| রবিবার, ০৯ মার্চ ২০১৪ | প্রিন্ট
সারাজীবন তিনি আকাশে ওড়ার স্বপ্ন দেখেছেন। অবশেষে সে স্বপ্ন মনে হয় সত্যি হতে চলেছে। তিনি লুলু ফেরদৌস। নাসাতে সহযোগী গবেষক হিসেবে বর্তমানে কর্মরত এই বাংলাদেশী নারী মঙ্গলের প্রথম বাসিন্দাদের একজন হতে যাচ্ছেন। একটি ডাচ অলাভজনক প্রতিষ্ঠান সাতমাস আগে ঘোষণা দেয়, ২০২৫ সালে মঙ্গল গ্রহে স্থায়ীভাবে মানুষের বসবাস শুরু করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে যারা স্বেচ্ছায় মঙ্গলে বসতি গড়তে চান, তাদের কাছ থেকে প্রতিষ্ঠানটি আবেদনপত্র আহ্বান করে। এরপরই আবেদনপত্র জমা হতে শুরু করে। অসংখ্য আবেদনপত্র জমাও পড়ে যায়। এরপর শুরু হয় যাচাইবাছাই। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ১ হাজার ৫৮ জন পৃথিবীবাসীকে দ্বিতীয় রাউন্ডের জন্য নির্বাচিত করা হয়। এই ১হাজার ৫৮ জনের মাঝে লুলু ফেরদৌসও একজন।
লুলু জানান, দুই লাখের বেশি আবেদনপত্র জমা পড়ে এই প্রোগ্রামে। পুরো প্রোগ্রামে মাত্র চারজন মহাকাশচারীকেই এ সুযোগ দেয়া হবে। তিনি এই চারজনের একজন হতে যাচ্ছেন।এই একমূখী যাত্রা’র একমাত্র অর্থ- হয় মঙ্গলে গিয়ে লড়াই কর, নাহয় মর। তবে এ নিয়ে মোটওে ভীত নন লুলু।
তিনি বলেন, ‘আমি এই অভিযানের জন্য অধীর হয়ে অপেক্ষায় আছি। নিজেকে প্রস্তুতও করে ফেলেছি আমি। এমন অভিযানের ঝুঁকি সম্পর্কে আমার জানা আছে। এসব আমি শিখেছি যখন নিজেকে পাইলট ও মাহাকাশচারী হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলেছি।’
পরিবারের সদস্যদের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানাতে গিয়ে লুলু বলেন, ‘পরিবারের সবাই তো বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিল আমার সিদ্ধান্তের কথা জানার পর। কিন্তু আমি জানি, আমার এই অভিযান তাদেরকে গর্বিত করবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘মঙ্গলের বাসিন্দাদের সাথে পৃথিবীর বাসিন্দাদের স্যাটেলাইটের মাধ্যমে যোগাযোগ থাকবে। কাজেই আমি শারীরিকভাবে পরিবারের সঙ্গে না থাকতে পারলেও ভার্চুয়ালি অবশ্যই থাকবো।’
দশ বছর বয়সে যখন প্রথম সনিক বুম সম্পর্কে পড়ের লুলু, তখন থেকেই তার ভেতর আকাশে ওড়ার স্বপ্ন বাসা বাধে। তখনই তিনি প্রতিজ্ঞা করেন, তিনিই প্রথম বাংলাদেশী হবেন যিনি শব্দের বাধা ভাঙবেন। প্লেন চালানর স্বপ্ন নিয়ে ২০০০ সালে তিনি বাংলাদেশ
বিমানবাহিনীতে জিডি পাইলটের জন্য আবেদন করেন। কিন্তু তিনি সুযোগ পাননি, কারণ তিনি নারী। নারীরা জিডি পাইলট হতে পারবে না। বিমান বাহিনী থেকে তাকে ডাক্তার বা শিক্ষাবিভাগে কাজ করার পরামর্শ দেয়া হয় এবং সেমতে আবেদন করতে বলা হয়।
এরপর তিনি ওমাহা থেকে নেব্রাস্কা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আকাশ পরিবহণ প্রশাসন বিভাগ থেকে ব্যাচেলর অব সায়েন্স ডিগ্রি অর্জন করে মহাকাশ বিজ্ঞানের ওপর ডক্টরাল ডিগ্রি নিতে মুরু করেন। যখন মঙ্গলের জন্য আবেদনপত্র চাওয়া হয়, তিনি প্রথমেই ওয়েবসাইটে গিয়ে পরীক্ষা করেন সেখানে নাগরীকত্ব, লিঙ্গ বা বয়স নিয়ে কোনো বাধা আছে কি না। কিন্তু যখন দেখা গেল তা বিশ্বাবাসীর সবার জন্য উন্মুক্ত, তিনি আবেদন করে বসেন। তারপর তো শুধু দিন গোনা আর এগিয়ে যাওয়া।
]
Posted ২২:১৬ | রবিবার, ০৯ মার্চ ২০১৪
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin