শনিবার ৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

ফরচুন বরিশাল চ্যাম্পিয়ন

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   শনিবার, ০২ মার্চ ২০২৪ | প্রিন্ট

ফরচুন বরিশাল চ্যাম্পিয়ন

দ্য ফিজের বল কাভারে ঠেলে দিয়েই কিলার মিলার দুই হাত প্রসারিত করে দৌড় দিলেন। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ রান সম্পন্ন করেই ছোটলেন ড্রেসিং রুমের দিকে। ততক্ষণে পুরো দল নিয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন ক্যাপ্টেন তামিম ইকবাল। মধ্য মাঠে শুরু হয় বিজয় উৎসব। প্রথমবারের মতো বিপিএলের শিরোপা জিতল ফরচুন বরিশাল।

 

এর আগে তিন তিনবার ফাইনালে উঠে ব্যর্থ হলেও চতুর্থবার শিরোপার দেখা পেল দলটি। এর আগে বরিশাল দু-দুবার ফাইনালে হেরেছিল যে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিরুদ্ধে, গতকাল সেই কুমিল্লাকে ৬ উইকেটে হারিয়েই প্রতিশোধ নিল দলটি।

 

বরিশালকে শিরোপার দিকে টেনে নিয়ে গিয়েছিল তাদের ভাগ্যই! সে কারণেই তো নকআউটে প্রতি ম্যাচেই টস জিতেছেন ফরচুনের অধিনায়ক তামিম ইকবাল। আর দিবা-রাত্রির ম্যাচে টস জয় মানেই তো ম্যাচ জয়। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের উইকেট এমন যে, প্রথমে ব্যাট করা দলের জন্য রীতিমতো অগ্নিপরীক্ষা। টসে হেরে সেই অগ্নিপরীক্ষা দিতে নেমে ১৫৪ রানের বেশি করতে পারেনি লিটন দাসের কুমিল্লা। রানবন্যার উইকেটে ১৫৫ রানের টার্গেট মোটেও আহামরি কিছু নয়। তাই তো ছয় বল বাকি থাকতেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ফরচুন বরিশাল। ব্যাটে-বলে দাপট দেখিয়ে ফাইনাল সেরা হলেন বরিশালের ক্যারিবীয় তারকা কাইল মায়ার্স।

 

গতকাল জয়ের জন্য ১৫৫ রানের সহজ টার্গেটে ব্যাট করতে নামা বরিশালের কাজটা আরও সহজ করে দেন ক্যাপ্টেন তামিম মাত্র ২৬ বলে ৩৯ রানের তাণ্ডব ইনিংস খেলে। এরপর বাকি কাজটা করলেন ক্যারিবীয় তারকা কাইল মায়ার্স। ৩০ বলে খেললেন ৪৬ রানের ইনিংস।

 

গতকাল টস হারার পরই যেন মোমেন্টাম হারিয়ে ফেলে কুমিল্লা। প্রথমে ব্যাট করতে নেমেই তারা যেন ব্যাকফুটে চলে যায়। টি-২০ ক্রিকেটের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত পাওয়ার প্লেতেই টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে ফেলে ভিক্টোরিয়ান্স। যদিও প্রথম ছয় ওভার থেকে তারা ৪৯ রান নেয়। কিন্তু কাল শুরুতেই ভিক্টোরিয়ান্সের ব্যাটিং মেরুদণ্ড ভেঙে দেন ফরচুন বরিশালের ইংলিশ বোলার জেমস ফুলার। নিজের প্রথম ওভারে তুলে নেন তৌহিদ হৃদয়ের উইকেট। দ্বিতীয় ওভারে ড্রেসিং রুমে পাঠিয়ে দেন প্রতিপক্ষের ক্যাপ্টেন লিটন দাসকে।

 

ব্যাটিংয়ে ‘ট্রাম্পকার্ড’ হিসেবে গতকালও কুমিল্লা লিটনের সঙ্গে ওপেন করতে পাঠিয়েছিল ক্যারিবীয় তারকা সুনীল নারাইনকে। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। ভাগ্য সহায় ছিল না নারাইনের। শুরুতে একবার লাইফ পেলেন ঠিকই, তারপরও ৫ রানের বেশি করতে পারলেন না। ওবেদ ম্যাককয় থার্ডম্যানে সহজ ক্যাচ ফেলে দিলেও শর্ট ফাইন লেগে লাফিয়ে পড়ে ক্যারিশম্যাটিকভাবে বল তালুবন্দি করে ক্ষতি পুষিয়ে দিলেন। পাওয়ার প্লেতেই যেন ভাগ্য বরিশালের দিকে ঝুঁকে পড়ে।

 

ফিল্ডিংয়ে মেহেদি মিরাজের সরাসরি থ্রোতে উইকেট ভাঙার দৃশ্যটি ফরচুনের ভক্তদের হয়তো অনেক দিন মনে থাকবে। ১২তম ওভারে মঈন আলীকে রান আউটের ফাঁদে ফেলে ভিক্টোরিয়ান্সকে বিপদে ফেলে দেন।

 

তবে শেষ দিকে চেষ্টা করেছিলেন কুমিল্লার ক্যারিবীয় তারকা আন্দ্রে রাসেল। সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য বাইশগজে গিয়ে ঝড় তুলেছিলেন। ১৪ বলে খেলেছেন ২৭ রানের অপরাজিত ইনিংস। ফুলারের শেষ ওভার (দলের ১৯তম) থেকে নেন ২১ রান, তিনটি বিশাল ছক্কা। তবে একমাত্র রাসেল ছাড়া কুমিল্লার আর কোনো ব্যাটার বাইশগজে ঝড় তুলতে পারেননি। তাই স্কোরও বড় হয়নি। বরিশালের বোলাররা প্রথম থেকেই নিখুঁত লাইনলেন্থে বোলিং করেছেন। স্লগে রাসেল একপ্রান্তে তা ব চালালেও অন্যপ্রান্তে জাকের আলী সুবিধা করতে পারেননি। কুমিল্লার এই লোয়ার অর্ডার ব্যাটার ২৩ বল থেকে করেছেন অপরাজিত ২০ রান। দলের বিপদের সময় এমন ইনিংস রীতিমতো খুবই দৃষ্টিকটূ! টি-২০ ক্রিকেটে আগে ব্যাটিং মানেই হচ্ছে ‘ডু অর ডাই’! ১৭০-১৮০ রানের উইকেটে তো একশর নিচে স্ট্রাইকরেটে ব্যাটিং করা রীতিমতো অপরাধ!

 

ভিক্টোরিয়ান্সের ব্যাটিং লাইনআপে গতকাল সর্বোচ্চ মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনের ৩৮ রানের ইনিংসটাও টি-২০-এর জন্য মানানসই ছিল না। ৩৫ বল মোকাবিলা করেও মাত্র দুটি করে ছক্কা-চার হাঁকিয়েছেন তিনি। পুরো টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত ব্যাটিং করা কুমিল্লার ব্যাটার আসল ম্যাচেই নিজেদের প্রদর্শন করতে পারলেন না। তাই শেষ পর্যন্ত হ্যাটট্রিক শিরোপা জয়ের স্বপ্ন ভঙ্গ হয় ভিক্টোরিয়ান্সের। প্রথমবারের মতো ফাইনালে হেরে কুমিল্লার ব্যাটসম্যানরা যখন মাথা নিচু করে মাঠ ছাড়ছিলেন তখন প্রথমবারের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আনন্দে মাঠের চারপাশ দিয়ে ভিক্টরি ল্যাব দিচ্ছিলেন তামিমের ফরচুন বরিশালের ক্রিকেটাররা।

 

যদিও দু-দুবার নতুন জীবন পেয়েছেন। একবার ৯ রানে তার ক্যাচ ফেলে দেন রিশাদ, আরেকবার ২০ রানে চার্লসের হাত ফসকে বল মাটিতে পড়ে যায়। শেষ পর্যন্ত এই মায়ার্সই হলেন ফাইনাল সেরা। কারণ গতকাল বোলিংয়েও দাপট দেখিয়েছেন তিনি। চার ওভারে মাত্র ২৬ রান দিয়ে এক উইকেট নিয়েছেন।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ০৬:১৪ | শনিবার, ০২ মার্চ ২০২৪

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com