| সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৩ | প্রিন্ট
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে মারপিটের ঘটনায় একজনের নাক ফেটে যায় এবং আরেকজনের চোখ-মুখে প্রচন্ড আঘাত লাগে। মারপিটে লিপ্ত যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নজমুল ইসলাম এবং রক্তাক্ত উপদেষ্টা সাইফুল ইসলাম রহিমকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বার্তা সংস্থা এনাকে জানায়, দফায় দফায় এহেন পরিস্থিতির অবতারণা ঘটে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের বিরুদ্ধে বহিষ্কারের নোটিশ জারি এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগ এবং যুবলীগের সক্রিয় কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে সম্পূর্ণ অনৈতিকভাবে আহবায়ক কমিটি গঠনের পরিপ্রেক্ষিতে।
১৫ ডিসেম্বর রোববার সন্ধ্যায় (বাংলাদেশ সময় সোমবার সকালে) আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীদের তোপের মুখে পড়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নজমুল ইসলাম এবং সেক্রেটারী সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ। এ মারপিটের ঘটনার সময় বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের সভাপতি তথা যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আকতার হোসেন এবং অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি এম ফজলুর রহমান ছিলেন কিংকর্তব্যবিমূঢ়।
তারা আনুষ্ঠানিকভাবে সভা শুরু করার আগেই এমন মারদাঙ্গা পরিস্থিতির উদ্ভব হওয়ায় পুলিশ এসে সকলকে সভাস্থল থেকে তাড়িয়ে দেয়। ফলে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানটি পন্ড হয়ে যায়। এর আগেও গত ৬ মাসে আরো ৫ বার মারপিটের ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে। তবুও যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগের কমিটির কোন সুরাহার উদ্যোগ নেননি নেতৃবৃন্দ। এমনকি যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকদের বহিষ্কারের যে নোটিশ দেয়া হয়েছে তাও প্রত্যাহার করে নেয়া হয়নি।
এছাড়া, অগঠনতান্ত্রিক উপায়ে যুক্তরাষ্ট্র স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া থেকেও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা বিরত হননি। গত জুন মাসের শেষার্ধে কেন্দ্রীয় যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর আত্মীয় হিসেবে পরিচয় দানকারী তারিকুল হায়দার চৌধুরীকে আহবায়ক করে যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগের আহবায়ক কমিটি গঠন করে দেয়া হয়। এরপরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন যুবলীগের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা। তাদের অভিযোগ, কমিটির মেয়াদ আরো দেড় বছর রয়েছে এবং মিসবাহ আহমেদ ও ফরিদ আলমের নেতৃত্বাধীন কমিটি বরাবরই সক্রিয় রয়েছে। এমন একটি কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে আহবায়ক ও যুগ্ম আহবায়ক করা হয়েছে এমন কয়েকজনকে-যারা আগে কোনদিনই যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগের সাথে জড়িত ছিলেন না।
আরো অভিযোগ করা হয়েছে যে, এমন ব্যক্তিকে আহবায়ক করা হয়েছে যিনি গত ৭ মাসে যুবলীগের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতা-কর্মী নিয়ে একটি সভা করতে সক্ষম হননি। যুবলীগের কর্মীরা আওয়ামী লীগের নেতাদের ওপর ক্ষুব্ধ এজন্যে যে, যুবলীগের মাঠের কর্মীরা মনে করছেন যে তাদের (আওয়ামী লীগের) মদদেই সক্রিয় কমিটি ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। একই পরিস্থিতির অবতারণা করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের দুই সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন দেওয়ান এবং আব্দুল হাসিব মামুনকে বহিষ্কারের নোটিশ প্রদান করে। স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের অজ্ঞাতে যুক্তরাষ্ট্র স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি ভেঙ্গে দেয়ার পরিপ্রেক্ষিতেও মাঠের কর্মীরা প্রচন্ড ক্ষুব্ধ আওয়ামী নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসে পালকি পার্টি সেন্টারে মারপিটের প্রাক্কালে ক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা উল্লেখ করেন যে, জামাত-শিবিরের পারপাস সার্ভ করার মতলবেই বিভিন্ন কমিটি ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে।
বহিস্কারের নোটিশ জারি করা হচ্ছে। ‘যে সময়ে জামাত-শিবিরের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে দলীয় কর্মীদের একযোগে সোচ্চার হওয়া দরকার, ঠিক সে সময়ে কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ কার পারপাস সার্ভ করছেন তা খতিয়ে দেখা দরকার’-মন্তব্য যুবলীগের সভাপতি মিসবাহ আহমেদের।
সর্বশেষ রাত ১২টায় (বাংলাদেশ সময় সোমবার সকাল ১১টা) প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, গ্রেফতারকৃতদের জামিনের জন্যে নেতৃবৃন্দ নিকটস্থ পুলিশ স্টেশনে রয়েছেন।
Posted ২৩:৫১ | সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৩
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin