বুধবার ৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

যে কারণে পান করবেন চা-কফি

  |   বুধবার, ২৯ জানুয়ারি ২০১৪ | প্রিন্ট

যে কারণে পান করবেন চা-কফি

tea

২৯ জানুয়ারি:  গরম গরম ধোঁয়া ওঠা এক কাপ চা কিংবা কফি দিয়ে দিনের শুরুটাকেই যে অন্যরকম করে ফেলা যায় তা কে না জানে! অনেকেই যেমন দিনের একাধিকবার চা কিংবা কফি খেতে বেশ স্বাচ্ছ্যন্দ বোধ করেন, তেমনি অনেকেই আবার চা-কফি থেকে থাকেন একশ’ হাত দূরে। কেউ কেউ অন্তত এক কাপ চা কিংবা কফি ছাড়া দিন শুরুই করতে পারেন না, আর কেউ কেউ আবার পছন্দের পানীয় হলেও যতটা সম্ভব চা-কফি এড়িয়ে থাকতেই চান। অনেকে তো আবার কাজের ফাঁকে একঘেয়েমি কাটিয়ে উঠতে এক কাপ চা কিংবা কফি খেয়েই রীতিমতো দৌড়াতেও শুরু করেন!

কথায় আছে, নানা মুনির নানা মত। তাই চা-কফির সঙ্গে অন্যান্য পানীয়ের তুলনা নিয়েও আছে বিভিন্ন রকম মতামত। বিশেষ করে চা এবং কফিতে থাকা ক্যাফেইনের বিষয়ে অনেকেই দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভোগেন। কিন্তু কেন আর অন্যের মুখের ঝাল খাওয়া? নিজেই দেখুন না, চা আর কফি আসলে আপনার জন্য কতটা ভালো?

প্রথমেই আসা যাক ক্যাফেইনের প্রসঙ্গে। ক্যাফেইন এমন এক ধরনের উদ্দীপক উপাদান যা আপনার হৃৎপিণ্ড এবং বিপাক ক্রিয়ার গতি বাড়ায়। দৈনিক একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ক্যাফেইন গ্রহণ করলে ক্লান্তি দূর হয়ে সজাগ থাকবে আপনার শরীর, একঘেয়েমি কাটিয়ে উঠে প্রাণশক্তি ফিরে পাবেন আপনি আর কর্মক্ষেত্রে হবেন বেশ চটপটে।

চা এবং কফি ছাড়াও এনার্জি ড্রিংকস প্রায় সব ধরনের পানীয়, কোকো এবং চকলেটেও প্রচুর পরিমাণে ক্যাফেইন থাকে। এমনকি যেসব খাবার বা পানীয়ে ক্যাফেইন নেই বলে দাবি করা হয়, সেগুলোতেও কিছু পরিমাণ ক্যাফেইন থাকে। অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ করলে তা উচ্চ রক্তচাপের কারণ হতে পারে। গর্ভাবস্থাতেও অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ করা উচিত নয়। এছাড়া স্বল্প সময়ের মধ্যে অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ করলে মাথা ঘোরানোসহ বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়। মাত্রাতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণের অভ্যাস পরিণত হতে পারে আসক্তিতেও। তাই শরীর যতোই ক্লান্ত হোক না কেন, ক্যাফেইন গ্রহণ করা উচিত পর্যাপ্ত মাত্রায়।

আর এই পর্যাপ্ত মাত্রার ক্যাফেইন আপনি পাবেন চা এবং কফি থেকেই, তাও সম্পূর্ণ প্রাকৃতিকভাবে। সাধারণ আকৃতির এক কাপ কফি থেকে আপনি পাবেন ৮০ থেকে ১৮৫ মিলিগ্রাম ক্যাফেইন, আর চা থেকে পাবেন ১৫ থেকে ৭০ মিলিগ্রাম ক্যাফেইন। আর স্বাভাবিক অবস্থায় একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষ দৈনিক ক্যাফেইন গ্রহণ করতে পারেন দুইশ’ মিলিগ্রাম পর্যন্ত। অর্থাৎ মানের উপর ভিত্তি দৈনিক এক থেকে দুই কাপ কফি কিংবা তিন/চার কাপ চা চলতেই পারে স্বচ্ছন্দে।

ক্যাফেইনের পর আসা যাক চা ও কফির স্বাস্থ্যকর দিকগুলোতে। সাধারণ দুধ চা এবং রঙ চায়ের পাশাপাশি সবুজ চা, কালো চা, সাদা চা, উলং চা ইত্যাদির স্বাস্থ্যের জন্য অন্য যেকোনো খাবারের চাইতে অনেক বেশি উপকারী যদি আপনি তা নিয়মিত একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় গ্রহণ করেন। বিভিন্ন ধরনের এই চা মারণব্যাধী স্তন ক্যানসার, ফুসফুসের ক্যানসার এবং পাকস্থলীর ক্যানসারসহ আরো অনেক ধরনের ক্যানসারের প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে।

পাশাপাশি চা আরো যে উপকারগুলো করে সেগুলো হলো- শিরা ও ধমনী পরিষ্কার করে রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখে, হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়, মস্তিষ্কে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহ না হওয়ার ফলে নিউরোলজিকাল ক্ষতির যে ঝুঁকি তা হ্রাস করে, অ্যালঝেইমার ও পারকিনসন্স রোগের ঝুঁকি কমায়, অতিরিক্ত ফ্যাট বা মেদ পুড়িয়ে ফেলে, রক্তে কোলেস্টরলের মাত্রা স্বাভাবিক রাখে, জীবনিশক্তি বাড়িয়ে বার্ধক্যকে দূরে রাখে, ওজন বাড়তে দেয় না এবং বাড়তি ওজন কমাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এছাড়া উলং চায়ের একটি বাড়িতি বৈশিষ্ট্য হলো এই চা দাঁতও ভালো রাখে।

অনেকেরই ধারণা, কফি দ্রুত বার্ধক্যের কারণ এবং ফুসফুসের ক্যানসার ও হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। কিন্তু এই সবগুলো ধারণাকেই ভুল প্রমাণ করেছে বিজ্ঞান। ক্ষতির বদলে বরং কফি স্মৃতিশক্তিবর্ধক হিসেবে কাজ করে এবং অ্যালঝেইমার, হৃদরোগ, বাত, টাইপ ২ ডায়াবেটিস এবং পুরুষদের পারকিনসন্স রোগের ঝুঁকি কমায়। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, কফি পান করেন এমন ৫০ শতাংশ মানুষ লিভার ক্যানসারের ঝুঁকি থেকে মুক্ত। কফি স্তন ক্যানসার, কোলন ক্যানসার এবং মলাশয়ের ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়।

একটি আপেল যতটুকু ক্যালরি পোড়ায়, এক কাপ কফি পোড়ায় তার দ্বিগুণ ক্যালরি। ফলে ওজন থাকে আয়ত্তের মধ্যে। নিয়মিত কফি পান করলে দূরে থাকে বার্ধক্যও।

অর্থাৎ ক্যাফেইন বা চা-কফি অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করলে যেমন অবসাদ, ইনসমনিয়া, দুশ্চিন্তা ইত্যাদি দেখা দিতে পারে, তেমনি পর্যাপ্ত পরিমাণে নিয়মিত গ্রহণ করলে অবসাদজনিত সমস্যা কেটে যাওয়ার পাশাপাশি বাড়বে কর্মশক্তি ও কর্মস্পৃহা। এমনকি নিয়মিত ব্যায়াম করার সময়ে পেশীর সংকোচন-প্রসারণের গতিও বাড়বে এতে।

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, স্বাভাবিক অবস্থায় পূর্ণবয়স্ক একজন পুরুষ দৈনিক চার কাপ কফি কিংবা ছয় কাপ চা এবং একজন নারী তিন কাপ কফি অথবা চার কাপ চা খেতে পারবেন।

মাথায় রাখবেন, অতিরিক্ত ভালো জিনিসও ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রতিদিন চা কিংবা কফি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। সূত্র: ওয়েবসাইট।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৫:২৪ | বুধবার, ২৯ জানুয়ারি ২০১৪

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com