সোমবার ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

র‍্যাব (RAB) কি লক্ষ্মী বাহিনী থেকে সেই আতঙ্কের রক্ষী বাহিনীতে পরিণত হতে যাচ্ছে ?

  |   রবিবার, ১১ মে ২০১৪ | প্রিন্ট

রাকেশ রহমান 

rakesh

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটলিয়ন (Rapid Action Battalion) বা র‌্যাব (RAB) বাংলাদেশের আভ্যন্তরিক সন্ত্রাস দমনের উদ্দেশ্যে গঠিত চৌকস বাহিনী। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত এই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ২০০৪ সালের ২৬ মার্চ গঠিত হয় এবং একই বছরের ১৪ এপ্রিল (পহেলা বৈশাখ) তাদের কার্যক্রম শুরু করে। বাংলাদেশ পুলিশ, বাংলাদেশের সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে র‌্যাব গঠিত হয়। র‌্যাব-এর সদর দপ্তর ঢাকার উত্তরায় অবস্থিত।

র‌্যাব মনোগ্রাম

১। জাতীয় ফুল (শাপলা) র‌্যাবের মনোগ্রামের শীর্ষভাগে অবস্থিত জাতীয় ফুল শাপলা। শাপলা বাংলাদেশের জাতীয় ফুল এবং বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীক।

২। মনোগ্রামের সবুজ রংয়ের জমিনে লাল সূর্য। অনন্ত সবুজের দেশ বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার সাথে মিল রেখে র‌্যাবের মনোগ্রামের সবুজ ও লাল রংয়ের জমিন নির্ধারণ করা হয়েছে। এলিট ফোর্স র‌্যাব এর প্রতিটি সদস্যের হৃদয়ে রয়েছে বাংলাদেশের পতাকার গৌরব সমুন্নত রাখার ‍বজ্র কঠিন প্রতিজ্ঞা।

৩। জাতীয় স্মৃতিসৌধ। মনোগ্রামের কেন্দ্রে অবস্থিত স্মৃতিসৌধ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও অন্যান্য শহীদের আত্মত্যাগের প্রতীক। জাতীয় স্মৃতিসৌধ শহীদের লালিত স্বপ্নের সুখী বাংলাদেশ গড়ার অংগীকার র‌্যাব সদস্যদের স্মরণ করিয়ে দেয়।

৪। ধানের শীষ । র‌্যাবের মনোগ্রামের স্মৃতিসৌধের প্রতিকৃতির দুইপার্শ্বের ধানের শীষ কৃষি প্রধান বাংলাদেশের ঐতিহ্যের প্রতিচ্ছবি এবং সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের প্রতীক।

৫। অগ্রগতির চাকা। র‌্যাবের মনোগ্রামের স্মৃতি উৎকীর্ণ স্মৃতিসৌধ এর নিচে অবস্থিত ধাতব চাকা সময়ের সাথে দ্রুত উন্নয়নশীল বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রতীক । যে কোন মূল্যে সন্ত্রাস নির্মূল করে হৃদয়ের দেশ বাংলাদেশের অর্থনীতির অগ্রগতির চাকা অব্যাহত রাখতে র‌্যাব প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

৬। র‌্যাবের মূলমন্ত্র। মনোগ্রামের সর্বনিম্নে উৎকীর্ণ বাংলাদেশ আমার অহংকার র‌্যাবের মূলমন্ত্র। এ মূলমন্ত্রে উজ্জীবিত র‌্যাবের প্রতিটি সদস্য সন্ত্রাসমুক্ত সুখী এবং সমৃদ্ধ দেশ গড়ার জন্য সর্বদা বজ্র কঠিন সংকল্পবদ্ধ। এখানে ২০০৮ এর আগের নিরপেক্ষ র‌্যাবের উল্লেখযোগ্য কিছু সফলতার বিবরণ দেয়া হল আসামীর নাম , অভিযোগ , গ্রেফতার ও তথ্যসূত্র সহঃ ১. মুফতি হান্নান – বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্রকারী এবং নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন হরকাতুল জিহাদের প্রথম সারির নেতা।

১ অক্টেবর ২০০৫ ২. পিচ্চি হান্নান – সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ২৬ জুন ২০০৪, পালিয়ে যাবার সময় হত্যা করা হয়। ৩. দেবাশীষ – পিচ্চি হান্নানের সহযোগী ক্রসফায়ারে মৃত, ২৪ জুন ২০০৪ ৪. মোল্লা শামীম – তিনটি হত্যাসহ ১০টি মামলার আসামী ক্রসফায়ারে মৃত, ৬ সেপ্টেম্বর ২০০৪ ৫. সাহেব আলী – ১৭ আগস্ট ২০০৫ সালের দেশব্যপী বোমা হামলার জঙ্গীবাদী লিফলেট প্রকাশকারী এবং বিতরণকারী। পৃথিবীর উন্নত দেশ তথা পশ্চিমা দেশগুলোর দিকে তাকালে দেখতে পাবো, যে দেশ যত বেশী উন্নত তার প্রশাসনও ততো বেশী মজবুত ও অমায়িক তাদের ব্যবহার। যেহেতু আমি বিশ্বের উন্নত দেশের উন্নতম একটি দেশ ইতালিতে আছি, এই দেশেও বাংলাদেশের র‍্যাবের মতো একটি আইন, শৃঙ্খলা বাহিনী আছে নাম ” ক্যারাবিনিএরি ” যার নাম শুনলে শুধু ইতালিয়ানরা কেন গোটা ইউরোপ বাসিন্দারা ভয় পায়।

তবে এই ভয় খুন, গুম, ছিনতাই, ডাকাতি বা ধর্ষণ হওয়ার ভয় নয় ; একটা স্বস্থির ভয়। ভয় পায় এই ভেবে যে নিশ্চয় কোন ভুল বা অন্যায় হয়েছে তা না হলে ক্যারাবিনিএরি কেন খুঁজবে ? দুর্ভাগ্য বা সৌভাগ্য, যাইহোক তাদের ভুল বসত কারণে আমাকে এক রাত কাটাতে হয়েছিলো তাদের ক্যাম্পে। শীতের রাত কষ্ট হলেও কি যে তাঁদের সুব্যবহার খাবার,হট কফি, শীতের পোশাক, কম্বল এমন কি সিগারেট পর্যন্ত তাঁদের পকেট থেকে বের করে আমাকে ধূমপান করতে দিয়েছিলো , এই অমায়িক আচার – ব্যবহার বাংলাদেশের র‍্যাব বা পুলিশ কারো কাছ থেকে কল্পনাতেও আশা করা যায় না। কিন্তু ভিন্ন ধরণের চিন্তা চেতনা নিয়ে শুধু মাত্র দেশ ও জাতির নিরাপত্তা জোরদার করতে উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশের এই র‍্যাব বাহিনীর প্রতিষ্ঠার কারণ।

ঐ সময় আমি দেশে ছিলাম কি সুন্দর দেশ ছিল, তখন কি স্বস্থিই না ছিল দেশে। মানুষ কতই না সম্মান করতো র‍্যাবকে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এক মাত্র দেশ নেত্রী সাবেক প্রধান মন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া তাঁর শাসন আমলে তাঁর দলীয় সংসদ সদস্য নাসির উদ্দিন পিন্টু সাহেবকে এক মাসের ডিটেন্শন দিয়ে কারাগারে প্রেরন করে নজির বিহীন আইন শৃঙ্খলার স্বাধীনতাকে সম্মান দিয়েছিলেন। এবং পিন্টু সাহেবও তাঁর ছোট্ট ভুলের মাশুল মাথা পেতে মেনে নিয়ে বাংলাদেশের আইনকে সম্মান করেছিলেন। র‍্যাবের সফলতায় ক্রস ফায়ারে ও গ্রেপ্তারে অনেকেই ছিলেন বিএনপি-র বকে যাওয়া নেতা কর্মী, তাঁদের পক্ষে বেগম খালেদা জিয়া একটি সুপারিশও করেন নি বরং স্বাধীনতা দিয়েছিলেন র‍্যাবকে তাই ঐ সময় র‍্যাবের সম্মান ছিল বাংলাদেশ সহ বহিঃবিশ্বে আকাশ ছোঁয়া। ১৯৭১ সালের পরবর্তী সময়ে যদি আমরা পর্যালোচনা করি তাহলে কি দেখবো ? শেখ মুজিবর রহমান এক নায়ক তন্ত্র করতে চালু করেছিলো ‘রক্ষীবাহিনী’।

সেই রক্ষীবাহিনীর ভূমিকা ছিল সরকারের অন্যায়ের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুললে তাদেরকে গুম, হত্যা, হামলা, লুটপাট, অকারণে জেলে ভরিয়ে নির্যাতন করা, মামলা দেওয়া, ধর্ষণ ইত্যাদি। যেমন – সিরাজ সিকদার একজন আদর্শবান নেতাকে মেরে পবিত্র সংসদে দাঁড়িয়ে শেখ মুজিবর রহমান বলেছিলেন ‘কোথায় আজ সেই সিরাজ সিকদার’ ? ঠিক আজ রক্ষীবাহিনীর ন্যায় এই পবিত্র র‍্যাব বাহিনীকে দিয়ে এই অবৈধ সরকার শেখ হাসিনা খুন, গুম, লুটপাট, ধর্ষণ সহ সকল প্রকার দল, নেতা-নেত্রী, কর্মীদের অন্যায় ভাবে নির্যাতনের মাধ্যমে শেষ করে দিচ্ছে। একটি উদাহরণ দেওয়া হলঃ প্রমাণ সরূপ তুলে ধরলাম যথা, রবিবার ১১/০৫/২০১৪ ইং র‍্যাবের তিন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।

নারায়ণগঞ্জ সাত খুনের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে চাকরিচ্যুত র‍্যাব-১১ এর সাবেক কমান্ডার সহ তিন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। এদের মধ্যে বর্তমান সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপ রয়েছে, তারেক সাঈদ, ত্রান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া এর জামাতা। বাংলাদেশের কোটি জনতার পক্ষ থেকে র‍্যাব বাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। প্রিয় র‍্যাব বাহিনীর সদস্য ও অফিসারগণ, আপনারাও এদেশের সন্তান।

এদেশের প্রতি আপনাদেরও দায়িত্ব কর্তব্য ও ভালোবাসা রয়েছে। অন্তত আপনাদের বিবেককে জিজ্ঞাসা করেন, যে সমগ্র দেশবাসী পূর্বে অর্থাৎ র‍্যাবের জন্মলগ্নের সময় কীভাবে আপনাদেরকে দেখতো, কতই না সম্মান করতো। কিন্তু আজ বর্তমানে আপনাদেরকে কি অবস্থায় দেখে, কি চোখে দেখে ? তাই নূন্যতম বিবেকের তাড়নায় হলেও একবার আপনারা স্বাধীন ভাবে নিজেদের সুনাম ফিরিয়ে আনতে নিরিপেক্ষ ভাবে শক্ত ভূমিকায় ফিরে এসে দেশ ও জাতির আশা, আকাংক্ষা ও ভরসা ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করুন আপনাদের পোশাকের বহনকারী মনোগ্রাম (ব্যাচের) ন্যায়।

লেখক : রাকেশ রহমান , রাজনীতিবিদ ও প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক

বাংলাদেশ সত্যের শক্তি ও যুগ্ন আহ্বায়ক নাগরিক আন্দোলন C.M)

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১১:৩৭ | রবিবার, ১১ মে ২০১৪

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com