মঙ্গলবার ২১শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

রাজধানীতে লাঠি মিছিল, আইনজীবীদের বিক্ষোভ : অনির্দিষ্টকালের অবরোধেও অবরুদ্ধ খালেদা জিয়া ও বিএনপি কার্যালয়

  |   বুধবার, ০১ জানুয়ারি ২০১৪ | প্রিন্ট

P1_rajdhanite-lathi-misil
স্টাফ রিপোর্টার : ১৮ দলীয় জোটের প্রধান বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া তার গুলশানের নিজ বাসভবনে এবং রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় অবরুদ্ধের মধ্য দিয়েই শুরু হয়েছে ১৮ দলীয় জোটের ডাকা টানা অনির্দিষ্টকালের অবরোধ কর্মসূচি। অবরোধের সমর্থনে লাঠি মিছিলসহ রাজধানীর বেশ কয়েকটি জায়গায় মিছিল করেছে ছাত্রদল, যুবদল ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা। এছাড়া সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল করেছে আইনজীবীরা। তবে অনির্দিষ্টকালের অবরোধের প্রথম দিনে গতকাল বুধবার রাজধানীতে বড় ধরনের কোনো সহিংতার ঘটনা না ঘটলেও রাজধানীর ব্যস্ততম গাবতলী, মহাখালী ও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার কোনো যানবাহন ছেড়ে যায়নি। ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয়ের পাশাপাশি যাত্রী না থাকায় ছাড়ছে না লঞ্চ। বন্ধ রয়েছে দূরপাল্লার পরিবহনের টিকিট কাউন্টারগুলো। স্কুল-কলেজসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও ক্লাস-পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি।
৫ জানুয়ারির প্রহসনের নির্বাচন বাতিল এবং ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’তে বাধা দেয়ার প্রতিবাদে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট সারা দেশে সড়ক-রেল ও নৌপথে অনির্দিষ্টকালের এ অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে। গতকাল বুধবার ভোর ৬টা থেকে শুরু হওয়া অনির্দিষ্টকালের এ অবরোধ কর্মসূচি পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত চলবে।
এর আগে গত ২৫ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন একতরফা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই বিরোধী জোটের অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়। ৫ দফায় ২০ দিন রাজপথ, রেলপথ ও নৌপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করে ১৮ দলীয় জোট। প্রথম দফায় গত ২৬ নভেম্বর থেকে ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত ৭১ ঘণ্টা, ৩০ নভেম্বর থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত দ্বিতীয় দফায় ১৩১ ঘণ্টা, তৃতীয় দফায় ৭ ডিসেম্বর থেকে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৪৪ ঘণ্টা, চতুর্থ দফায় ১৭ ডিসেম্বর থেকে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৭২ ঘণ্টা এবং ২১ ডিসেম্বর থেকে ২৪ ডিসেম্বর বিকাল ৫টা পর্যন্ত ৮৩ ঘণ্টার পঞ্চম দফা অবরোধ কর্মসূচি পালন করে। পাঁচ দফা অবরোধে সারা দেশে শতাধিক মানুষ নিহত হয়।
পঞ্চম দফা অবরোধ কর্মসূচি শেষে গত ২৪ ডিসেম্বর ঢাকায় ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ বা গণতন্ত্রের অভিযাত্রা নামে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে ১৮ দলীয় জোট। ২৯ ডিসেম্বরের এ কর্মসূচিতে সারা দেশ থেকে জাতীয় পতাকা হাতে নেতাকর্মীসহ সব শ্রেণী-পেশার মানুষকে ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। এ কর্মসূচিকে ঘিরে দেশে নবজাগরণ সৃষ্টি হয়। তবে ওই কর্মসূচি ঘোষণার পরপরই আওয়ামী লীগ সরকার ১৮ দলীয় জোটের ওপর বর্বর শক্তি প্রয়োগ শুরু করে। সারা দেশে যৌথ বাহিনীর অভিযানের নামে হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। ঢাকাকে সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়। গৃহবন্দি করা হয় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে।
কর্মসূচির দিন ঢাকায় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা নারকীয় তাণ্ডব চালায় জাতীয় প্রেস ক্লাব, সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের ওপর। এরপর ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ কর্মসূচি একদিন বাড়ানো হয়। দ্বিতীয় দিনেও একই অবস্থা অব্যাহত ছিল রাজধানীসহ সারা দেশে। এরপরই অনির্দিষ্টকালের এ অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা দেয় ১৮ দলীয় জোট।
অবরোধের প্রথম দিনে গতকাল বুধবার রাজধানীর অভ্যন্তরে কিছু যানবাহন চলাচল করলেও তা ছিল অন্য দিনের চেয়ে তুলনামূলক কম। রাজধানী থেকে দূরপাল্লার কোনো যানবাহন ছেড়ে যাওয়া ও রাজধানীতে প্রবেশ করতে না পারায় সারা দেশ থেকে অনেকটাই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে রাজধানী ঢাকা। রাজধানীতে গণপরিবহনের সংখ্যা তুলনামূলক কম থাকায় দুর্ভোগে পড়তে হয় রাজধানীবাসীকে।
এদিকে অবরোধের সমর্থনে রাজধানীতে মিছিল পিকেটিং করেছে ছাত্রদল, যুবদল ও জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা। কয়েকটি পয়েন্টে সড়কে আগুন দিয়ে অবরোধের চেষ্টা এবং ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
অবরোধ সমর্থনে গতকাল সকালে রাজধানীর তেজগাঁও এলাকার তেজকুনি পাড়ায় লাঠি মিছিল বের করে যুবদলের নেতাকর্মীরা। পরে পুলিশ বাধা দিলে তাদের মিছিলটি পণ্ড হয়ে যায়। এছাড়া রামপুরা, মালিবাগ ও ডেমরা এলাকায় মিছিল করেছে ছাত্রদল ও যুবদল কর্মীরা।
সকাল ৭টার দিকে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ ছাত্রশিবির সভাপতি শাহীন আহমদ খানের নেতৃত্বে ডেমরায় একটি মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি ডেমরার বড়ভাঙ্গা ব্রিজে শুরু হয়ে বোর্ডমিলে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় তারা সড়কে অগ্নিসংযোগ করে অবরোধের চেষ্টা করে।
বাসভবনে অবরুদ্ধ খালেদা জিয়া : ১৮ দলীয় জোট নেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া নতুন বছরের ও অনির্দিষ্টকালের অবরোধের প্রথম দিন গতকালও তার গুলশানের নিজ বাসভবনে অবরুদ্ধ ছিলেন। এ নিয়ে গত ৭ দিন ধরে অবরুদ্ধ রয়েছেন তিনি।
গত ২৪ ডিসেম্বর বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া নির্বাচন প্রতিরোধের আহ্বান জানিয়ে ২৯ ডিসেম্বর ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ কর্মসূচি ঘোষণার পর ২৬ ডিসেম্বর থেকেই তিনি অবরুদ্ধ আছেন।
গতকাল গুলশানে গিয়ে দেখা গেছে তার বাসভবনের সামনে পুলিশের উপস্থিতির সংখ্যা কমানো হলেও নজরদারি রয়েছে আগের মতোই। বাসার সামনে এখনো রয়েছে বালুভর্তি ট্রাকের ব্যারিকেড। রাস্তার পাশে রয়েছে জলকামান। মোতায়েন আছে পুলিশ, র্যাব ও অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা।
এমন এক পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার বেলা ৩টা থেকে পৌনে ৫টা পর্যন্ত খালেদা জিয়ার গুলশানের বাসভবনে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজিনা। এ সময় খালেদা জিয়ার দুই উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান ও সাবিহ উদ্দিন আহমদ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে যেভাবে বাসভবন থেকে বের হতে দেয়া হচ্ছে না, তেমনি তার রাজনৈতিক কার্যালয় এবং বিএনপির নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কাউকে পপ্রবেশ করতে দিচ্ছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। কার্যালয়ের প্রধান গেটের সাটারে তালা মেরে রাখা হয়েছে। কোনো নেতাকর্মী সেখানে গেলেই তাকে আটক করা হচ্ছে।
সুপ্রিমকোর্টে আইনজীবীদের মিছিল-সমাবেশ : এদিকে অবরোধের সমর্থনে ও সুপ্রিমকোর্টে হামলার প্রতিবাদে গতকাল সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল করেছে আইনজীবীরা। এতে দুই শতাধিক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন। এর আগে হামলার প্রতিবাদ ও সভা-সমাবেশ না করার বিভ্রান্তিমূলক সংবাদ প্রসঙ্গে একটি সংবাদ সম্মেলনে অনুষ্ঠিত হয়।
Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৩:২২ | বুধবার, ০১ জানুয়ারি ২০১৪

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com