| মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০১৪ | প্রিন্ট
বাংলাদেশের এক তৃতীয়াংশ ভূখণ্ড অবৈধ ভাবে করার প্রতিবাদে ভারতীয় জনতা পার্টি বিজেপির প্রবীণ নেতা লাল কৃষ্ণ আদভানির অফিসিয়াল সাইট, বিজিপির অফিসিয়াল ও বিভিন্ন রাজ্যের ১১টি সাইট ছাড়াও গত ১২ ঘণ্টায় ভারতের তিন শতাধিক সাইট হ্যাকের দাবি করেছে বাংলাদেশ সাইবার ৭১। সোমবার মধ্যরাত থেকে এ অপারেশন শুরু হয়। এ ব্যাপারে সাইবার ৭১-এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তানজিম আল ফাহিম স্বাধীনদেশ ডটকমকে জানিয়েছেন, বিজেপি তাদের বক্তব্য প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত এ হামলা অব্যাহত থাকবে।
বিজিপি যে ১১টি সাইট হ্যাক করা হয়েছে তার তালিকাও দিয়েছে হ্যাকার টিম। সাইটগুলো হচ্ছে, বিজিপি রাজ্য সভা, বিজিপি লোক সভা, বিজিপি পাঞ্জাব, বিজিপি দিল্লী, বিজিপি মধ্য প্রদেশ, বিজিপি অনলাইন ফোরাম, ডেপুটি প্রধানমন্ত্রীর ওয়েবসাইট, বিজিপি ফ্যান ওয়েবসাইট, বিজিপি কেন্দ্রীয় মহিলা বিভাগীয় ওয়েবসাইট, বিজিপি নেতা লাল কৃষ্ণ আদভানি ব্লগ ও ফোরাম এবং বিজিপি বিহার ওয়েবসাইট।
হ্যাক করা ওয়েবসাইটগুলো খুললে দেখা যায় তাতে বলিউড তারকা অমিতাভ বচ্চন ও তার ছেলে অভিষেক ও পুত্রবধূ ঐশ্বরিয়া রাই হাসিমুখে মধ্যমা উঁচু করে আছেন। তার নিচে লেখা hello BJP, so u again demands Bangladeshi land? (হ্যালো বিজেপি, তোমরা কি আবার বাংলাদেশের ভূমি দাবি করবে?)। এছাড়া আরো লেখা আছে যার বাংলা করলে দাঁড়ায়, ‘বাংলাদেশি ভূখণ্ড দাবির প্রতি এটি জোরালো প্রতিবাদ। এর জন্য ক্ষমা চাওয়া উচিৎ। এটি অনুরোধ নয়, সাবধানবানী। কিন্তু আবার দেখা হবে। বাংলাদেশি হ্যাকারদের পক্ষ থেকে তোমাদের একটি নিরাপত্তা চুমু।’ ‘অল বাংলাদেশি ফ্রিডম ফাইটার সাইবার-৭১ ফ্যামিলি’ নামে একটি হ্যাকার গ্রুপ এর দায় স্বীকার করেছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ এপ্রিল ভারতের সাম্প্রদায়িক দল বলে পরিচিত ভারতীয় জনতা পার্টি বিজেপির অন্যতম শীর্ষনেতা সুব্রামনিয়ম স্বামী বাংলাদেশের কাছে এক তৃতীয়াংশ ভূখণ্ড দাবি করেন। তিনি বলেন, খুলনা থেকে সিলেট পর্যন্ত সমান্তরাল রেখা টেনে এ জমি ভারতের হাতে ছেড়ে দিক বাংলাদেশ। কারণ দেশভাগের পর অধূনা বাংলাদেশ থেকে এক-তৃতীয়াংশ মুসলমান ভারতে অনুপ্রবেশ করেছে। তাদের ফিরিয়ে নিতে হবে বাংলাদেশকে। অন্যথায় এসব মুসলমানের সংস্থাপনের জন্য বাংলাদেশকে এক তৃতীয়াংশ ভূখণ্ড জমি ছাড়তে হবে ঢাকাকে। গত শনিবার আসামের শিলচর থেকে প্রকাশিত বাংলা দৈনিক সাময়িক প্রসঙ্গ এ খবর দিয়েছে।
পত্রিকাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্বামীর যুক্তি হলো-সৌদি আরব, কুয়েত, কাতারসহ বিশ্বের যেসব দেশে মুসলমানদের সংখ্যাধিক্য সেখানে হিন্দুরা মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। এমনকি প্রকাশ্যে ধর্ম পালনেরও অধিকার নেই তাদের। একমাত্র ভারতেই যেহেতু হিন্দুরা সংখ্যাগরিষ্ঠ, তাই এই দেশ ধর্মনিরপেক্ষ। ফলে সীমান্তপার (বাংলাদেশ) অনুপ্রবেশ সম্পর্কে সতর্ক থাকা প্রয়োজন।
সাময়িক প্রসঙ্গের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃটেনের হাউজ অব কমন্সে ১৯৪৭ এর জুনে ভারতের দেশভাগ নিয়ে বিতর্ক এবং ইন্ডিয়ান ইন্ডিপেনডেন্স অ্যাক্ট-এর মৌলিক প্রসঙ্গ টেনে যে তত্ত্বের যুক্তিজাল এদিন সামনে রাখলেন স্বামী, এককথায় তার সারমর্ম হলো, মানুষের বোঝা চাপিয়ে দিলে দিতে হবে জমিও। সুব্রাক্ষণিয়ম স্বামীর বক্তব্য হলো, ধর্মের ভিত্তিতে দ্বিধাবিভক্ত হয়েছিল ভারত ভূখণ্ড। তাই পাকিস্তান বা অধুনা বাংলাদেশ থেকে এদেশে যেসব মুসলমান অনুপ্রবেশ করেছে তাদের ফিরিয়ে নিতে হবে বাংলাদেশকে। অন্যথায় এদের সংস্থাপনের জন্য জমি ছাড়তে হবে ঢাকাকে।
স্বামীর মতে, অধুনা বাংলাদেশ ভূখণ্ড থেকে এক-তৃতীয়াংশ মানুষ সীমান্ত টপকে ঢুকেছে এদেশে। তাই এদের ফিরিয়ে না নিলে বাংলাদেশকে ছেড়ে দিতে হবে সে দেশের এক-তৃতীয়াংশ ভূখণ্ড। স্বামীর প্রস্তাব, খুলনা থেকে সিলেট অবধি সমান্তরাল রেখা টেনে এই জমি ভারতের হাতে ফেরত দিক বাংলাদেশ। তবে স্বামী জানিয়েছেন, এ নিয়ে তিনি এখনো মোদি বা বিজেপির সঙ্গে কথা বলেননি ঠিকই, কিন্তু নতুন এই তত্ত্বের কথা যথাসময়ে দেশের সংসদে উত্থাপন করবেন। সংসদে এ নিয়ে বিতর্ক হওয়া প্রয়োজন সে কথা তিনি দলীয় নেতৃত্বকে বুঝিয়ে বলবেন। সাময়িক প্রসঙ্গের প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার একদিনে সফরে গৌহাটিতে পা রেখেছিলেন স্বামী। উদ্দেশ্য, দলের নির্বাচনী বাতাস বইয়ে দেয়া। কোনো প্রচার সভায় ভাষণ না দিলেও স্থানীয় বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে এক আলাপতারিতায় অংশ নেন তিনি। মুখোমুখি হন সাংবাদিকদেরও।
Posted ১১:২৪ | মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০১৪
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin