| রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৩ | প্রিন্ট
স্টাফ রিপোর্টার : এক ব্যক্তির ক্ষমতার লালসায় পুরো দেশ বদ্ধভুমিতে পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে বিক্ষোভ সমাবেশে সাংবাদিক নেতারা বলেছেন, সারা দেশে গণহত্যা চালিয়ে হাসিনার সরকার স্বৈরশাসক হিটলারকেও হার মানিয়েছে। নির্বাচনের নামে দেশে তামাশা চলছে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, সংবিধানের দোহাই দিয়ে প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্র ও মানুষের ভোটাধিকারের কথা বলে ১৫৪টি আসন ভাগ-বাটোয়ার মাধ্যমে ১৬ কোটি মানুষকে লজ্জায় ফেলেছেন। দেশের অর্ধাংশ মানুষকে তাদের ভোটারাধিকার থেকে বঞ্চিত করেছেন। বাঙলার মানুষ তামাশার এ নির্বাচন দেখতে চায় না।
গতকাল রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গনে ‘বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দেয়ার দাবিতে’ বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে সাংবাদিক নেতারা এসব কথা বলেন।
বিএফইউজে সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, ডিইউজে সভাপতি কবি আবদুল হাই শিকদার, বিএফইউজে সহ-সভাপতি আমিরুল ইসলাম কাগজী, সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, ডিইউজে সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, জাতীয় প্রেস ক্লাবের যুগ্ন সম্পাদক কাদের গণি চৌধুরী, ডিইউজের সাবেক সহ-সভাপতি ছড়াকার আবু ছালেহ ও সৈয়দ আলী আসফার, ডিইউজে কোষাধ্যক্ষ এম এ নোমান, সাংগঠনিক সম্পাদক রফিক মুহাম্মদ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সহ-সভাপতি জিয়াউল কবির সুমন, ডিইউজের দৈনিক সংগ্রাম ইউনিট প্রধান শহিদুল ইসলাম, দিগন্তের ইউনিট প্রধান ইমরান আনসারী, রাজশাহী বিশ¡বিদ্যালয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি এরশাদুল বারী প্রমুখ। সমাবেশ পরিচালনা করেন ডিইউজের নির্বাহী সদস্য এরফানুল হক নাহিদ।
সভাপতির বক্তৃতায় রুহুল আমিন গাজী বলেন, নির্বাচনের নামে দেশে তামাশা চলছে। প্রধানমন্ত্রী মানুষের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্রের কথা বলে একতরফা নির্বাচনে ১৫৪টি আসনে ভাগ-বাটোয়ার মাধ্যমে ১৬কোটি মানুষকে লজ্জায় ফেলেছেন। দেশের অর্ধাংশ মানুষকে তাদের ভোটারাধিকার থেকে বঞ্চিত করেছেন। এটিকে ইতিহাসের নজীরবিহীন ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাঙলার মানুষ এ তামাশার নির্বাচন দেখতে চায় না।
একতরফা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে দেশকে কঠিন অবস্থার মধ্যে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দিনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, তফসিলের মাধ্যমে আপনি দেশে রক্তপাত শুরু করেছেন। অচিরেই বাঙলার মানুষ আপনার চামড়া দিয়ে ডুগডুগি বাজাবে। সে অবস্থার জন্য আপনি প্রস্তুত থাকুন। প্রধানমন্ত্রীকে রক্তের খেলা বন্ধ করে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনি যে গণহত্যা চালাচ্ছেন এর বিচার একদিন হবেই। এসময় তিনি হরতাল-অবরোধের কারনে সারা দেশের জেলায় জেলায় সাংবাদিকদের সমাবেশ কর্মসূচি করতে না পারায় শুধুমাত্র ঢাকায় এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে উল্লেখ করে বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দেয়ার দাবিতে কাল মঙ্গলবার প্রেস ক্লাবে বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষনা দেন।
এক ব্যক্তির ক্ষমতার লালসায় পুরো দেশ বদ্ধভুমিতে পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে কবি আবদুল হাই শিকদার বলেন, রক্তপিপাসু হাসিনা হিটলারকেও হার মানিয়েছে। প্রতিদিন সারা দেশে গণহত্যা চালানো হচ্ছে। কিন্তু গণহত্যা চালিয়ে অতীতে কেউ পার পায় নি, হাসিনাও পাবে না। মুক্তিযুদ্ধে শেখ হাসিনার পাকিস্তানে বসে সন্তান জš§ দেয়া ছাড়া কোনো অবদান নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের জন্য, মানুষের জন্য তার কোনো মায়া নেই। সে জন্যই তিনি গুলি করে নিরীহ মানুষ হত্যা করছেন। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আপনি ক্ষমতার দাম্ভিকতা ছেড়ে দিন, নিয়মতান্ত্রিকভাবে নির্বাচনে জনগণের ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় যান। এখনও সময় আছে সাবধান হোন। তা না হলে প্রতিটি ঘরে ঘরে যে দুর্গ গড়ে উঠছে তাতে আপনি পালানোর পথ খুজে পাবেন না।
নির্বাচনের নামে দেশে বেহায়পনা চলছে উল্লেখ করে এম এ আজিজ বলেন, দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষের ওপর যেভাবে পাখির মতো গুলি করা হচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে আমরা নিজ দেশেও পরবাসী।
সৈয়দ আবদাল আহমদ বলেন, তামাশার নির্বাচনে ১৫৪ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হওয়ার মাধ্যমে দেশে কলঙ্কজনক নতুন ইতিহাস তৈরী হয়েছে। স্বাধীন এই দেশকে পরাধীন করার জন্য সরকার নতুন করে ষড়যন্ত্র করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আপনি রক্তের খেলা থেকে বিরত থাকুন। অন্যথায় জনগণ আপনাকে বিরত রাখতে বাধ্য করবে।
কাদের গণি চৌধুরী বলেন, এবারের প্রহসনের নির্বাচন দেখে নির্বাচন পাগল সাক্কু মিয়াও ভোটে দাঁড়াতে লজ্জা পেয়েছেন। তিনি অবিল¤ে¦ বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দেয়ার দাবি জানিয়ে বলেন, এ সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বললেও তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে বিশ¡াসঘাতকতা করেছে।
Posted ১২:৫৪ | রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৩
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin