানিন্তন ইসলামী ঐক্যজোট কার্যকর ও নিয়ামকের ভূমিকা পালন করে। ফলে ২০০১ সালে বি এন পি চারদলীয় জোটের মাধ্যমে আবার ক্ষমতায় আসে। কাজেই ৯০ উত্তর বি এন পির একক ভাবে সরকার গঠনের কোন ইতিহাস নেই। একই অবস্থা আওয়ামী লীগেরও। তাদেরকে জোট মহাজোট করে জয়লাভ করতে হয়েছে। আজও মৌলিকভাবে অবস্থার কোন পরিবর্তন হয়নি। আওয়ামীলীগ ও তার বলয়ের কূট প্রচারনা এবং দাবী “বি এন পি কে ইসলামী শরীকদের থেকে সরে আসতে হবে”। এটি হবে বি এন পির জন্য আত্মঘাতি। আওয়ামীলীগ জানে যে বর্তমান আওয়ামীলীগ ও তার মহাজোটের একক মুকাবিলা বি এন পির পক্ষে সম্ভব নয়, তাই তারা বি এনপিকে আলেম উলামা ও ইসলামী দলগুলো থেকে বিচ্ছিন্ন করতে চায়। বি এন পিকে বিচ্ছিন্ন করতে পারলেই আওয়ামীলীগ ও মহাজোট এবং বাম বলয়ের শক্তিগুলো একা বি এন পিকে চেপে ধরবে। আর বি এন পি একার পক্ষে ত্রিমুখী আক্রমন মুকাবিলা করা সম্ভব হবে না। ফলাফল যা হবার তাই হবে। বি এন পি ভোট পায় তার অন্যতম কারন হচ্ছে বি এন পি আলেম-উলামা এবং ইসলামের প্রতি নমনীয়, তারা ভারত ঘেষা নয়, তারা মুসলিম বিশ্ব ঘেষা। যদি বি এনপি তার এসব চরিত্র হারিয়ে ফেলে তাহলে জনগনের নিকট আওয়ামীলীগ ও বি এনপির মধ্যে পার্থক্য থাকবেনা। এর ফলে আওয়ামীলীগই লাভবান হবে। বি এনপি নয়। কাজেই এসব সত্য মনে রেখেই বি এনপিকে তার আন্দোলনের কর্মকৌশল তৈরী করতে হবে। বিরোধীদের কূট প্রচারনায় প্রভাবিত হলে বি এনপিরই ক্ষতি, আওয়ামীলীগের নয়।

উপজেলা নির্বাচন চলছে। উপজেলা নির্বাচন সরকার পরিবর্তনের নির্বাচন না হলেও স্থানীয় পর্যায়ে জনগনের নেতৃত্ব লাভ এবং জাতীয়ভাবে নৈতিক প্রভাব সৃষ্টির নির্বাচন। তাই উপজেলা নির্বাচনে ১৯ দলের একক প্রার্থী দেয়া প্রয়োজন ছিল। তাহলে উপজেলা নির্বাচনে ১৯ দলীয় জোট ৮০-৯০% ক্ষেত্রেই নিশ্চিতভাবেই বিজয় লাভ করতো। কিন্তু অনেকক্ষেত্রেই তা সম্ভব হয়নি। তাছাড়া বি এনপিরও একাধিক প্রার্থী রয়েছে। অন্যদিকে শরীক দলগুলোর দাবী দাওয়া বিবেচনায় নিয়া দরকার ছিল কিন্তু বি এনপি পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে সাড়া খুব কম। যে অল্প কয় জায়গায় শরীক দলের প্রার্থীতা দাবী করেছিল সেসব ক্ষেত্রে পূর্ন সুবিবেচনা করা দরকার ছিল। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে তা হয়নি। ফলে বেশ কিছু আসনে শরীক দলের প্রার্থী ও বি এনপির একাধিক প্রার্থী রয়ে গেছে।

পশ্চিমা শক্তিগুলো যতই সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করুক না কেন কার্যত দেশের অভ্যন্তরে চাপ সৃষ্টি না হলে সরকার তার পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ন করার চেষ্টা করেই যাবে। কাজেই বি এনপি যদি বিদেশীদের উপর ভরসা করে বসে থাকে তাহলে মারাত্মক ভূল করবে। তাই সরকারের বিরুদ্ধে কার্যকর আন্দোলন গড়ে তোলার প্রস্তুতি নিতে হবে এবং যতদ্রুত সম্ভব রাজপথে নামতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে সরকারী অনুপ্রবেশকারীরা যাতে আন্দেলনকে সহিংসতার দিকে না নিকে পারে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। শরীক দলগুলোর সাথে সম্পর্ক জোরদার করতে হবে। শরীক দলের উদ্বেগ ও সন্দেহ খোলাখুলি আলোচনার মাধ্যমে দূর করতে হবে। তৃণমূল পর্যায়ে “সংগ্রাম পরিষদ” কার্যকর করতে হবে। ঢাকায় সংগঠন ও আন্দোলনকে মজবুত করার জোর পদক্ষেপ নিতে হবে। সাথে সাথে শরীক দলগুলোকে তাদের নিজেদের ঘর গোছাতে হবে। তাহলেই অর্থবহ কিছু আশা করা যায়।

( ৪ঠা মার্চ’ ২০১৪ জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত  গোলটেবিল বৈঠকে পঠিত)

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ০৪:১৩ | শুক্রবার, ০৭ মার্চ ২০১৪

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com