শুক্রবার ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

বিক্ষোভ-সমাবেশে সাংবাদিক নেতারা :প্রধানমন্ত্রীকে রেখে সঙ্কটের সমাধান সম্ভব নয়- দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন তিনি

  |   মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০১৩ | প্রিন্ট

1450958_576278875761066_1705484796_n
স্টাফ রিপোর্টার
চলমান সঙ্কটের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দায়ি করে বিক্ষোভ সমাবেশে সাংবাদিক নেতারা বলেছেন, শেখ হাসিনার মতো মানুষকে প্রধানমন্ত্রী রেখে দেশের চলমান সঙ্কটের সমাধান সম্ভব নয়। গণতন্ত্র, মানুষের বাক ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং রাজনৈতিক সঙ্কটের সমাধান করতে হলে প্রধানমন্ত্রীকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে। তা না হলে সাংবাদিক ও পেশাজীবীরা আন্দোলনের মাধ্যমেই সরকারের পতন ঘটিয়ে বন্ধ গণমাধ্যম চালু ও সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে মুক্ত করবে। পদত্যাগ না করে অবৈধ এই সরকারের প্রধান শেখ হাসিনা দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তারা।
গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গনে ‘বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দেয়ার দাবিতে’ আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে সাংবাদিক ও পেশাজীবী নেতারা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) যৌথভাবে এ কর্মসূচির আয়োজন করে। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি প্রেস ক্লাব থেকে শুরু হয়ে হাইকোর্ট মোড় হয়ে পল্টন ঘুরে প্রেস ক্রাবে এসে শেষ হয়। এসময় সাংবাদিক-পেশাজীবীদের স্লোগানে স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে উঠে আশ-পাশের এলাকা।
সভাপতির বক্তৃতায় বিএফইউজে সভাপতি রুহুল আমিন গাজী একতরফা নির্বাচন আয়োজনে সরকারের পক্ষাবল¤¦নকারী গণমাধ্যমের সমালোচনা করে বলেন, দেশে গণতন্ত্রের এই কঠিন সঙ্কটকালীন সময়ে জনবিরোধী ভুমিকার কারণে মিডিয়াকে ইতিহাসের কাঠগঁড়ায় দাঁড়াতে হবে। মিডিয়াকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা গণতন্ত্র নাকি স্বৈরতন্ত্রেরর পক্ষ নিবে। সরকারের মিডিয়া বন্ধের সমালোচনা করে তিনি বলেন, মিডিয়াকে বন্ধ অবস্থায় আমরা দেখতে চাই না। আমরা আমার দেশ, দিগন্ত ও ইসলামিক টিভি চালু দেখতে চাই, সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের মুক্তি চাই। ফ্যাসিস্ট এই সরকারের পতন ঘটিয়ে বন্ধ গণমাধ্যমগুলো চালুর মাধ্যমেই আমরা ঘরে ফিরে যাবো। এসময় তিনি আজ বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সমাবেশে উপস্থিত থাকতে সবার প্রতি আহ্বান জানান।
বিএফইউজে মহাসচিব শওকত মাহমুদ বলেন, বর্তমান সময়ের মতো মিডিয়ার ওপর এমন আক্রমণ ও নির্যাতন এর আগে কখনো দেখিনি। তারপরেও প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার আমলে নাকি সাংবাদিকদের ওপর কোন নির্যাতন হয়নি। কিছু মিডিয়া সরকারের পক্ষে দালালী করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের দালালীতে কাজ হবে না। কারণ সব সংবাদপত্র বন্ধ করে বশংবদ ৪টি মিডিয়া রেখেও শেখ মুজিব তার পতন ঠেকাতে পারেনি। বর্তমান সরকারও পারবেন না।
প্রধানমন্ত্রী নিজেই চলমান কঠিন সঙ্কটের মুল কারণ উল্লেখ করে ডিইউজে সভাপতি কবি আবদুল হাই শিকদার বলেন, শেখ হাসিনার মতো মানুষকে প্রধানমন্ত্রী রেখে কখনো দেশের চলমান সঙ্কটের সমাধান সম্ভব নয়। দেশে গণতন্ত্র, মানুষের বাক ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং রাজনৈতিক সঙ্কটের সমাধান করতে হলে প্রধানমন্ত্রীকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে। তা না হলে সাংবাদিক ও পেশাজীবীরা আন্দোলনের মাধ্যমেই সরকারের পতন ঘটিয়ে বন্ধ গণমাধ্যম ও সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে মুক্ত করে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেবে।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ বলেন, পদত্যাগ না করে অবৈধ এই সরকারের প্রধান শেখ হাসিনা দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিয়েছে। আজকে মানবাধিকার দিবসেও সরকারের পেটোয়া বাহিনী জনগণের আন্দোলণে নির্বিচারে পাখির মতো গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যা করছে। আজীবন ক্ষমতায় থেকে তিনি ভারতের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চায়। তার এই ষড়যন্ত্র ও নোংড়ামীর বিরুদ্ধে জনগণকে রুখে দাঁড়াতে হবে।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান বলেন, ভারতের জনগণ ক্ষমতাসিন কংগ্রেসকে প্রত্যাখ্যান করেছে। দেশেও একই বাস্তবতা বিদ্যমান। বাংলার মাটিতে হাসিনার অধীনে কোন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার গণমাধ্যমের টুটি চেপে ধরে দেশকে একটি মৃত্যুর জনপদে পরিণত করেছে। এসব করে হিটলার-মুসোলিনীর শেষ রক্ষা হয়নি, হাসিনারও হবে না।
সাংবাদিকদের কর্মসূচিতে একাÍতা প্রকাশ করে জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) সাধারণ সম্পাদক কণ্ঠশিল্পী মুনির খান বলেন, দেশের ১৬ কোটি মানুষ শান্তি চায়। তারা এমন অশান্তি আর একতরফা নির্বাচন দেখতে চায় না।
অবিল¤ে¦ আমার দেশসহ বন্ধ গণমাধ্যম চালু ও সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের মুক্তি দাবি করে বিএফইউজে সহকারি মহাসচিব এম আবদুল্লাহ বলেন, সরকারের পাতানো নির্বাচনে এখন একটি দল ও মার্কা সেটি হচ্ছে নৌকা। তামাশার এ নির্বাচন জনগণ কখনো মেনে নেবে না।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের যুগ্ন সম্পাদক কাদের গণি চৌধুরী ‘অন্যের স্বাধীনতা কেড়ে নিলে সে হয় কয়েদী’ নেলসন ম্যান্ডেলার এমন বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, শেখ হাসিনা আজ ১৬ কোটি মানুষের কয়েদী। নির্বিচারে মানুষ হত্যার জন্য একদিন তাকেও বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।
ডিইউজের আমার দেশ ইউনিট প্রধান বাছির জামালের পরিচালনায় সমাবেশেস অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন, ডিইউজে সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, বিএফইউজের সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, ডিইউজে সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ বাকের হোসাইন, বিএসএমএমইউ’র সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. আবদুল মান্নান, অথ্যপেডিক বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সিরাজউদ্দিন আহমেদ, ইঞ্জিনিয়ার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাবেক সহ-সভাপতি প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) যুগ্ন মহাসচিব ডা. এস এম রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি এ কে এম মহসিন, ডিইউজে যুগ্ন সম্পাদক শাহীন হাসনাত, সাংগঠনিক সম্পাদক রফিক মুহাম্মদ, প্রচার সম্পাদক আকন আবদুল মান্নান, ডিইউজের দৈনিক সংগ্রাম ইউনিট প্রধান শহিদুল ইসলাম, দিগন্তের ইউনিট প্রধান ইমরান আনসারী, নির্বাহী সদস্য কামার ফরিদ প্রমুখ।
আজ প্রেস ক্লাবে পেশাজীবী সমাবেশ ঃ সঙ্কট নিরসনে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আজ বুধবার বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে পেশাজীবীদের সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ এ সমাবেশের আয়োজন করেছে। এতে সাংবাদিক ছাড়াও চিকিৎসক, প্রকৌশলী, শিক্ষকসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতাবৃন্দ অংশ নিবেন।
 

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৭:৩৯ | মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০১৩

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com