শুক্রবার ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কুষ্টিয়ায় রতন হত্যা : অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের আজকে ২য় পর্ব

  |   বুধবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | প্রিন্ট

কুষ্টিয়ায়  রতন হত্যা : অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের আজকে ২য় পর্ব

 

শামসুল খান: আপনারা আমার প্রথম পর্বের নিউজ পড়ে আশা করি কিছুটা বুঝতে পারছেন, রতন হত্যা খুবই গোপনীয় ও মাস্টারমাইন্ড এর পরিকল্পনা অনুযায়ী হয়েছে, যার জন্য এখন পর্যন্ত রতন হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ ব্যর্থ হয়, অপরাধীরা এত সূক্ষ্ম ভাবে কাজ করেছে পুলিশও কোনও প্রমাণ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করতে পারি নাই, আমরা টেলিভিশনে দেখি যেখানে হত্যা করা হয় পুলিশ ঘটনাস্থলে অনেক কিছুই ইনভেস্টিকেশন করে, বাস্তবে কিন্তু তা হয় না, আমাদের পুলিশ বিভাগ এখনও অনুন্নত রয়ে গেছে, সরকার পুলিশ বিভাগকে আধুনিক করার জন্য অনেকগুলো প্রকল্প হাতে নিয়েছে, এগুলো বাস্তবায়ন হলে পুলিশ বিভাগ আধুনিক হবে, জনগণ তখন আধুনিক সুযোগ সুবিধা ভোগ করবে, ইতিমধ্যেই অনেক কাজ আধুনিক হয়ে গেছে, পুরোপুরি আধুনিক না হওয়া পর্যন্ত পুলিশের কিছু সীমাবদ্ধতা রয়ে গেছে, রতন হত্যাকারীরা সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েছে, পুলিশের যে এসআই আগে দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিল তিনি বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মীদের বলেছেন এ হত্যাকাণ্ডের কোনো কূলকিনারা খুঁজে পাননি। এই থেকেই বোঝা যায়, রতনের হত্যাকারীরা ঠান্ডা মাথায় খুন করেছে।

তাহলে শুরু থেকেই শুরু করি, রতন হত্যা মামলায় পুলিশের সন্দেহভাজন 2 জন আসামিকে দিয়েই শুরু করি, বর্তমানে তারা উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্ত আছে। তারা দুইজন হল শান্তা, সেলিম।

শান্তা সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শান্তা গামার নেতৃত্বে কমিউনিস্ট পার্টির সক্রিয় সদস্য। লাহিনী বটতলা মাদক সিন্ডিকেটের গডফাদার। রতন হত্যার সন্দেহজনক এক নম্বর আসামি। লাহিনী মধ্যপাড়া মুবা মেম্বারের বড় ছেলে শান্তা।

অন্ধকার জগতের সক্রিয় সদস্য হওয়ায় এলাকা থেকে গ্রাম্য সালিশে বের করে দেয়। দীর্ঘ এক বছর এলাকায় প্রবেশ করতে পারতো না। তার আত্মীয় স্বজনরা গ্রাম্য সালিশের মাতবরদের হাতে পায়ে ধরে এলাকায় প্রবেশ করার সুযোগ করে দেয়া হয়, তবে মাদবরদের শর্ত ছিল শান্তাকে অন্ধকার জগত ছাড়তে হবে, মাদক ব্যবসা ছাড়তে হবে, তাহলে এলাকায় প্রবেশ করতে পারবে।

এলাকায় ঢুকে শান্তা কয়েকমাস চুপচাপ চায়ের দোকানে বসে চা বিক্রি করতো, এখন চায়ের দোকান বন্ধ করে মাদকের রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে, ইতিমধ্যেই আমার হাতে শান্তা মাদক কেনাবেচা সাথে জড়িত হয়েছে সেই প্রমাণ রয়েছে, সান্তা জেল থেকে বের হয়ে রতনের বাবা বাদীকে মামলা তুলে নেয়ার হুমকি দিচ্ছে বাঁদিকে বলছে, এখনও অস্ত্র জমা দেয়নি, খুন একটা করলেও 32 বছরের জেল হয়, পাঁচটা করলেও 32 বছরে জেল হয়, কেস তুলে না নিলে পাঁচটা খুন করে জেলে যাব, রহমত দোকানদারের সামনে শান্তা বাদীকে এই হুমকি দেয়।

সেলিম সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেলিম লাহিনী স্কুল পাড়ার আব্দুস সাত্তারের একমাত্র ছেলে। রতন হত্যা মামলায় সন্দেহজনক দুই নম্বর আসামি সেলিম। আলোচিত কুমারখালী চাপড়া ইউনিয়নের গলাকাটা হত্যা মামলার অন্যতম আসামি।

সম্প্রতি স্থানীয় যুবলীগ নেতা সুরুজকে কুপিয়ে হত্যা মামলার এক নম্বর আসামি হয় সেলিম। রতন দশম শ্রেণীর ছাত্র, বাবার ভদ্র ছেলে হিসেবে এলাকায় সুনাম রয়েছে। রতনের দুনিয়া বড় ছিল না, রতনের দুনিয়া অনেক ছোট ছিল। সেই দুনিয়ার সাথে যারা যারা যুক্ত ছিলেন তাদের সম্পর্কে রতনের বাবা, মা, প্রতিবেশী, বন্ধু, বান্ধবী, নিকটস্থ আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে যে খোঁজ খবর পেয়েছি নিচে তুলে ধরা হলো।

(১) নিকটস্থ আত্মীয়: রতনের বড় চাচা আজিম সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আজিম সাইকেল চুরি করে হিরোইন খাওয়া শুরু করে, শুধু হিরোইন না, ইয়াবা, গাঁজা, না খেলে মাথা বিকৃত হয়ে যায়, আজিম রতন হত্যার চার পাঁচ মাস আগে স্থানীয় যুবলীগ নেতা সুরুজকে কুপিয়ে হত্যা করার চেষ্টা করে, সেই মামলায় আজিম দুই নাম্বার আসামি। এখানে আমার একটা প্রশ্ন আছে ৪-৫ মাস আগে যে এটেম টু মার্ডার করতে পারে ৪-৫ মাস পর হত্যা করা তার পক্ষে খুবই সহজ ব্যাপার না? রতন হত্যার পর সন্দেহজনকভাবে আজিমকে পুলিশ তুলে নিয়ে যায়, আজিম পুলিশ হেফাজত থেকে ছাড়া পেয়ে আনুমানিক ৭ ঘটিকার সময় বাদীর রুমে যায়, তখন বাদীর স্ত্রী জিজ্ঞাসা করে আজিম তোর কি মনে হয় কে করতে পারে খুন? আজিম তখন বলে আমার মনে হয় এই কাজ সান্তা, সেলিম করতে পারে, ওদের সাথে আরও দুইজন বাইরের লোক থাকতে পারে, তখন রুমে উপস্থিত ছিল রতনের বাবা, রতনের মা, রতনের ছোটভাই, এবং পাশের বাড়ির রাশেদুল।

রতনের মুখে ইট চাপা দেয়ার বিষয়ে একটা গল্প আছে, রতনের বাবা যখন ঘর করে তখন রতনের মা এবং রতন সেই ইট দোতালায় তুলছিল, তখন আজিম বলেছিল এই ঘরে কি ঘুমাতে পারবে ওরা, কার জায়গায় বাড়ি করছে কিভাবে ঘুমায় আমিও দেখবো? এইখানে আমার একটা প্রশ্ন আছে? রতনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। একটা ইট দিয়ে থেতলে দিতে পারতো কিন্তু দেখা যায় রতনের মুখে ও বুকে অনেকগুলো ইট চাপা দেয়া ছিল, এতগুলো ইট কেন রতনের মুখে আর বুকে চাপা দেয়া হলো? তাহলে কি আজিম রতনকে ঘরে ঘুমাতে দেবে না বলেই হত্যা করেছে?

চাঞ্চল্যকর আরেকটা তথ্য পাওয়া যায় আজিম সম্পর্কে, আজিম এর বড় ছেলে সাগর (২৭) তার বউ হাসি (২১) এর সাথে রতনের দেবর ভাবি সম্পর্ক ছিল, রতনের সাথে হাসি মায়ের বাড়ি গেলে ফোনে যোগাযোগ করতো, রতন ভাবির সাথে ইয়ার্কি তামাশা করতো সেই সব দেখে আজিমের খুব রাগ হতো। মাঝেমধ্যে এসব নিয়ে বাড়িতে ঝগড়াঝাটি হতো, রতন ভাবি কে বলতো, ভাবী আপনি আমাকে আর ফোন দিবেন না, কিন্তু হাসি যখন তার মায়ের বাড়িতে যায়, তার স্বামীর সম্পর্কে খোঁজখবর নেয়ার জন্য মাঝেমধ্যে হাসি ফোন দিত, আজিম নিষেধ করার পরও কথা শুনতো না বলে অনেক রাগ হতো, সেই রাগ থেকেই রতনকে হত্যা করার পরিকল্পনা করতে পারে আজিম ?

(২) ভ্যান চালক (৩) সরকারি কর্মকর্তা (4) মাদক ব্যবসায়ী (৫) প্রতিবেশী পাচটি বাড়ি (৬)স্কুল বন্ধু (৭)প্রাইভেট বন্ধ (৮)বেস্ট ফ্রেন্ড (9) ভিলেজ রাজনীতি (১০) ছাত্রলীগ কর্মী পর্যন্ত জড়িত থাকতে পারে? কুষ্টিয়ার চাঞ্চল্যকর স্কুল ছাত্র রতন হত্যার মূল রহস্য ৩ তে ভ্যান চালক থেকে ছাত্রলীগ কর্মীর রহস্য উন্মোচন করে,আপনাদের সামনে তুলে ধরে প্রকাশ করা হবে দৈনিক স্বাধীনদেশ ডটকম পত্রিকাতে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৮:০২ | বুধবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com