শুক্রবার ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

ঋণখেলাপির তালিকায় শুভংকরের ফাঁকি

  |   শুক্রবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ | প্রিন্ট

ঋণখেলাপির তালিকায় শুভংকরের ফাঁকি

ডেস্ক রিপোর্ট: সমাজের সব ক্ষেত্রে এখন রাঘববোয়ালরা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। কোনোভাবেই কেউ তাদের টিকিটি পর্যন্ত স্পর্শ করতে পারছে না। বুধবার সংসদে উত্থাপন করা ঋণখেলাপিদের তালিকায়ও এর প্রমাণ মিলেছে। যারা সমাজে বড় বড় ঋণ খেলাপি ও ব্যাংক জালিয়াত হিসেবে পরিচিত তাদের নাম তালিকায় নেই। রাজনৈতিক ক্ষমতার বদৌলতে আইনের ফাঁক গলিয়ে তারা পার পেয়ে গেছেন। এমনটি মনে করেন ব্যাংক সেক্টরের বিশ্লেষকদের অনেকে। তথ্যানুসন্ধানেও দেখা গেছে, খেলাপি হওয়ার যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও যোগসাজশের মাধ্যমে ব্যাংক কৌশলে প্রভাবশালীদের খেলাপির বাইরে রেখেছে। সঙ্গত কারণে জাতীয় সংসদে প্রকাশিত ১০০ শীর্ষ ঋণখেলাপির তালিকা এখন বিতর্কিত। এভাবে বড় জালিয়াতদের আড়াল করার ফলে ঋণখেলাপিদের তালিকা প্রকাশ করার মতো সরকারের ভালো উদ্যোগটিও প্রশ্নের মুখে পড়েছে।

বুধবার সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে শীর্ষ ১০০ ঋণখেলাপি প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। কিন্তু তালিকায় কোন প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ কত টাকা, তা প্রকাশ করা হয়নি। এর আগে খেলাপি ঋণের পরিমাণসহ তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল। ওই তালিকায়ও যারা বড় বড় খেলাপি তাদের নাম আসেনি। যে কারণে তখনও এ নিয়ে বেশ বিতর্ক হয়।

এদিকে এবারও যেসব ঋণখেলাপি প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে ব্যাংকিং খাতের চিহ্নিত রাঘববোয়ালরা নেই। তাদেরকে বাদ রেখেই ওই তালিকা করা হয়েছে। মূলত রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে, আইনের ফাঁক গলিয়ে, আদালতের স্থগিতাদেশ নিয়ে বা ব্যাংক কর্মকর্তাদের যোগসাজশের কারণে তাদের নাম বাদ দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, ব্যাংকিং খাতে খেলাপিসহ সব ধরনের অপকর্মের দায় অর্থমন্ত্রীকে নিতে হবে। বিশেষ করে সরকারি ব্যাংকের অনিয়মের দায় তিনি কিছুইতে এড়াতে পারেন না। এ ছাড়া জাতীয় সংসদ সদস্যরা ঋণখেলাপি হওয়া খুবই উদ্বেগজনক। এতে বোঝা যাচ্ছে, ঋণের নামে ব্যাংকে লুটপাট হয়েছে। তিনি আরও বলেন, যারা সংসদে আইন প্রণয়ন করেন, তারাই যদি আইন লঙ্ঘন করেন তাহলে কার জন্য এ আইন? কে মানবে এসব আইন।

তিনি আরও বলেন, কোনো গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান খেলাপি হলে পুরো গ্রুপ খেলাপি হিসেবে বিবেচিত হওয়ার কথা। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক এ ক্ষেত্রে নীরব। নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে তাদের এটি খতিয়ে দেখতে হবে। তার মতে, একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করে এসব অসঙ্গতি খতিয়ে দেখা উচিত। কিভাবে বড় বড় খেলাপিরা বা জালিয়াতরা খেলাপির তালিকার বাইরে থেকে যাচ্ছে সেটিও দেখা উচিত।

এদিকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যমুনা টিভিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ইব্রাহিম খালেদ বলেন, ‘খেলাপি ঋণের সময় অর্থমন্ত্রী কী করেছেন। তিনি তো কিছু করতে পারেননি। তার মানে খেলাপিরা তার চেয়ে শক্তিশালী। এ ছাড়া সরকারি ব্যাংকের মালিক তো সরকার। তাই এর দায় কোনোভাবে সরকার তথা অর্থমন্ত্রী এড়াতে পারবেন না।’ অপর দিকে বেসরকারি ব্যাংকের মালিকদের একটি অংশ শিক্ষিত এবং আগে থেকে সম্পদশালী। আরেকটি অংশের স্বাধীনতার পর সেভাবে অর্থসম্পদ ছিল না। তারা চুরি বাটপারি করে ব্যাংকের মালিক হয়েছেন। তিনি বলেন, লক্ষ্য করে দেখুন, ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে কারা থাকেন। একেবারে মালিকপক্ষের লোক। তাহলে কী হবে। মালিকরা যেভাবে চাইবেন সেভাবে হবে। সরকারি ব্যাংকের ক্ষেত্রেও তাই। সেজন্য বলতে পারি, সরকারের শক্তিশালী অংশের হস্তক্ষেপ ছাড়া এভাবে খেলাপি ঋণ বাড়েনি। ফলে রাজনৈতিক কমিটমেন্ট ছাড়া এ অবস্থার উন্নতিও হবে না। ইব্রাহিম খালেদ আরও বলেন, মালিকদের কথা ব্যাংকারদের শুনতে হয়। না শুনলে চাকরি চলে যায়। তাই চাকরি হারানোর ভয়ে তারা মালিকদের ছাফাই গায়। অবশ্য মালিকরা এক কোটি খেলে, ব্যাংক কর্মকর্তারা সেখানে দুই লাখ ভাগ পায়। তিনি বলেন, দুঃখের বিষয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়িত্ব হল জনগণের আমানতের টাকা হেফাজত করা। অথচ তা না করে তারা নিজেদের রক্ষায় ব্যস্ত। কেননা, আইনের অনেক কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষমতা দেয়া আছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত তারা অভিযুক্ত ব্যাংক মালিকদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, যেসব বড় খেলাপির নাম প্রকাশ করা হয়নি, তা যত না আইনি জটিলতা, তার থেকে রাজনৈতিক সমস্যা বেশি। তবুও যাদের নাম প্রকাশ করা হয়েছে, এটা প্রাথমিক উদ্যোগ। এখন যারা খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত তাদের যেন আর নতুন ঋণ দেয়া না হয়। এ ছাড়া এসব খেলাপিকে সব ধরনের নীতিসহায়তা থেকে বঞ্চিত করতে হবে। তা না হলে শুধু নাম প্রকাশ করে কোনো কাজ হবে না।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, শুধু নাম প্রকাশই যথেষ্ট নয়; তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। ব্যাংকিং খাতে খেলাপিসহ বিভিন্ন কু-কর্মে যারা জড়িত, তাদের সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি, বরং কখনও কখনও উল্টো সুরক্ষা দিয়েছে। অথচ তাদের অপকর্মের বোঝা টানছে সাধারণ মানুষ। অর্থাৎ সরকারি ব্যাংকগুলোকে করের টাকা থেকে বারবার পুঁজিসহায়তা করা হয়েছে। এর দায় সরকার কিছুতে এড়াতে পারে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, জুন পর্যন্ত দেশে ঋণখেলাপির সংখ্যা দুই লাখ ৩০ হাজার ৬৫৮ জন। তাদের কাছে অনাদায়ী অর্থের পরিমাণ এক লাখ ৩১ হাজার ৬৬৬ কোটি টাকা।

অর্থমন্ত্রী জানান, খেলাপি ঋণের সঙ্গে জড়িত ব্যাংকের সংখ্যা ৮৮টি। এর মধ্যে সোনালি ব্যাংকে ১৮ হাজার ৬৬২ কোটি, জনতা ব্যাংকে ১৪ হাজার ৮৪০ কোটি, অগ্রণী ব্যাংকে ৯ হাজার ২৮৪ কোটি, রূপালী ব্যাংকে ৪ হাজার ৯০১ কোটি, বেসিক ব্যাংকে ৮ হাজার ৫৭৬ কোটি, কৃষি ব্যাংকে ২ হাজার ১৭৮ কোটি, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকে ২ হাজার ৩৩২ কোটি, পূবালী ব্যাংকে ২ হাজার ১১৬ কোটি, ন্যাশনাল ব্যাংকে ৫ হাজার ৭৬ কোটি, ইসলামী ব্যাংকে ৩ হাজার ৫২০ কোটি আর প্রাইম ব্যাংকে ৩ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকা খেলাপি রয়েছে।

সূত্র জানায়, এর বাইরে আরও অনেক খেলাপি ঋণ রয়েছে। ব্যাংক কর্মকর্তারা অনেক ঋণখেলাপি হলেও সেগুলোকে তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে খেলাপি হিসেবে দেখান না। নিজেদের দুর্নাম এড়াতে তারা খেলাপি ঋণের পরিমাণ কম দেখান। এতে বিশেষ করে প্রভাবশালী ঋণ গ্রহীতারা খেলাপি তালিকার বাইরে থেকে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে এরকম অনেক প্রতিষ্ঠানের ঋণকে খেলাপি করা হয়। প্রতি বছর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদন্তে কমপক্ষে ১০ হাজার কোটি টাকার ঋণ খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত করার নির্দেশ দেয়া হয়। এর বাইরে আরও অনেক ঋণ থেকে যায়, যেগুলো খেলাপি হওয়ার যোগ্য, অথচ কেন্দ্রীয় ব্যাংক শনাক্ত করতে পারছে না। কিন্তু একটি পর্যায়ে এগুলো খেলাপি হয়ে যাচ্ছে। ক্রিসেন্ট গ্রুপের প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার ঋণ জনতা ব্যাংক প্রথমে খেলাপি করেনি। পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশে খেলাপি করা হয়। কিন্তু ওই তালিকায় তাদের সব প্রতিষ্ঠানের নাম আসেনি। এসেছে মাত্র দুটি প্রতিষ্ঠানের নাম। এগুলো হচ্ছে ক্রিসেন্ট লেদার প্রোডাক্ট ও রিমেক্স ফুটওয়্যার। অ্যানন টেক্স গ্রুপের ৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ খেলাপি করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু জনতা ব্যাংক এখনও তা খেলাপি করেনি।

হলমার্ক গ্রুপ এখন সবচেয়ে বড় খেলাপি। তাদের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৪ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু গ্রুপের একটিমাত্র প্রতিষ্ঠান খেলাপির তালিকায় এসেছে। এটি হচ্ছে হলমার্ক ফ্যাশনস। বাকিগুলো আসেনি। বেসিক ব্যাংক থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা বেরিয়ে গেছে। এগুলো গেছে ছোট ছোট অংকে।

বিসমিল্লাহ গ্রুপ ৫টি ব্যাংক থেকে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে বিদেশে পাচার করেছে। অথচ তাদের দুটি প্রতিষ্ঠান শীর্ষ তালিকায় এসেছে। এগুলো হচ্ছে সাহারিশ কম্পোজিট টাওয়েলস ও বিসমিল্লাহ টাওয়েলস। একটি সরকারি ব্যাংকের রমনা শাখা থেকে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। ছোট ছোট প্রতিষ্ঠানের নামে এসব অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে একসঙ্গে আসেনি। এর মধ্যে ফেয়ার ফ্যাশনের নামে-বেনামে রয়েছে ৭শ’ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ। সোহেল গ্রুপ একটি বেসরকারি ব্যাংক ও সরকারি জনতা ব্যাংক থেকে প্রায় ২০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। তাদের নাম তালিকায় আসেনি। অলটেক্স গ্রুপের একটি ব্যাংকেই খেলাপি ঋণ রয়েছে ৩৫০ কোটি টাকা। তাদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে এসব ঋণ আছে। তালিকায় এসেছে অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের নাম। চট্টগ্রামের ইমাম গ্রুপের খেলাপি ঋণ প্রায় ৯০০ কোটি টাকা। তাদের নাম তালিকায় আসেনি। এ রকম অনেক বড় বড় গ্রুপের নাম তালিকায় আসেনি।

এছাড়া অনেক গ্রুপ আদালতের স্থগিতাদেশ নিয়ে খেলাপি ঋণকে নিয়মিত ঋণ হিসেবে দেখাতে ব্যাংককে বাধ্য করে। ব্যাংকগুলো ঋণখেলাপিদের তালিকা করছে প্রতিষ্ঠানভিত্তিক। গ্রুপভিত্তিক তালিকা করছে না। ফলে হাজার হাজার কোটি টাকার খেলাপির নাম আসছে না। আসছে প্রতিষ্ঠানভিত্তিক। এসব কারণে বড় খেলাপিরা তালিকার বাইরে থেকে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম বলেন, বড় খেলাপিদের নাম শীর্ষ খেলাপির তালিকায় আসছে না। কারণ তাদের অনেকে ব্যাংকের মালিক। ফলে ব্যাংকাররা তাদের নাম খেলাপির তালিকায় তুলছেন না। তারা নানা কৌশলে তা লুকিয়ে রেখেছেন।

সুশীল সমাজ, ব্যাংকার, অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষকদের মতে, শুধু চুনোপুঁটিদের নাম প্রকাশ করেই অর্থমন্ত্রী ব্যাংকিং খাতের লুটপাটকারীদের দায় এড়াতে পারেন না। এছাড়া তিনি কোনো শাস্তির ঘোষণাও দেননি। সুতরাং ব্যাংকিং খাতের খেলাপিসহ সব অপকর্মের দায় তিনি এড়াতে পারেন না।

সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ব্যাংক থেকে টাকা মেরে ধনী হওয়ার প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশে ধনীর সংখ্যা বাড়ার খবর প্রকাশ পেয়েছে। বিশ্বের মধ্যে ধনী হওয়ার সংখ্যায় শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ। মূলত বিচারহীনতার কারণে ব্যাংকিং খাতে এক ধরনের অরাজকতা বিরাজ করছে। আমরা এ খাতে লুটপাটের অবসান চাই। তিনি আরও বলেন, বাস্তব কারণে কেউ খেলাপি হলে সেটা নিয়ে কিছু বলার নেই। কিন্তু ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের ধরতে হবে। তা না হলে এ অরাজকতা আরও বেড়ে যাবে।

অর্থমন্ত্রীর দেয়া তালিকা অনুযায়ী শীর্ষ ১০০ ঋণখেলাপির মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রামের ইলিয়াস ব্রাদার্স। তাদের মোট ঋণের পরিমাণ প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা। কিন্তু পুরো ঋণ খেলাপি হিসেবে দেখানো হয়নি। চট্টগ্রামের নূরজাহান গ্রুপের খেলাপি ঋণের পরিমাণ প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা। কিন্তু তাদের একটি প্রতিষ্ঠানের নাম খেলাপির তালিকায় এসেছে। এর খেলাপি ঋণ ৩০০ কোটি টাকা। আদালতের স্থগিতাদেশ নিয়ে তারা কিছু ঋণ নিয়মিত রাখার সুযোগ পেয়েছে। সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত হারুনুর রশিদ খান মুন্নুর মালিকানাধীন মুন্নু ফেব্রিক্সের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ২৩০ কোটি টাকা। তাদের গ্রুপের আরও প্রতিষ্ঠান রয়েছে ঋণ খেলাপি, যেগুলোর নাম আসেনি। সাবেক মন্ত্রী মোর্শেদ খানের মালিকানাধীন প্যাসিফিক বাংলাদেশ টেলিকমের কাছে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। বর্তমান সংসদে থাকা আওয়ামী লীগের এমপি আসলামুল হকের নর্থ পাওয়ার ইউটিলিটি ও রাজশাহীর এমডি এনামুল হকের নর্দান পাওয়ার সল্যুশনের খেলাপির তালিকায় স্থান পেয়েছে। কিন্তু আসলামুল হকের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে শুধু ন্যাশনাল ব্যাংকেই ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকার ঋণ রয়েছে। যার বড় অংশই খেলাপি। নারায়ণগঞ্জের ফজলুর রহমানের মালিকানাধীন রহমান গ্রুপের একটি মাত্র প্রতিষ্ঠান রহমান স্পিনিং মিলসের নাম এসেছে খেলাপির তালিকায়। তাদের বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোও খেলাপি। কিন্তু তাদের ঋণের পরিমাণ কম তালিকায় আসেনি।

মেজর (অব.) আবদুল মান্নান পরিচালক থাকার সময়ে বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি) থেকে ৫১২ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদন্তে প্রমাণ মিলেছে। ফলে প্রতিষ্ঠানটি ব্যাংক থেকে নেয়া ঋণ শোধ করতে পারছে না। এ কারণে প্রতিষ্ঠানটি এখন খেলাপি। প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা জালিয়াতির দায়ে একটি আলোচিত গ্রুপের গ্যালাক্সি সোয়েটার অ্যান্ড ডায়িং কোম্পানিকে খেলাপির তালিকায় দেখানো হয়েছে। আরও একটি শিল্প গ্রুপের প্রতিষ্ঠান গ্লোব মেটাল কমপ্লেক্সকে খেলাপির তালিকায় রয়েছে। তালিকায় থাকা জাপান-বিডি সেক প্রিন্টিং অ্যান্ড পেপারসের রূপালী ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১০৮ কোটি টাকা। সূত্র: যুগান্তর

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১১:৫৮ | শুক্রবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com