শনিবার ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

বনানীর এফআর টাওয়ারের দুঃস্মৃতি মনে আছে তো?

  |   সোমবার, ২৮ মার্চ ২০২২ | প্রিন্ট

বনানীর এফআর টাওয়ারের দুঃস্মৃতি মনে আছে তো?

রাজধানী ঢাকার বনানীর বহুতল বাণ্যিজিক ভবন এফআর টাওয়ারে অর্থাৎ ফারুক রূপায়ণ টাওয়ারে লাগা অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা মনে আছে তো? ২০১৯ সালের ২৮ মার্চ দুপুর ১টায় লাগা আগুনে ২৬ জন পুড়ে ছাই হয়েছিল। আহত হয়েছিলেন শতাধিক। সেদিন ২২ তলা ওই ভবনের অষ্টম তলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল। ক্রমেই তা ছড়িয়ে পড়েছিল অন্যান্য তলায়।

 

দুরন্ত টিভি ও এফএম রেডিও টুডে’র কার্যালয় এফআর ভবনের পাশে হওয়ায় অগ্নিকাণ্ডের সময় এ দুটির সম্প্রচার সাময়িক বন্ধ রাখা হয়।

 

অগ্নিকাণ্ডের দিন প্রত্যক্ষদর্শীদের কয়েকজন ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটিকে জানায, আটতলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল। তাদের আশঙ্কা ছিল, বৈদ্যুতিক গোলোযোগ থেকে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কমিটির সাক্ষাৎকারে অন্তত ১২ জন প্রত্যক্ষদর্শী জানান যে, আটতলা থেকেই আগুন লাগে।

 

অগ্নিকাণ্ডের পর আগুন যখন দ্রুত অন্যান্য তলায় ছড়িয়ে পড়ে, তখন ভবনের ভেতর আটকা পড়া অনেকে ভবনের কাঁচ ভেঙ্গে ও রশি দিয়ে নামার চেষ্টা করেন। এ সময় কয়েকজন নিচে পড়ে মারা যান। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ও উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করেছিল ফায়ার সার্ভিসের ১৭টি ইউনিট।

 

 

একইসঙ্গে বিমানবাহিনী, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও পুলিশের সদস্যরা উদ্ধারকাজে যোগ দিয়েছিলেন সেদিন। এছাড়া ঘটনাস্থলে ৪০-৫০টি অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে সেবা দেওয়া হয়। বেলা তিনটার দিকে উদ্ধারকাজে হেলিকপ্টার ব্যবহার শুরু হয়। হেলিকপ্টার দিয়ে গুলশান-বনানী লেক থেকে পানি সংগ্রহ করে ভবনে ছিটানো হয়। অনেক চেষ্টার পর বিকাল পাঁচটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

 

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় যে ২৬ জন নিহত হয়েছিলেন, তার মধ্যে একজন শ্রীলঙ্কার নাগরিক ছিলেন। বেশ কিছু মানুষ ভবন থেকে লাফ দিতে গিয়ে মারা যান। শ্রীলংকার ওই নাগরিক একই ভাবে নিহত হয়েছিলেন। আহতদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, ইউনাইটেড হাসপাতাল ও অ্যাপোলো হাসপাতালসহ ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়।

 

দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন। চারদিকে মানুষের ছোটাছুটি। আগুনের লেলিহান শিখার সঙ্গে কালো ধোঁয়ায় অন্ধকার হয়ে পড়ে আশপাশের পরিবেশ। ভারি হয়ে উঠে আকাশ। ২২তলা এফআর টাওয়ারে থাকা কর্মজীবী নারী-পুরুষদের প্রাণ বাঁচাতে প্রাণপণ চেষ্টা- এসব দৃশ্য বারবারই চোখের সামনে ভেসে উঠবে। কারণ, সেদিনের সেই ভয়াবহ ঘটনা ভোলার নয়।

 

এখানে এক কথা বলতেই হবে, আগুন লাগার খবর শুনেই যারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান, জীবন বাজি রেখে আগুন নেভানোর কাজটা করেন, ২০১৯ সালের ২৮ মার্চ এফআর টাওয়ারের আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মীও সেদিন দগ্ধ হয়েছিলেন। পাঁচ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অব্স্থায় তিনি মারা গিয়েছিলেন।

 

ওই ঘটনায় নড়েচড়ে বসে সরকার। অগ্নিকাণ্ডের জন্য ভবনের অনুমোদন, নকশার ত্রুটি ও অগ্নিনিরাপত্তাকে দায়ী করা হয়। এরপর নগরীর সব ভবনে অগ্নিনিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য নড়েচড়ে বসে সবাই। নগরীর বিভিন্ন ভবনে ‘অগ্নিকাণ্ডের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ’ লেখা বিভিন্ন ব্যানার লাগিয়ে দেয় ফায়ার সার্ভিস।

 

রাজউক, পুলিশ ও সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকেও নানা কর্মসূচি ও উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হয়। নগরীতে ঝুঁকিপূর্ণ বহুতল ভবনের তালিকা তৈরি করে রাজউক। কথা ছিল, সেই তালিকা গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হবে। ভেঙে ফেলা হবে সব নকশা বহির্ভূত অবৈধ স্থাপনা।

 

কিন্তু অগ্নিকাণ্ডের কিছুদিন যেতে না যেতেই আবার থেমে যায় সব উদ্যোগ। এখন আর কেউ ঝুঁকিপূর্ণ ভবন নিয়ে কথা বলেন না। অলক্ষ্যে সরিয়ে ফেলা হয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ লেখা সেই সাইনবোর্ডগুলোও। সরকার শুরু থেকে জানান দিলেও শেষ অবধি প্রকাশ করা হয়নি সেই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকাও। নকশা বহির্ভূত কোনো ভবনের বিরুদ্ধে অভিযানও চালানো হয়নি।  সূএ:ঢাকাটাইম ডটকম

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ০৫:২২ | সোমবার, ২৮ মার্চ ২০২২

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com