শুক্রবার ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

নেবুলাইজারের সঠিক ব্যবহারবিধি

  |   সোমবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০১৮ | প্রিন্ট

নেবুলাইজারের সঠিক ব্যবহারবিধি

অনেক রোগী বা সেবাদানকারী এটির সঠিক ব্যবহারপদ্ধতি না জানার কারণে ঠিকভাবে ওষুধ প্রয়োগ করতে পারেন না। নেবুলাইজ করার পর এটি যে ভালো করে পরিষ্কার করে রাখতে হয়, তারও গুরুত্ব দেন না। এতে উপকারের পরিবর্তে রোগীর ক্ষতি হতে পারে। পরামর্শ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ কে এম মোশাররফ হোসেন

অ্যাজমা, সিওপিডি (ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ বা দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসকষ্ট রোগ) ও অন্যান্য শ্বাসনালিজনিত রোগ তীব্র আকার ধারণ করলে, রোগী ইনহেলার নিতে ব্যর্থ হলে নেবুলাইজার দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে।

সাধারণত তিন ধরনের নেবুলাইজার ব্যবহৃত হয়। সহজে ব্যবহারযোগ্য বলে বাড়িতেও চালানো যায় জেট নেবুলাইজার। আল্ট্রাসাউন্ড দিয়ে ওষুধের তরল উপাদানকে রূপান্তরিত করে শ্বাসনালিতে পাঠানো হয় আল্ট্রাসনিক নেবুলাইজারে। আর মেশ নেবুলাইজারে মেশ বা জালের সাহায্যে তরল ওষুধ অ্যারোসলে পরিণত করে শ্বাসনালিতে পাঠানো হয়। সহজলভ্য ও পরিচালনা সহজ বলে বাংলাদেশে জেট নেবুলাইজার বেশি ব্যবহৃত হয়।

যা থাকে
নেবুলাইজারের কয়েকটি অংশ থাকে। এর কমপ্রেসরের মাধ্যমে চাপযুক্ত বাতাস প্রয়োগ করা হয়। টিউবে হয় প্লাস্টিকের তৈরি, যা কমপ্রেসরকে নেবুলাইজারের ওষুধ চেম্বারের সঙ্গে যুক্ত করে। আর নেবুলাইজারে ওষুধ চেম্বারের তরল ওষুধটি অ্যারোসল বা স্প্রেতে রূপান্তরিত হয়।

ব্যবহারপদ্ধতি
► রোগীকে আরামদায়কভাবে আধাশোয়া বা বসা অবস্থায় রাখুন।

► নেবুলাইজারের অংশগুলো জোড়া দিন। প্রতি স্প্রেতে ২৩ মিলি পানি, সঙ্গে ৫-১ মিলি সালবিউটামল সলিউশন এবং প্রয়োজনে ইপ্রাট্রোসিয়াম সলিউশন (৫ মিলি) নিন।

► এবার কমপ্রেসরটিতে বৈদ্যুতিক সংযোগ দিয়ে সুইচ অন করুন। এতে বাতাস দ্রুত প্রবাহিত হয়।

► এবার ওষুধের অ্যারোসল মাউথপিস (টিপিস) বা মাস্ক দিয়ে মুখে নিঃশ্বাসের সঙ্গে ফুসফুসে নিতে থাকুন। মাউথপিস ব্যবহার করলে রোগীকে এটি দাঁতের ফাঁকে রেখে ঠোঁট বন্ধ করে রাখতে হবে।

► নেবুলাইজ করার সময় রোগীকে ধীরে ধীরে ও লম্বা শ্বাস নিতে হবে।

► সাধারণত তিন থেকে ছয় মিলি তরল ওষুধ ৫-১০ মিনিটে নেবুলাইজ করা হয়।

যত্ন
একবার ব্যবহারের পর নিচের পরামর্শগুলো মেনে নেবুলাইজার পরিষ্কার করা উচিত।

► ভালোভাবে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিতে হবে।

► নেবুলাইজারের কমপ্রেসর, টিউব, মাউথপিস বা মাস্ক ও নেবুলাইজার আলাদা করে ফেলুন।

► মাউথপিস বা মাস্ক ও নেবুলাইজার গরম পানিতে ৩০ সেকেন্ড রেখে ধুয়ে নিন। এরপর বাতাসে এগুলো শুকিয়ে নিন।

► কমপ্রেসর, টিউব সাধারণত গরম পানি দিয়ে ধোয়া যায় না। টিউবের বাইরের দিকটা শুধু পরিষ্কার করা যায়।

► মাউথপিস বা মাস্ক ছয় মাস পর পর বদলান।

► এর ফিল্টার নিয়মিত বদলান বা ফিল্টারে ময়লা দেখা দিলেই তা বদলে ফেলুন।

জেনে রাখা ভালো
► নেবুলাইজার অ্যাজমা ও সিওপিডি-রোগীদের নিয়মিত ব্যবহার করা উচিত নয়। কারণ এটি কোনো দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসাপদ্ধতি নয়। এতে রোগীর শ্বাসকষ্টের সাময়িক উপশম হয় মাত্র।

► একবার বা দুবার নেবুলাইজ করার পরও কষ্ট না কমলে রোগীকে নিকটস্থ হাসপাতালে নিতে হবে।

► কখনো কখনো নেবুলাইজ করার শুরুতে রোগীর শ্বাসনালি তাত্ক্ষণিকভাবে সংকুচিত হয়ে পড়ে, তখন রোগীকে অক্সিজেন দিতে হতে পারে।

► নেবুলাইজারে যদি ইপ্রাট্রোসিয়াম সলিউশন ব্যবহৃত হয়, তবে তা গু্লকোমা রোগীদের চোখে ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে। এ ধরনের রোগীর ক্ষেত্রে মাউথপিস ব্যবহার করা নিরাপদ।

► নেবুলাইজারে ব্যবহৃত ইপ্রাট্রোসিয়াম সলিউশন বয়স্ক রোগীদের প্রস্টেট গ্ল্যান্ডের সমস্যা থাকলে তা আরো বাড়াতে পারে।

► কিছু ক্ষেত্রে নেবুলাইজারে ব্যবহৃত ওষুধ রোগীর পটাশিয়ামের মাত্রা কমিয়ে দেয়। তাই রোগীকে পটাশিয়াম সাপ্লিমেন্ট দিতে হতে পারে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১২:৩৩ | সোমবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০১৮

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com