নওগাঁ: মালয়েশিয়া প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধা নওগাঁর মান্দা উপজেলার মৃত সাইফুল ইসলামের লাশ অবশেষে দেশে আনার প্রাণান্তকর চেষ্টা শুরু করা হয়েছে। লাশের জন্য বিমানভাড়াসহ আনুষঙ্গিক সব কাজে প্রায় ৪ লাখ টাকার মতো প্রয়োজন হতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে । কিন্তু অসহায় পরিবারের পক্ষে এত টাকা যোগান দেওয়া সম্ভব না। এমনিতেই মালয়েশিয়া যেতে সাড়ে ৪ লাখ টাকার বেশি খরচ হয়ে গেছে। যার বেশিরভাগ ধারদেনা ও ঋণ করে নেওয়া। সেই টাকাই পরিশোধ করা নিয়ে নানা সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে। তার উপর এখন লাশ দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রচুর টাকার প্রয়োজন। যা যোগান দেওয়া তাদের জন্য একেবারেই অসম্ভব। এজন্য মালয়েশিয়ায় কর্মরত প্রবাসী একই এলাকার (প্রসাদপুর গ্রামের) লায়েব আলী মন্ডল , অর্থ সচিব দুলাল হোসেন মন্ডল ও সুমন মন্ডলের আন্তরিক প্রচেষ্টায় একটি তহবিল গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে মালয়েশিয়ায় কর্মরত বাংলাদেশের ক্ষুদ্র একটি কমিউনিটি বিশেষ করে নওগাঁর মান্দা উপজেলার ৭৬ জনের একটি ক্ষুদ্র দল টাকা সংগ্রহের জন্য একটি তহবিল গঠন করেছেন। এ তহবিল অদূর ভবিষ্যতে যারা প্রবাসে গিয়ে মারা যাবেন। তাদের লাশ দেশে তাদের পরিবার ও আত্মীয়- স্বজনের কাছে ফেরতের জন্য কাজ করে অবিস্মরণীয় অবদান রাখবে। এছাড়া সরকারি ভাবে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছে।
মৃতের মামা আবেদ আলী শেখ ও স্ত্রী কহিনুর বিবি বলেন, অনেক টাকার প্রয়োজন। কিছু টাকা মালয়েশিয়ায় কর্মরত মান্দার প্রবাসীদের কাছ থেকে আদায় করে কিছু তহবিল গঠন করা হচ্ছে বলে জেনেছেন। তবে এ অপ্রতুল টাকায় সম্পূর্ণ কাজ হবে না। আরো টাকার প্রয়োজন হবে। যা তাদের পক্ষে যোগান দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া লাশ বাড়ি ফিরিয়ে আনতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন করা হয়েছে। অচিরেই হয়ত একটি ভালো ফলাফল আশা করছেন তারা। এ বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের যত দ্রুত সম্ভব হস্তক্ষেপ দাবি তাদের।
৭নং প্রসাদপুর ইউপির চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আবদুল মতিন মন্ডল বলেন, অসহায় পরিবারের পক্ষে মৃত অসহায় সাইফুল ইসলামের লাশ দেশে ফিরিয়ে আনতে আবেদনপত্র, জরুরি দরকারী কাগজপত্রসহ এ সংক্রান্ত যাবতীয় নথি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে সরকারের প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট বিভাগে পাঠানোর জন্য যোগাযোগ করা হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লায়লা আঞ্জুমান বানু বলেন, প্রবাসীর পরিবারের সাথে কথা হয়েছে। এ বিষয়ে একটি আবেদনপত্র পাওয়া গেছে। অবগতি ও ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের নিকট পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
প্রসঙ্গত: গত বুধবার দুপুরে মালয়েশিয়ায় স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মারা যান নওগাঁর মান্দা উপজেলার প্রসাদপুর গ্রামের মৃত আবদুর রহমানের ছেলে সাইফুল ইসলাম। তার লাশ দেশে ফিরিয়ে আনা নিয়ে অসহায় ওই গরিব পরিবারের সদস্যদের মধ্যে নানা শংকার সৃষ্টি করে।