শুক্রবার ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আমরা কি স্বাধীন দেশের নাগরিক?

  |   শুক্রবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০১৩ | প্রিন্ট

মুহাম্মদ রুহুল আমীন নগরী

Rohul Amin Nagori

বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। প্রতি বছরই ১৬ ডিসেম্বর মহাসমারুহে আমরা এ দিবসটি পালন করে থাকি। বিজয়ের ৪২ বছর পরেও আজ প্রশ্ন জাগে আমরা সত্যিই কী বিজয়ী? বিজয়ের স্বাদ, দেশ ‘স্বাধীন’র সুফল পেয়েছি আমরা? শিশুকাল পেরিয়ে বাংলাদেশ বর্তমানে যৌবনকাল অতিবাহিত করছে। যৌবনে যে লোকটি নিজের জীবন যাপনের প্রয়োজনীয় পাথেয় সংগ্রহকরতে ব্যর্থ বা যে ব্যক্তি এই বয়সটি হেলায় কাটিয়ে দেয় , সে লোকের ভবিষ্যত জীবন কষ্টের হয়। বিদ্যা-বুদ্ধি, ধন-সম্পদ, স্ত্রী-সন্তানাদি আর যাই করতে হয় এসব যৌবনেই অর্জন করতে হয়। চল্লিশের কোটা অতিবাহিত হওয়ার পর পড়ন্ত বিকেল শুরু হয়। আমি আমাদের প্রিয় মাতৃভুমি বাংলাদেশ‘র কথাই বলছি। যার জন্ম ১৯৭১ সালে। শৈশব,কৈশর পেরিয়ে বর্তমানে যৌবন কাল অতিবাহিত করলেও এখনো পরিপুর্ণজীবন গঠনে সক্ষম হতে পারেনি বাংলাদেশ । দৈহিক,মানষিক, অবকাঠামোগত কোন উন্নয়নের দিকেই আমরা সফলতা অর্জন করতে পারিনি। গণতন্ত্র‘র দোহাই দিয়ে এদেশে পরিবারতন্ত্র আর সৈরাচারিতার অগ্নিস্ফুলিঙ্গ জ্বলছে।

বিগত ৪২ টি ডিসেম্বর যে ভাবেই কাটিয়ে থাকি এবারের ডিসেম্বর অর্থাৎ বিজয় দিবস আমরা ভিন্ন আমেজে অতিবাহিত করছি। গণতান্ত্রীক শাসন ব্যবস্থা, নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় আসীন থাকার পরও কিন্তু জনগনের জানমালের নিরাপত্তা নেই। প্রায় প্রতিদিনই রাজনৈতিক সহিংশতায়,পুলিশের বুলেটের আঘাতে কেউ না কেউ প্রাণ হারাচ্ছেন। সমগ্রদেশ বিক্ষোভ আর বিদ্রোহে জ্বলছে। বিজয়ের আনন্দ উল্লাশ বেদনায় পরিনত হয়েছে। আমাদের প্রিয় মাতৃভুমি বর্তমানে এক কঠিন মুহুর্ত অতিক্রম করছে। দেশে এখন কি ঘটছে, অদূর ভবিষ্যতে পরিস্থিতি কিরুপ ধারণ করবে? এ প্রশ্ন সবার মুখে মুখে। কিন্তু উত্তর কারুরই জানা নেই। তবে ক্ষমতায় আকড়ে থাকা ও ক্ষমতায় যাওয়া এই অশুভ শক্তির প্রতিযোগীতায় অচিরেই যে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠবে তা সকলেই সমভাবেই উপলদ্ধি করতে পারছেন। সাম্প্রতিক কালে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল গুলোর মধ্যে আমরা যে যুদ্ধংদেহী মনোভাব দেখতে পাচ্ছি , তা দেখে অন্তত তাদের মধ্যে ‘দেশপ্রেম’ যে কতটুকু তা সহজেই অনুমেয়। ক্ষমতার স্বাদউপভোগের জন্য জনতার লাশ নিয়ে নোংরা রাজনীতিই যেন আমাদের নিয়তি। লাখো শহীদের রক্তে অর্জিত ৫৬ হাজার বর্গমাইলের আমাদের প্রিয় ‘বাংলাদেশ’ এর স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব আজ প্রচন্ড হুমকির সম্মুখিন। আমাদের নেতা নেত্রীদের হিংসাত্মক ও রক্তাক্তমনোভাব সচেতন মহলকে শংকিত করে তোলেছে। এক জাতি এক দেশ ও প্রায় একই ধর্ম বিশ্বাসের অনুসারী হওয়া সত্ত্বেও বাহ্যত সমগ্র বাংলাদেশের জনগণ আজ দু‘ভাগে বিভক্ত! ইহুদি-খৃষ্টান চক্রের শ্যান দৃষ্টি এখন মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট বাংলাদেশের সীমানাকেই ঘিরে!

বর্তমান রাজনৈতিক সংকটে বিশ্বের অশুভ শক্তির আনাগুনা-অপতৎপরতা ডেকে আনতে পারে পূর্ব তিমুরের মতো পরাধীনতার অন্ধকার। ভারত পরিবেষ্টিত আয়তনে ক্ষুদ্র আমাদের মাতৃভূমি সত্যিই আজ এক ক্লান্তিকাল অতিবাহিত করছে। ১৯৭১ সালে দীর্ঘ রক্তপাতের মাধ্যমে পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্র ‘বাংলাদেশ’ এর জন্ম। স্বাধীন বাংলার স্বপ্নদ্রষ্টা মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, স্বাধীন বাংলার স্থপতি বঙ্গবন্ধু মরহুম শেখ মুজিবুর রহমান, কালোর ঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল আতাউল গনী ওসমানীসহ অসংখ্য বীর বাঙ্গালীর দীর্ঘ সাধনা ও আত্মদানের স্বীকৃতি আজকের ‘স্বাধীন বাংলাদেশ’। নব্বই ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত এই দেশে ভিন্ন ধর্মের লোকের সহাবস্থান রয়েছে। ৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে হিন্দু-মুসলমানের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফলেই পাকহানাদার বাহিনী পিছুহটতে বাধ্যহয়েছিল। হানাদার বাহিনীর আত্যাচার-নির্যাতন থেকে রক্ষাপেতে তখন অনেক সংখ্যা লঘু (হিন্দুপরিবার) বিশিষ্ট আলেম-উলামাদের বাড়ীতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সিলেটের বিশিষ্ট বুযুর্গ মাওলানা বশির আহমদ শায়খে বাঘা (র.), ফখরে বাঙ্গাল মাওলানা তাজুল ইসলাম, মওলানা ভাসানী,মাওলানা তর্কবাগিশ,মাওলানা অলিউর রহমান, মাওলানা মুহিউদ্দীন খান, মাওলানা উবায়দুল্লাহ বিন সাঈদ জালালাবাদী ভ্রাতৃদ্বয় প্রমুখ আলেম উলামাগন নিরীহ লোকজনের জানমালের নিরাপত্তাবিধানে বিশেষ ভুমিকা এবং তাদের অনেকেই সরাসরি হানাদার বাহিনীর বিরোদ্ধে সংগ্রমকরেন। আমাদের জাতীয় পাঠ্যপুস্তকে একাত্তরের এসব ইতিহাস চেপে রাখা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের ৪২ বছর অতিবাহিত হলেও এখনো সঠিক ইতিহাস খোজেঁ পাওয়া যাচ্ছেনা। মহল বিশেষের এমন ইতিহাস বিকৃতি ও দূরভিসন্ধির ফলে আজ জাতিকে বিভক্তির দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

আমরা যারা মুসলমান তাদের কাছে সবচেয়ে প্রিয়-মূল্যবান সম্পদ হলো ঈমান। আর এই ঈমান-ইসলাম হেফাজতের মধ্যেই নিহিত রয়েছে সফলতা-পূর্ণতা। হুব্বুল ওয়াতানে মিনাল ঈমান ‘দেশ প্রেম ঈমানের অংশ-এই তাগিদ টুকুই কিন্তু একজন সচেতন ঈমানদারকে নিজের মাতৃভূমি, মাটি ও মানুষের প্রতি মহব্বত তৈরিকরে। আমাদেরকে মনে রাখতে হবে, যে ঘরে মূল্যবান সম্পদ থাকে ,সে সম্পদ হরণের জন্য চোর সিধ কাটে। ডাকাত ও লুন্ঠনকারীদের লোলুপ দৃষ্টি সে দিকে ঝুকে থাকে । লোভীদের জিভ থেকে লালা টপটপকরে পড়তে থাকে। তাইতো বিশ্বের পরাশক্তি, প্রতিবেশী জলদস্যুএবং ক্রুসেডার ইহুদী-খৃষ্টানরা তাদের এদেশীয় দোসরদেরকে সরলপ্রাণ মুসলমানদের ঈমান একই সাথে দেশীয় প্রাকৃতিক সম্পদ হরণের জন্য চক্রান্তে লিপ্ত!

বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষ পযার্য়ে হলেও মতলববাজগোষ্ঠির কারণেই একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও সকলের নিকট গ্রহণ যোগ্য নির্বাচন হতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির পায়তারা চলছে। আমাদের জ্ঞানের স্বল্পতা ও অদুরদর্শীতার কারণেই আত্মকলহে লিপ্ত আছি। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ-বিপক্ষ‘র শক্তি, আস্তিক-নাস্তিকের দল ইত্যাদি জিগির তুলায় দৃশ্যত: জাতি এখন দুটি ভাগে বিভক্ত। শুরু থেকে এযাবত যারাই ক্ষমতার মসনদে অধিষ্ঠিত ছিলেন, তারা দেশ ও জাতির কল্যানের চেয়ে অকল্যানেই করেছেন বেশী। গণতন্ত্রের নামে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের ব্যাক্তি স্বার্থসিদ্ধির জন্যই তৎপর। যে দেশে প্রকাশ্যে মিছিল মিটিং করতে গিয়ে পুলিশের বন্দুকের নলে প্রাণ দিতে হয়, যে দেশে গঠন মুলক সমালোচনা সহ্যকরা হয়না, যে দেশে ভিন্নমতের মিডিয়ার অফিসে রাষ্ট্রপক্ষের তালা ঝুলে, সে দেশের শাসক শ্রেনীর মুখে গণতন্ত্রের শ্লোগান সত্যিই বেমানান, লজ্জাকর বিষয়। যে দেশে জনগনের অর্থে পালিত রাষ্ট্রিয় বাহিনীর হাতেই জনগণ হয় রক্তে রজ্ঞিত ! যে দেশের রাজধানীকে বলাহয় মসজিদের নগরী আবার সে দেশেরই মসজিদের ইমাম ধর্মের কথা বলতে গিয়ে হতে হয় লাঞ্চিত! যে দেশে একজন কথিত অপরাধীর জন্যে শতশত নাগরিকের রক্তবন্যা দেখেও যারা ক্ষমাতার মসনদে বসে মিটমিটিয়ে হাসে, আল্লাহ-রাসুলের বিরোদ্ধে বিষোদগারকারীদের পক্ষে ওকালতি করে যারা তারা অন্তত এই দেশের মাটি ও মানুষের বন্ধু হতেপারেনা। টিপাইমুখে বাধঁ দিয়ে যারা আমাদেরকে শায়েস্তা করতে চায়, ওরা কারা? যারা আমাদের সিমানা মুছে দিতে চায়, কিশোরী ফেলানীর লাশ কাটাতারে ঝুলন্ত দেখার পরেও যারা ভারতকে বন্ধু বলতে চায়, তাদের নিকট ৫৬ হাজার বর্গমাইলের এই ভুখন্ড কখনো নিরাপদ হতে পারেনা। আমাদের অনুভূতি ও দেশপ্রেম ঈমানী চেতনায় শানিত করতে হবে।

বাংলাদেশের সহিংস এবং অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে সৃষ্ট সংঘাত-সংঘর্ষের পরিবেশ এবং এর মধ্যে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ সামগ্রিক ও সার্বিক জটিল বিষয়টি এখন আর কোনোক্রমেই অভ্যন্তরীণ নেই। দুর্ভাগ্যজনক হলেও এটা এখন পরিপূর্ণভাবে আন্তর্জাতিক একটি বিষয়ে পরিণত হয়েছে। এই প্রথম বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সঙ্কট এবং এ কারণে সৃষ্ট নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়টি আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে পড়লো। ‘স্বাধীনতা‘র পর থেকে মাত্র কিছুদিন আগ পর্যন্ত বাংলাদেশের রাজনীতির সঙ্কটটিকে দেশের নিজস্ব এবং অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে গণ্য হলেও এখন পরিস্থিতি পুরোটাই পাল্টে গেছে – বরং বলা যায় পাল্টে দেয়া হয়েছে।’
‘রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়েও নিশ্চিতে থাকা সম্ভব হচ্ছে না। কখনো কি ঘটে যায় সে চিন্তায় বাসার কাজেও মন বসে না। কখন সন্তানরা বিদ্যালয় থেকে ফিরে আসবে।’ এমন ভাবনা সকলের। যারা রাজনীতি করেন, আইন-শৃংখলা রক্ষাকারীবহিনী তাদের নিরাপত্তা দিচ্ছে দিন-রাত। আমরা যারা সাধারণ জনগণ, তাদের কি হবে। দেশটা কি আমাদের নয়? রাজনৈতিক দলগুলো আন্দোলন করছে শুধু ক্ষমতায় যাওয়া বা সেখানে থাকার জন্য। সেখানে জনগণ কোথায়? তারা কি শুধু ক্ষমতায় যাওয়ার সিড়ি হিসেবেই ব্যবহৃত হয়ে যাবে। রাজনীতিকদের আজ এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে।

রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে অন্তবর্তীকালীন সরকার ও আগামী নির্বাচন, ক্ষমতায় যাবার ইস্যুর সমাধান হলে রক্তপাত হবে বৈকি। উভয় রাজনৈতিক দল মানুষের জীবন নিয়ে খেলছে। কারণ এতে তাদের কোনো ক্ষতি হবে না। সাধারণ জনগণ ক্ষতিগ্রস্তহচ্ছে। সরকার পুরো দুই বছর দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে লুকোচুরি করেছে। অথচ তারা বলছে, রাজনীতি করছে তারা জনগণের জন্য। এর চেয়ে হাস্যকর আর কি হতে পারে। পঞ্চদশ সংশোধনীর ফলে আগামী নির্বাচন বর্তমান সরকারের অধীনেই অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু বিএনপিসহ অন্যান্য বিরোধী দল দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়ে বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া সিলেটে ১৮ দলের সমাবেশে এবং সর্বশেষ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় ভোট কেন্দ্রভিত্তিক সংগ্রাম কমিটি গঠনের কথা বলেছেন। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বর্তমান সংবিধান অনুযায়ীই অর্থাৎ বর্তমান সরকারের অধীনেই আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ থেকে এক চুলও নড়া হবে না। পাশাপাশি বিরোধী দলের প্রতিহতের ঘোষণায় আওয়ামী লীগ মাঠপর্যায়ে প্রতিরোধ কমিটি গঠনের ঘোষণা দিয়েছে। এ অবস্থায় দেশবাসীর মধ্যে এক অজানা আতঙ্ক-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। চলমান সংকট আগামী নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে। এ সংকট সমাধানে দেশি-বিদেশি উদ্যোগ ভেস্তে গেছে। তবে, এখনো সময় ফুরিয়ে যায়নি। বড় দুই রাজনৈতিক জোট বিশেষ করে দুই নেত্রী চাইলে এখনই সংকট উত্তরণ সম্ভব। গণতন্ত্র ব্যাহত হোক, দেশের মানুষ অস্বস্তিতে ভুগবে অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকবে নিশ্চয়ই রাজনীতিকরা তা চাইবেন না।
সম্প্রতি বাসে দেয়া আগুনে দগ্ধদের হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। আর তখন প্রধানমন্ত্রীর চোখে চোখ রেখে অগ্নিদগ্ধ গৃহবধূ গীতা বললেন, ”আপনারা আমাদের নিয়ে ছিনিমিনি খেলছেন। আমরা খালেদারেও চিনি না হাসিনার কাছেও যাই না। আমরা আমাদেরটা খাই। তাহলে আমাদেরকে মারে কেনো? আপনারা এক হন, আমাদের বাঁচান” শেখ হাসিনা এবং খালেদা জিয়া, দু’জনেই নারী, আর তাদের রাজনৈতিক ইগো’র গালে কষে থাপ্পড়টা বসালেন সাহসী নারী গীতা সরকার। একজন সাধারণ গৃহবধূ দুই মিনিটে দুই নেত্রীকে রাষ্ট্র বিজ্ঞান আর গণতন্ত্রের যে সবক দিলেন, দুই মহিলা তো সারা জীবন রাজনীতি করেও সেটা শিখতে পারেননি! ষোল কোটি মানুষের পক্ষ থেকে গীতা সরকারকে স্যালুট জানাই।

ঢাকা মুলত: সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন। বিভাগীয় শহর, জেলা শহর এবং প্রত্যন্ত গ্রাম্য হাটবাজারে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। ঠিক যেনো জাতিগত দাঙ্গার মতো, যেমনটি হয়েছিলো ভারত ভাগের পর। এ দেশের টিভি গুলো নৈতিক কারনে অনেক কিছু প্রকাশ করছেনা বা পারছেনা। কিন্তু বিদেশী টিভিতে যা দেখাচ্ছে তাতে পরিস্থিতি সিরিয়া, কাবুল বা কান্দাহারের চেয়েও ভয়াবহ ভাবে উপস্থাপিত হচ্ছে আর এসব দেখে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশীরা ঐ দেশীয় লোকদের নিকট শরমে মরমে মরে যাচ্ছে আর দেশে বসবাসরত তাদের আতœীয় স্বজনের জন্য কান্নাকাটি করছে। এখন প্রতিদিন সারি সারি লাশ দেখতে হচ্ছে- আর সে লাশ হচ্ছে ক্ষমতার লোভের বলি। সহ্য করতে পারছি না- প্রতিদিন এই বীভৎস দৃশ্য। কোথায় চলে গেছে আমাদের জাতির সভ্যতার মানদ-। আমরা মানুষ হয়ে- জ্যান্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারছি- একজন গর্ভবতী মা আগুনে পুড়ে কাতরাচ্ছে। এতসব তান্ডবের মধ্যে নির্বাচনের চেষ্টা হচ্ছে। ঢোল, ডগর বাঁজিয়ে একদল নাছছে আর একদল ভি চিহ্ন দেখিয়ে রাজপথ প্রকম্পিত করছে- ঠিক যেনো নজরুলের কবিতার মতো- আমি জাহান্নামের আগুনে বসিয়া হাসি পুস্পের হাসি। তারা সবাই আপনার সামনে বীরত্ব দেখিয়ে হম্বিতম্বি করে আর পর্দার আড়ালে এসে ভয়ে জড়সড় হয়ে ভিন্ন কথা বলে। দেশের লাখো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক- অভিভাবক- আর শিক্ষার্থীরা গুমরে গুমরে কাদঁছে। অন্যদিকে রাজনৈতিক দলের অফিসের সামনে কিছু কর্মী নিয়ে কয়েকজন নেতাগোছের মানুষ মুছকি মুছকি হেসে ক্যামেরায় পোজ দিচ্ছে। শহরের যে কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যান এবং শুনুন সবার কথা। বিশ্বাস না হলে তাদের কাগজপত্র পরীক্ষা করুন- দেখবেন সকলেই হয় ইতিমধ্যে দেউলিয়া হয়ে গেছে নয়তো দেউলিয়া হওয়ার পথে। এরপর আপনি তাদের মনের কথা জানার জন্য সম্প্রতি আবিস্কৃত হওয়া যন্ত্রটির সাহায্য নিন এবং ভালো করে শুনুন তারা কি আপনাকে অভিশাপ দিচ্ছে না অন্য কাউকে? আজ দেশবাসী চরম উৎকন্ঠার সম্মুখীণ। আওয়াামী লীগের নষ্ট বাসনায় দেশ চলে গেছে ধ্বংসের মুখে। বর্তমান শাসক গোষ্টির ভয়াবহ দুঃশাসনের ক্ষণে জনগনের নিশ্চুপ ভূমিকা হয়তো আবার ডেকে আনবে সেই পলাশীকেই । দেশকে যারা কুরুক্ষেত্রের দিকে ঠেলে দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কি নিশ্চুপ থাকবো, নাকি দেশের স্বার্থে দেশের জন্য গর্জে উঠবো? #

লেখক: সভাপতি-পুষ্পকলি সাহিত্য সংঘ, সিলেট।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৫:১৩ | শুক্রবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০১৩

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com