সোমবার ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের কোটি কোটি জনতার পক্ষ থেকে দেশ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে "Mother OF Democracy" ঘোষণা

  |   বুধবার, ১৪ মে ২০১৪ | প্রিন্ট

রাকেশ রহমান

SOTTER SOKTI

কারো লেখা পড়ো না , কোন বই পড়ো না । ভাল কথা শুনো না । তোমার নাম শেখ হাসিনা । তুমি পিতৃমাতৃহীন স্বামী কর্তৃক পরিত্যক্ত এক রমণী । তোমার মেয়ের ভাষায় তুমি বহুরূপী । তোমার ছেলের ভাষায় তুমি স্বার্থপর । তোমার প্রিয় গৃহভৃত্য রমাকান্ত , যাকে তুমি ভালোবাসতে , সেও তোমাকে ভালোবাসতো । কিন্তু সেও তোমার কাছে রইল না । তুমি এমন এক প্রাণী । “জিয়া আমার প্রেরনা খালেদা জিয়া আমার সাহস তারেক রহমান আমার রাজনীতির স্পন্দন বি এন পি আমার ভালোবাসা । ” উপরোক্ত এই চারটি লাইন আমি জেনে শুনে বুঝে উপলপদ্ধি করি। প্রত্যেকটি লাইনে তাৎপর্য রয়েছে, আমি এ নিয়ে আজ আলোচনা করব না।

আজকের বিষয় চলমান বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে, যদি বলি তাহলে বলতে হবে… “রাজনীতির মূল উদ্দেশ্যই কি শুধু ক্ষমতায়ন ? দেশের গনতন্ত্র চর্চা ও স্বাধীনতা কি রাজনীতির ভিতরে পড়ে না ?” যদি তা হয় তাহলে কেন বর্তমান সরকার ক্ষমতাকে কেন্দ্র করে এই সহিংসতা চালিয়ে যাচ্ছে , যার ভয়াবহতা ১৯৭১ সালের পাকিস্থানী আর্মিদেরও হার মানিয়েছে। যদিও তারা বাংলাদেশের একটি বড় রাজনৈতিক দল কিন্তু তারা সব বাদ দিয়ে ক্ষমতায়নে বিশ্বাসী । বহিঃ বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি এই সরকারের কারণে এতোই নিচে নেমে এসেছে যে প্রবাসীদের পথে পথে চলতে ফিরতে অপমানিত হতে হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাচন গুলোতে যে ভাবে নির্লজ্জের মতো বর্তমান সরকার সহিংসতা চালিয়ে জোর করে বাংলাদেশের গনতন্ত্রকে গণ ধর্ষণ করলো তা হলুদ মিডিয়া প্রকাশ না করলেও সত্য কখন চাপা থাকে না। তাই এই নমুনাগুলো প্রমাণ সরূপ সবার চোখের সামনে চলে এসেছে। আজ জীবনের নিরাপত্তার জন্য প্রবাসী হয়ে বসবাস করছি। কিন্তু আমি ভীত নয়। বাংলাদেশের গনতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনে আমি আমার সার্ধ মতো কাজ করে যাচ্ছি। বাংলাদেশের গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য জানুন কে বেশি ত্যাগ করেছে আপোষহীন দেশনেএী বেগম খালেদা জিয়া ১৯৮১ সালের ৩০ মে এক ব্যর্থ সামরিক অভুত্থ্যানে জিয়াউর রহমান নিহত হন। এরপর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের বিভিন্ন স্তরের নেতা কর্মীদের আহ্ববানে তিনি ১৯৮২ সালে ৩ জানুয়ারি বিএনপিতে যোগ দেন।

১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ সেনাপ্রধান লেফটেনেন্ট জেনারেল এরশাদ বিচারপতি আব্দুস সাত্তারকে ক্ষমতাচ্যুত করেন। বেগম জিয়া এর বিরোধিতা করেন। ১৯৮৩ সালের মার্চ মাসে তিনি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হন। ১৯৮৩ সালের ১ এপ্রিল দলের বর্ধিত সভায় তিনি প্রথম বক্তিতা করেন। বিচারপতি সাত্তার অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪ সালের ১০ মে পার্টির চেয়ারপার্সন নির্বাচনে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হন। তার নেতৃত্বেই মূলতঃ বিএনপির পূর্ণ বিকাশ হয়। ১৯৮৩ সালের বেগম জিয়ার নেতৃত্বে সাত দলীয় ঐক্যজোট গঠিত হয়। একই সময় এরশাদের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়। বেগম জিয়া প্রথমে বিএনপিকে নিয়ে ১৯৮৩ এর সেপ্টেম্বর থেকে ৭ দলীয় ঐক্যজোটের মাধ্যমে এরশাদ বিরোধী আন্দোলন শুরু করেন। একই সময় তার নেতৃত্বে সাত দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন পনের দলের সাথে যৌথভাবে আন্দোলনের কর্মসূচী শুরু করে।

১৯৮৬ সাল পর্যন্ত পাঁচ দফা আন্দোলন চলতে থাকে। কিন্তু ১৯৮৬ সালের ২১ মার্চ রাতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা এরশাদের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিলে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে বাঁধার সৃষ্টি হয়। ১৫ দল ভেঙ্গে ৮ দল ও ৫ দল হয়। ৮ দল নির্বাচনে যায়। এরপর বেগম জিয়ার নেতৃত্বে ৭ দল, পাঁচ দলীয় ঐক্যজোট আন্দোলন চালায় এবং নির্বাচন প্রত্যাখান করে। ১৯৮৭ সাল থেকে খালেদা জিয়া “এরশাদ হটাও” এক দফার আন্দোলন শুরু করেন। এর ফলে এরশাদ সংসদ ভেঙ্গে দেন। পুনরায় শুরু হয় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন। অবশেষে দীর্ঘ আট বছর একটানা নিরলস ও আপোষহীন সংগ্রামের পর ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে বিএনপি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। সেই নির্বাচনে খালেদা জিয়া মোট পাঁচটি আসনে অংশ নিয়ে পাঁচটিতেই জয়লাভ করেন। ১৯৯১ সালের ১৯ মার্চ বেগম খালেদা জিয়া পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারে প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হন।

তার সরকার দেশে সংসদীয় পদ্ধতির সরকার কায়েম করে। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়। ১৯৯৬ সালে সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি মোট ১১৬ আসনে জয় লাভ করে, যা সরকার গঠনে যথেষ্ঠ ছিলনা। আওয়ামী লীগ মোট ১৪৭ আসন লাভ করে, তারা জাতীয় পার্টির সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করে। বিএনপি সপ্তম সংসদে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ববৃহত্ বিরোধী দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপি জামাতে ইসলামী, ইসলামী ঐক্যজোট ও জাতীয় পার্টির সাথে চারদলীয় ঐক্যজোট গঠন করে।

২০০১ সালের ১ অক্টোবর সংসদ নির্বাচনে চারদলীয় ঐক্যজোট বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করে। খালেদা জিয়া এই সংসদেও প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব পালন করছেন। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর এই সংসদের মেয়াদ শেষ হয়। ১৯৮২ সালের ৩ জানুয়ারি বিএনপির প্রাথমিক সদস্য হিসেবে দলে যোগ দেবার পর থেকে মোট চার বার তিনি গ্রেফতার হন। বাংলাদেশের ইতিহাসে ত্যাগের একটি বিরল ঘটনা এবং তিনি এখনও বাংলাদেশের গণতন্ত্র রক্ষার তাগিদে আপোষহীন অটল রয়েছেন। এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের সময় ১৯৮৩ সালের ২৮ নভেম্বর, ১৯৮৪ সালের ৩ মে, ১৯৮৭ সালের ১১ নভেম্বর গ্রেফতার হন। সর্বশেষ তিনি ২০০৭ সালের ৩রা সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার হন এবং এই মামলায় চলতে থাকা তদন্তে তাঁর বিরুদ্ধে কোন অভিযোগই প্রমাণিত হয়নি।

বিদেশ সফর ২০১২ সালে বেগম খালেদা জিয়া একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিদেশ সফর করেন। আগস্টে তিনি রাজ পরিবারের আমন্ত্রণে সৌদি আরবে যান এবং পবিত্র ওমরাহ পালন করেন। এই সফরে তিনি সৌদি রাজপুত্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সালমান আব্দুল আজিজ আল সৌদের সাথে সাক্ষাত করেন। তাদের বৈঠকে দ্বিদেশীয় সম্পর্ক ও সৌদি আরবে বাংলাদেশের শ্রম বাজারের সংকট উত্তরণের বিষয়ে আলোচনা হয় । অক্টোবরে খালেদা জিয়া চীনা কমিউনিস্ট পার্টির আমন্ত্রণে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন সফর করেন । সফরকালে তিনি চীনের রাষ্ট্রীয় ও দলীয় উর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দের সাথে দেখা করেন। চীনের উপ-রাষ্ট্রপতি ও ভবিষ্যত একচ্ছত্র নেতা শি জিনপিঙ্গের সাথে বৈঠকে তিনি বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও পদ্মা সেতু নির্মাণে বিনিয়োগের ব্যাপারে আলোচনা করেন । বৃহত্তর অঞ্চলের ভূরাজনৈতিক বিষয়াবলীও তাদের আলোচনায় উঠে আসে। জিনপিং ছাড়াও খালেদা জিয়া কমিউনিস্ট পার্টির আন্তর্জাতিক বিষয়ক প্রধান ওয়াং জিয়ারুইয়ের সাথে দেখা করেন ।

উল্লেখ্য এ বছরের মাঝামাঝিতে পদ্মা সেতু প্রকল্পের সম্ভাব্য মূল অর্থদাতা বিশ্ব ব্যাংক বাংলাদেশ সরকারের ঊর্ধ্বতন ব্যাক্তিবর্গের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনলে বিশ্ব ব্যাংককে অনুসরণ করে একাধিক দাতা সংস্থা ঋণ দান থেকে সরে দাঁড়ায় ও প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যায় । বেগম জিয়ার চীন সফর সম্পন্ন হওয়ার একদিন পর তার রাজনৈতিক দল বিএনপি ঘোষণা দেয় যে চীনা নেতৃবৃন্দ দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রে চীন সরকারের বিনিয়োগের বিষয়ে খালেদা জিয়াকে নিশ্চিত করেছেন । একই মাসে খালেদা জিয়া ভারত সরকারের আমন্ত্রণে ভারত সফরে যান । সফরের শুরুতে তিনি ভারতের কেন্দ্রীয় বিরোধী দলীয় প্রধান ও বিজেপি নেত্রী সুষমা স্বরাজের সাথে বৈঠক করেন । সফরকালে তার প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়, পররাষ্ট্র মন্ত্রী সালমান খুরশিদ, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিবশংকর মেনন ও পররাষ্ট্র সচিব রঞ্জন মাথাইয়ের সাথে সাক্ষাত হয়েছে ।

খালেদা জিয়ার ভারত সফরের আলোচ্য বিষয়ের মধ্যে ছিল দ্বিদেশীয় সম্পর্ক, সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশি নাগরিক হত্যা, তিস্তা পানি চুক্তি এবং বৃহত্তর অঞ্চলের ভূরাজনীতি ও নিরাপত্তা । বাংলাদেশের প্রথম স্বাধীনতার যোদ্ধা বেগম খালেদা জিয়া ২৪ মে ২০১১ তারিখে, নিউ জার্সি স্টেট সিনেটে একটি “ডেমোক্রেসি ফাইটার” হিসেবে বেগম খালেদা জিয়ার সম্মানিত হয়। এই প্রথম দক্ষিণ এশিয়ার সকল নেতা- নেত্রীর মধ্য থেকে বাংলাদেশের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সিনেট কতৃক সম্মানিত পদবী দেওয়া হয়। বাংলাদেশের জন্য এটি একটি গর্বের বিষয়। বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের তিনবার নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী, তিনি বাংলাদেশের প্রথম ও মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় মহিলা প্রধানমন্ত্রী, বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দলের প্রধান।

বর্তমানে বেগম খালেদা জিয়া ঠিক ১৯৮৬ সালের মত ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির পাতানো নির্বাচন বয়কট করে ১৯ দলীয় ঐক্য জোটের মাধ্যমে বাংলাদেশের গণতন্ত্র রক্ষায় নির্দলীয় তত্ত্ববধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার দাবীতে আন্দোলন করে যাচ্ছেন। এই বিরামহীন, আপোষহীন নেত্রীকে আমি বাংলাদেশের কোটি কোটি জনতার পক্ষ থেকে দেশ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে “Mother OF Democracy” ঘোষণা দিলাম।

রাকেশ রহমান : লেখক ও রাজনীতিবিদ

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ২০:১৮ | বুধবার, ১৪ মে ২০১৪

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com