নিজস্ব প্রতিবেদক | রবিবার, ০৩ মার্চ ২০২৪ | প্রিন্ট
স্বাধীনদেশ অনলাইন : জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডি আয়োজিত পতাকা দিবসের আলোচনায় বক্তারা বলেছেন, সরকারকে জনগণের ইচ্ছার কাছে নতি স্বীকার করতেই হবে। ক্ষমতার মোহে বর্তমান সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে উপেক্ষা করে, অস্বীকার ও অবজ্ঞা করে দেশ পরিচালনা করতে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধটা আমাদের হাতছাড়া হয়ে গেছে। সেজন্য দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের ডাক এসেছে। রোববার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, আজ হোক কিংবা কাল হোক, আজকে এই সরকারকে জনগণের ইচ্ছার কাছে মাথা নতি স্বীকার করতেই হবে। বুলেটের জোরে, প্রশাসনের জোরে, বিচারবিভাগের জোরে এবং পুলিশ বাহিনীসহ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের জোরে তারা জনগণের টুটি চেপে ধরে এদেশের ক্ষমতায় চিরকালের জন্য থাকতে চায়। এটা যদি ভেবে থাকে তাহলে তারা স্বপ্ন দেখছে। এই স্বপ্ন তাদের ভেঙে যাবে।
দুর্নীতিসহ দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট তুলে ধরে মঈন খান বলেন, যে বাংলাদেশের জন্য লক্ষ লক্ষ মানুষ জীবন দিয়েছে, আমরা তাদের কাছে কি জবাব দেব। এই সোনার বাংলার কথা যে আওয়ামী লীগ সরকার বলে থাকে, আজকে একটি কথা আমাদেরকে মনে রাখতে হবে-স্বাধীনতা যুদ্ধে যে বীর মুক্তিযোদ্ধারা জীবন দিয়েছিলেন এবং যারা বেঁচে আছেন, আজকে আমরা তাদের কাছে কি বলবো। এই বাংলাদেশের জন্য কি লক্ষ লক্ষ মানুষ বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছিল? আজকে সরকার কি জবাব দিবে? কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী (বীর উত্তম) বলেন, আমি এবার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলাম।
আমি একজন পরাজিত সৈনিক। আমি দেখতে দাঁড়িয়েছিলাম এবং ধারণা ছিলো মানুষ ভোট দিতে যাবে। আমার এতো অনুরোধেও আমার দলের অর্ধেক মানুষও ভোট দিতে যায় নাই। আমি সেই জন্য বলতে চাই, আমি শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটাতে আসি নাই। শেখ হাসিনাকে গতিতে বসানোর জন্যও আসি নাই। এটা সত্য এই আওয়ামী লীগ ভাসানীর আওয়ামী লীগ না, বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগও এটা না। এটা লুটপাটকারীদের আওয়ামী লীগ। সেজন্য এদেশের মানুষের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে আনার জন্য আমাদের সবাইকে একত্রিত হয়ে সংগ্রাম করতে হবে।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, এখানে অনেক বক্তা বলেছেন, স্বাধীনতার প্রথম পতাকা উত্তোলক আ স ম আবদুর রব। আমার দৃষ্টিতে স্বাধীনতার পতাকা প্রথম আর দ্বিতীয় উত্তোলন কেউ থাকতে পারে না। একজনই যিনি পতাকাটা উত্তোলন করেছেন।
স্বাধীনতার প্রসঙ্গে অশ্রুঝরা চোখে স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্যে জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, দেশকে স্বাধীন করেছি। কিন্তু দেশের মানুষকে তো স্বাধীন করতে পারলাম না। দেখে যেতে পারলাম না দেশের মানুষ স্বাধীন হয়েছে। গত ৫২ বছর পরেও জনগণের কাঙ্ক্ষিত রাষ্ট্র নির্মাণ হয়নি।
আবদুর রব বলেন, ক্ষমতায় মোহে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে উপেক্ষা করে, অস্বীকার ও অবজ্ঞা করে দেশ পরিচালনা করতে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধটা আমাদের হাতছাড়া হয়ে গেছে। সেজন্য দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের ডাক এসেছে। বলা যেতে পারে, মুক্তিযুদ্ধকে হত্যা করা হয়েছে। গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে। আর ন্যায় বিচারও এদেশে নেই।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সিনিয়র সহসভাপতি তানিয়া রব এর সভাপতিত্বে সভায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান রিজু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Posted ১৯:৫৮ | রবিবার, ০৩ মার্চ ২০২৪
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin