শনিবার ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আধুনিক আরবি উপন্যাস: মহাকাব্যের প্রতিচ্ছবি

  |   মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৩ | প্রিন্ট

শাহনেওয়াজ বিপ্লব

arabic

‘উপন্যাস’ নামের আধুনিককালের জনপ্রিয় সাহিত্য আঙ্গিকটি পশ্চিম ও লাতিন আমেরিকার পরম্পরায় চিরঋণী যাঁদের কাছে, তারা হলেন আরব দেশের আরবি ভাষার মানুষ। বসবাস তাঁদের আলজেরিয়া, বাহরাইন, কমেরো, জিবুতি, মিসর, ইরাক, জর্ডান, কুয়েত, লেবানন, লিবিয়া, মৌরিতানিয়া, মরক্কো, ওমান, ফিলিস্তিন, কাতার, সৌদি আরব, সুদান, সোমালিয়া, সিরিয়া, তিউনিসিয়া, আরব আমিরাত ও ইয়েমেন; এক কথায় যেসব দেশ আরব বিশ্ব বা আরবি ভাষাভাষী হিসেবে বিশ্বে পরিচিত।

মানব সভ্যতায় পুরো মধ্যযুগ ধরে যখন পদ্য, পয়ার আর কবিতার দোর্দণ্ড প্রতাপ চলেছে, ঠিক তখন স্রোতের বিপরীতে গিয়ে আরবরাই উপহার দিয়েছেন আরব্য উপন্যাস, ‘আলিফ লায়লা ওয়া লায়লা’ বা এক হাজার এক রাতের গল্প, যা পুরো বিশ্বকে তুমুল আলোড়িত করে রেখেছিল কয়েক শতাব্দী ধরে।

আরব্য উপন্যাসের বৈচিত্র্যময় সিন্দবাদ, আশ্চর্য প্রদীপের মালিক আলাদীন অথবা আলীবাবা ও ৪০ চোরের বিস্মৃত গল্প-পথ ধরে আজকের আধুনিক সাহিত্যাঙ্গিক গল্প ও উপন্যাসের জন্ম, ব্যবধান শুধু এতটুকুই যে মধ্যযুগের আরব্য উপন্যাস রচিত হয়েছিল দৈত্যদের নিয়ে, পরীদের নিয়ে, রাজা-বাদশা বা অসাধারণদের নিয়ে। আর আধুনিক উপন্যাসে আধিপত্য অতিসাধারণ মানুষের সাবঅলটার্ন মানুষদের নিয়ে। আধুনিক ঔপন্যাসিকরা আবিষ্কার করেন যে মানুষের মধ্যেই রয়েছে সবচেয়ে বেশি গল্প; তার ঘরে, তার মনে, তার চারদিকে, তাকে ঘিরে আছে গল্প এবং তা শোনার মতো, তা উপন্যাস হয়ে ওঠার মতো।

তাই বলা যায়, আধুনিক আরবি উপন্যাস পৃথিবীর অন্য দেশের উপন্যাসের মতো হঠাৎ করে সাহিত্যে এসে জায়গা করে নেয়নি, বরং এর রয়েছে দীর্ঘ ঐতিহ্যের ধারা। যদিও লিখিত আরব্য উপন্যাস পাওয়া গেছে ১৪ শতকে, কিন্তু আরব্য উপন্যাসের অনেক গল্প, সাহিত্যসমালোচকরা বলছেন, ইসলাম কায়েমের বহু আগেই মুখে মুখে ছড়িয়েছিল আরবিভাষীদের মধ্যে।

এমনকি আধুনিক উপন্যাসে কেন্দ্রীয় চরিত্রগুলোর ব্যাপ্তি, গল্প বলার ঢং এবং বিস্তৃত উপাখ্যানকে বিবেচনায় আনলে আরব্য উপন্যাসের ভেতর পাওয়া যায় বরং আধুনিক উপন্যাসেরই কাঠামো। তা ছাড়া আধুনিক যে রহস্য উপন্যাস তারও পূর্বপুরুষ আরব্য উপন্যাস। রহস্য উপন্যাসের উপাদান ও চারিত্র্য বিবেচনায় শাহেরজাদীর মুখে বর্ণিত ‘তিন আপেল’ গল্পটি একটি বড় উদাহরণ : ‘এক জেলে একটি ভারী সিন্দুক পেয়েছিল টাইগ্রিস নদীতে। জেলে সেটি অব্বাসীয় খলিফা হারুন-আল-রশীদের কাছে বিক্রি করে। তারপর খলিফা সিন্দুকটি ভাঙলে ভেতরে পান মৃত এক মহিলার লাশের বেশ কয়টি টুকরো। হারুন-আল-রশীদ হত্যারহস্য উদ্ঘাটনের জন্য তার সেনাপতি জাফর ইবনে ইয়াহিয়াকে তিন দিনের সময় বেঁধে দেন এবং হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করতে ব্যর্থ হলে তাঁকে হত্যা করা হবে বলে জানান।’ পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহকে কেন্দ্র করে গল্পের ক্রমঅগ্রসরতায় তিন আপেলের কাহিনী পৃথিবীর অন্যতম সেরা রহস্য উপন্যাস বলেই দাবি করেন সাহিত্যবোদ্ধারা। আধুনিক অ্যাডভেঞ্চারাস উপন্যাসের জনকও আরবি ঔপন্যাসিক ইবনে তোফায়েল। তিনি তাঁর ‘ফিলোসোফাস আটোডিডাকটাস’ উপন্যাসের নায়ককে ছেড়ে দিয়েছিলেন নির্জন একাকী মরুভূমিতে। যার অনুকরণে পরে ডানিয়েল ডিফোর উপন্যাস ‘রবিনসন ক্রুসো’ এবং রুডইয়ার্ড কিপলিংয়ের ‘জাঙ্গল বুক’_যেখানে টারজান নামের শিশুটি বনে পরিত্যক্ত হয়ে একটি ভল্লুকের স্নেহ-পরিচর্যায় বড় হয়েছিল।

মধ্যযুগের আরব্য উপন্যাসকে কেন্দ্র করে রহস্য উপন্যাস বা অভিযাত্রার রোমাঞ্চ উপন্যাসসহ আধুনিক নানা উপন্যাস ধারার সৃষ্টি হলেও আরব বিশ্বে আধুনিক কোনো উপন্যাস নিয়ে হৈ চৈ হতে দেখি না আমরা মিসরের ঔপন্যাসিক নাগিব মাহফুজের নোবেল পুরস্কার পাওয়ার আগ পর্যন্ত।

অথচ যুদ্ধ আর সংঘাতে বিক্ষুব্ধ আরব দেশগুলো থেকেই জন্ম হওয়ার কথা ছিল পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ উপন্যাস। তেলের খনি পাওয়ার পর আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স অথবা ইউরোপের অন্য দেশগুলো হঠাৎ করে আরব দেশগুলোর ওপর লোলুপ দৃষ্টি, বেদুইন এবং স্বজাতির সংস্কৃতি বাতিল করে দিয়ে পাশ্চাত্য সংস্কৃতি আমদানির দ্বন্দ্ব ও সংঘাত ফুটিয়ে তোলার জন্য, বিশাল আরব বিশ্বে যে প্রচুর শক্তিশালী আধুনিক ঔপন্যাসিকের জন্ম হওয়ার দরকার ছিল_ওই রকম হয়নি। ১৯৮৮ খ্রিস্টাব্দে মিসরীয় ঔপন্যাসিক নাগিব মাহফুজ তাঁর ‘কায়রো ট্রিলজি’ উপন্যাসের জন্য নোবেল পুরস্কার পেলে বিশ্ব প্রথমবারের মতো দৃষ্টি ফেরায় আধুনিক আরবি উপন্যাসের ওপর।
নাগিব মাহফুজের আগ পর্যন্ত পুরো বিশ শতকে, অন্য আরবিভাষী ঔপন্যাসিকদের ব্যর্থ হওয়ার যেটি প্রধান কারণ সেটি হচ্ছে, বিশ শতকের আধুনিক আরবি ঔপন্যাসিকরা আরব্য উপন্যাসের চিরকালীন ধারাকে তাঁদের প্রধান পথ বলে মনে করেছিলেন। এর ভেতর শুধু ছোট্ট একটি অংশ ‘নিউ লিট্যারারি মুভমেন্ট’ নাম দিয়ে পাশ্চাত্য দর্শন, ধ্যান-ধারণাকে আরবিতে আত্মস্থ করতে শুরু করেন। চলি্লশের দশক মূলত আরবি আধুনিক উপন্যাসের সূচনাকাল। ঔপনিবেশিক শোষণ, জাতীয়তাবাদ, নারীবাদ, নির্বাসন, অভ্যুত্থান এবং যুদ্ধই আধুনিক আরবি উপন্যাসের উপাদান। এসব বিষয়কে কেন্দ্রে রেখে আধুনিক আরবি উপন্যাস রচনায় যাঁরা দক্ষতা দেখিয়েছেন, তাঁদের

একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা নিচে দেওয়া হলো :

নাগিব মাহফুজ (জন্ম ডিসেম্বর ১১, ১৯১১, মৃত্যু : আগস্ট ৩০, ২০০৬) : আধুনিক আরবি উপন্যাসের যা কিছু অর্জন তার অনেকটাই নাগিব মাহফুজের হাত ধরে এসেছে। মিসরের এ ঔপন্যাসিক লিখেছেন ৫০টিরও বেশি উপন্যাস। আধুনিক আরবি উপন্যাসে ‘অস্তিত্ববাদ’কে তিনি এবং তাওফিক আল হাকীমই প্রথম নিয়ে এসেছিলেন। ‘কায়রো ট্রিলজি’ (১৯৫৬-৫৭) নাগিব মাহফুজের বিখ্যাত উপন্যাস। উপন্যাসটি তিনি তিন ভাগে বিভক্ত করে লিখেছিলেন। তিন ভাগের নাম দিয়েছিলেন যথাক্রমে ‘প্যালেস অব ওয়াক’, ‘প্যালেস অব ডিজায়ার’ এবং ‘সুগার স্ট্রীট’। মৌলভী এল সাইদ আহম্মেদ আবদেল গাওয়ার এবং তাঁর পরিবার ও তিন প্রজন্মের ঘটনা (যার সময়টা ছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধ থেকে ১৯৫০ পর্যন্ত) নিয়েই ‘কায়রো ট্রিলজি’ উপন্যাস। মহৎ এ উপন্যাসটির জন্য মাহফুজকে বালজাক, ডিকেন্স, তলস্তয় এবং গলসওয়ার্থির সঙ্গে তুলনা করা হয়।

তবে নাগিব মাহফুজের সবচেয়ে জনপ্রিয় উপন্যাস ‘চ্যাটার অব দি নাইল’ (১৯৬৬)। এ উপন্যাসে তিনি বলেছেন যৌনতার কথা; সমকাম আর সমাজতন্ত্রের জয়গানও গেয়েছেন। উপন্যাসটিতে সেনাশাসক জামাল আবদুল নাসেরের সময়ের সমালোচনা করা হয়েছে, যে জন্য নাসেরের পর ক্ষমতায় আসা আনোয়ার সাদাত উপন্যাসটি নিষিদ্ধ করে রেখেছিলেন অনেক দিন।

নাগিব মাহফুজের আরেকটি বিখ্যাত উপন্যাস ‘চিলড্রেন অব জেবেলরি’ (১৯৫৯)। ধর্মের অবমাননার অভিযোগে ব্লাসফেমি আইনে লেবানন ব্যতীত পুরো আরব বিশ্বে উপন্যাসটি নিষিদ্ধ হয়েছিল। এ উপন্যাসে জেবেলরির সন্তানরা একই সঙ্গে বিশ্বাস রেখেছে ইহুদি, খ্রিস্টান এবং ইসলাম ধর্মে।

নাগিব মাহফুজের অন্য উপন্যাসগুলোতে ঘুরে-ফিরে এসেছে মূলত কায়রোর নাগরিক জীবনের নানা দ্বন্দ্ব। কায়রোর আধুনিকায়নে সমাজব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ও সে পরিপ্রেক্ষিতে নানা সংঘাত এবং পশ্চিমা মূল্যবোধের আগমনে আরব মূল্যবোধের বিলুপ্তির আশঙ্কা।
ইলিয়াস খৌরি (জন্ম ১২ জুলাই ১৯৪৮, বৈরুত, লেবানন) : নাগিব মাহফুজের পর আধুনিক আরবি সাহিত্যের সবচেয়ে সেরা ঔপন্যাসিক। বিশ্বের বহু ভাষায় তাঁর উপন্যাস অনূদিত হয়েছে। ১৯৭৭ সালে প্রকাশিত ‘দি লিটল মাউন্টেন’ তাঁর বিখ্যাত উপন্যাস। এ উপন্যাসে বর্ণিত হয়েছে লেবাননের বিভীষিকাময় গৃহযুদ্ধ।

এ ছাড়া ‘দি জার্নি অব লিটল গান্ধী’ তাঁর আরেকটি বিখ্যাত উপন্যাস, যেখানে গান্ধীর মতোই অহিংস চিন্তার নেতারা উপন্যাসের নায়ক হয়ে গ্রাম থেকে অভিবাসী হয়েছে বৈরুত শহরে। তবে ‘গেট অব দি সান’ (১৯৯৮) ইলিয়াস খৌরির সবচেয়ে জনপ্রিয় উপন্যাস, যা তাঁকে বিশ্বে বিপুল পরিচিতি এনে দিয়েছে। উপন্যাসটির বিষয় এক ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তু, যে লেবাননে বসবাস করছে ১৯৪৮ সালের নাকবা যুদ্ধের পর থেকে। পরে মিসরীয় পরিচালক ইয়োসরি নসরুল্লাহ উপন্যাসটির ওপর ছবি তৈরি করে জনপ্রিয়তা এনে দেন ইলিয়াস খৌরিকে। খৌরির অন্যান্য উপন্যাসেও উঠে এসেছে মানুষের আচরণের রক্ষণশীলতা ও রাজনীতি। উপন্যাস বর্ণনায় তিনি প্রমিত আরবীকে প্রাধান্য দিয়েছেন।

এমিল হাবিবি (জন্ম ২৮ জানুয়ারি ১৯২২-মৃত্যু ২ মে ১৯৯৬) : ফিলিস্তিনি খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী। তাঁর বিখ্যাত উপন্যাস ‘দি সিক্রেট লাইফ অব সাঈদ : দি পেসঅবটিমিস্ট’ ধ্রুপদি আধুনিক আরবি উপন্যাস। ওই উপন্যাস মূলত সাঈদ নামের এক ইসরায়েলি আরবিভাষীর জীবনচিত্র। উপন্যাসে ইসরায়েলের অভ্যন্তরে বাস করা আরবিভাষীদের সঙ্গে ইহুদিদের সহাবস্থান প্রাধান্য পেয়েছে। উপন্যাসটির জন্য এমিল হাবিবি একই সঙ্গে পিএলওর ‘আলকুদস’ পুরস্কার এবং ইসরায়েলের পক্ষ থেকে ‘ইসরায়েল প্রাইস ফর লিটারেচার’ পান।

আবদুর রহমান মুনিফ (জন্ম ১৯৩৩-মৃত্যু ২৪ জানুয়ারি ২০০৪) : বিশ শতকের সেরা ইরাকি ঔপন্যাসিক। তিনি লিখেছিলেন ১৫টি উপন্যাস। তাঁর সবচেয়ে সেরা উপন্যাস ‘সিটিজ অব সল্ট’ (১৯৮৭)। আরবের বেদুইন সংস্কৃতির সঙ্গে আধুনিক তেলসমৃদ্ধ সংস্কৃতির সংঘাত চিত্রিত হয়েছে এ উপন্যাসে। এডওয়ার্ড সাঈদের মতে, ‘সিটিজ অব সল্ট’ হচ্ছে আরবি সাহিত্যে সিরিয়াস ধারার একমাত্র আধুনিক উপন্যাস, যেখানে তেল ঘিরে বিদেশিদের লোলুপ দৃষ্টি এবং তেল পাওয়ার পর আরববিশ্বের বদলে যাওয়ার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।

সোনাল্লা ইবরাহিম (জন্ম ১৯৩৭) : আধুনিক আরবি সাহিত্যে বামপন্থী ঔপন্যাসিক হিসেবে সর্বাধিক পরিচিত। তাঁর ব্যক্তিগত বাম-পক্ষপাত ব্যক্ত হয়েছে তাঁর উপন্যাসেও। ইবরাহিমের উপন্যাস ভিন্ন রকম। উপন্যাসের ঘটনা তিনি ব্যক্ত করেন প্রথম পুরুষে, অনেকটা সংবাদপত্রের রিপোর্টের আদলে। তাঁর সব উপন্যাসের মূল বিষয় বিশ্ব অর্থনৈতিক শক্তিধর দেশগুলো কর্তৃক তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর অর্থনীতিকে ধ্বংস করার চেষ্টা নিয়ে। তাঁর বিখ্যাত উপন্যাস ‘অনার’।

তায়েব সালিহ (জন্ম ১৯২৯-মৃত্যু ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০০৯) : সুদানি ঔপন্যাসিক। সালিহর বিখ্যাত উপন্যাস ‘সিজন অব মাইগ্রেশন টু দি নর্থ’ (১৯৬৯) প্রথম প্রকাশিত হয় বৈরুতে। ২০০৬-এ আরব লিটারারি একাডেমী এই উপন্যাসকে ২০ শতকের সেরা আরবি উপন্যাস বলেই স্বীকৃতি দিয়েছে। ঔপনিবেশিক শোষণ তাঁর উপন্যাসের অন্যতম বিষয়। সুদানের খার্তুমের এক উপজাতির বেওয়ারিশ শিশুর কলোনিতে বেড়ে ওঠার ইতিহাস, কাম এবং প্রতিশোধ স্পৃহার গল্প। যেন আরব্য রজনীরই অপার স্টোরি এই উপন্যাস।

আহলাম মোসতেনঘানেমি : আলজেরিয়ান ঔপন্যাসিক। বিখ্যাত উপন্যাস ‘মেমোরি অব দ্য ফ্ল্যাশ’ (১৯৯৩)। যে উপন্যাসে ঔপনিবেশিক শোষণ এবং আলজেরিয়ার মুক্তিসংগ্রাম বর্ণিত হয়েছে।

হানড়বা মিনা (জন্ম ১৯২৪) : বিখ্যাত সিরিয়ান ঔপন্যাসিক। তাঁর উপন্যাস ব্যক্তিগত সামাজিক বাস্তবতা ও শ্রেণীসংগ্রামকে কেন্দ্র করে। তাওফিক আল হাকীম (জন্ম ১৮৯৮-মৃত্যু ১৯৮৭) আধুনিক আরবের অন্যতম ঔপন্যাসিক। তাঁর ‘এ স্প্যারো ফ্রম দি ইস্ট’ একটি গুরুত্বপূর্ণ উপন্যাস। এ ছাড়া আধুনিক আরবি উপন্যাস লিখে চলেছেন এমন কয়েকজনের ভেতর মে জিয়াদে, হানরবা আল সাঈদ, জাকারিয়া টেমার, আব্বাস মাহমুদ আল আক্কাদ অন্যতম।

বিশ্বের অন্যান্য সাহিত্যের আধুনিক উপন্যাসের সঙ্গে আধুনিক আরবি উপন্যাসের তুলনা করলে তেমন বেশ ঐশ্বর্যশালী মনে হয় না আরবি উপন্যাসকে। এর কারণ ২০ শতকে পৃথিবীর চারদিকে, জীবনে ও শিল্পে যখন ছড়িয়ে পড়ছিল আধুনিক চেতনা, আধুনিক বিশ্বসাহিত্য যখন নিত্যনতুন ধারার উপন্যাস রচনায় ব্যস্ত, আরবি সাহিত্য তখন ব্যস্ত মধ্যযুগ পরিক্রমায়। তাই পুরো ২০ শতকে মানব সভ্যতার আধুনিককালের উন্মেষের সময়টাতে আধুনিক চেতনার কোনো বিকাশ ঘটেনি আরবি সাহিত্য তথা আরবি কবিতা-গল্প-উপন্যাস_কোনোটাতেই। ফলে আধুনিক আরবি উপন্যাসগুলো পড়লে মনে হয়, এগুলো শুধু আরবদের জন্য মুসলমানদের লেখা উপন্যাস। আরব ও মুসলমানের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিশ্বমানের আধুনিক উপন্যাসের জন্য আমাদের তাই অপেক্ষা করতেই হবে, আগামী দিনের আরবি ঔপন্যাসিকদের পথ চেয়ে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ০১:২২ | মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৩

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com