শনিবার ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজউকের প্লট-ফ্ল্যাট বরাদ্দ নিয়ে নতুন বিধিমালা

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   শনিবার, ০৪ মে ২০২৪ | প্রিন্ট

রাজউকের প্লট-ফ্ল্যাট বরাদ্দ নিয়ে নতুন বিধিমালা

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ভূমি, প্লট, স্পেস ও ফ্ল্যাট বরাদ্দ নিয়ে নতুন বিধিমালা করা হয়েছে। গত ২৫ এপ্রিল ‘রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (ভূমি, প্লট, স্পেস ও ফ্ল্যাট বরাদ্দ) বিধিমালা, ২০২৪’ জারি করেছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।

 

বিধিমালায় রাজউকের ভূমি বা আবাসিক প্লট, বাণিজ্যিক প্লট, বাণিজ্যিক স্পেস, শিল্প প্লট, প্রাতিষ্ঠানিক প্লট বা ফ্ল্যাট বরাদ্দের বিষয়ে বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে।

এর আগে এ বিষয়ে ‘রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (ল্যান্ড অ্যালোটমেন্ট) রুলস, ১৯৬৯’ ছিল। যেটি বাতিল করে নতুন বিধিমালা জারি করা হয়েছে।

 

এতে বলা হয়েছে, রাজউক পরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন করা বা উন্নয়নের জন্য নির্ধারিত কোনো প্রকল্পের ভূমি বা কোনো আবাসন প্রকল্পের অনুমোদিত লে-আউট প্ল্যানে চিহ্নিত ভূমি বা আবাসিক প্লট বরাদ্দ দিতে পারবে। প্লট বরাদ্দ দিতে জনসাধারণের কাছে আবেদন আহ্বান করে কমপক্ষে দুটি বহুল প্রচারিত জাতীয় দৈনিক পত্রিকা এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ও কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করবে।

ভূমি বা আবাসিক প্লটের বরাদ্দ পাওয়ার জন্য আবেদনকারীকে বাংলাদেশের নাগরিক এবং বয়স কমপক্ষে ২৫ বছর হতে হবে।

 

কোনো ব্যক্তি ভূমি বা আবাসিক প্লট বরাদ্দ পাওয়ার আবেদন করার অযোগ্য হবে না, যদি তিনি নিজ নামে বা তার স্ত্রী বা স্বামীর নামে ইতোপূর্বে কর্তৃপক্ষের কোনো ভূমি বা আবাসিক প্লট বরাদ্দ পেয়ে থাকেন। মিথ্যা ও ভুল তথ্য দিয়ে কোনো আবেদন দাখিল করলে আবেদন বাতিল করতে হবে এবং তার জামানতের টাকা বাজেয়াপ্ত হবে বলে বিধিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।

 

ভূমি বা আবাসিক প্লট অন্য কারো কাছে হস্তান্তর করার পর যদি প্রমাণিত হয় যে, বরাদ্দ গ্রহীতা মিথ্যা ও ভুল তথ্য দিয়ে প্লটের বরাদ্দ নিয়েছেন, তবে ওই বরাদ্দ ও হস্তান্তর বাতিল করতে হবে। এক্ষেত্রে মূল বরাদ্দ গ্রহীতা হস্তান্তর গ্রহীতাকে দ্বিগুণ ক্ষতিপূরণ দিবে।

প্লটের ধরন ও আকারভেদে ভূমি বা আবাসিক প্লটের সংখ্যা যোগ্য আবেদনকারীর তুলনায় কম হলে উন্মুক্ত লটারি ও তাৎক্ষণিক ফলাফল প্রকাশের মাধ্যমে বরাদ্দ দিতে হবে।

 

মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী বা সমমর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তি, সংসদ-সদস্য, বিচারপতি, সশস্ত্র বাহিনী, আধা-সামরিক বাহিনী, সরকারি কর্মচারি, মুক্তিযোদ্ধা, পেশাজীবী, বৈদেশিক মুদ্রা প্রেরণকারী (নিবাসী), সাংবাদিক, স্বায়ত্ত্বশাসিত সংস্থার চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, বেসরকারি চাকরিজীবী ও শিক্ষক, শিল্পী, সাহিত্যিক, ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব, আইনজীবী, আইন ও আইনগত দলিলাদি নিরীক্ষা কাজে নিয়োজিত সরকারি কর্মচারী, কৃষিবিদ, প্রকৌশলী, স্থপতি, পরিকল্পনাবিদ, চিকিৎসক, মূল অধিবাসী ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যক আবাসিক প্লট সংরক্ষণ করা যাবে বলে বিধিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।

 

কর্তৃপক্ষের আওতাধীন যে কোনো প্রকল্পের আবাসিক প্লটে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কর্মচারীদের জন্য ২ শতাংশ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দপ্তর বা সংস্থার কর্মচারীদের জন্য ২ শতাংশ এবং কর্তৃপক্ষের কর্মচারীদের জন্য ২ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ করা যাবে।

বিধিমালা অনুযায়ী, রাজউক জনস্বার্থে নিম্নোক্ত ব্যক্তিদের সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে আবাসিক প্লট বরাদ্দ দিতে পারবে- মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী বা সমমর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তি; সংসদ-সদস্য; বীর মুক্তিযোদ্ধা বা শহীদ পরিবারের সরাসরি সদস্য এবং প্রজাতন্ত্রের কর্মে বা কর্তৃপক্ষের আইন প্রণয়নবিষয়ক কাজে উল্লেখ্যযোগ্য অবদান রেখেছেন এমন সরকারি কর্মচারী বা এমন কোনো পেশাজীবী যিনি প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত না থেকেও কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জনসেবা বা জনকল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন বা করেছেন বা এমন কোনো ব্যক্তি যিনি জনগণ বা রাষ্ট্রের কল্যাণে বিশেষ অবদান রেখেছেন বা নিবেদিত প্রাণ কোনো সমাজকর্মী বা সমাজসেবক।

 

কোনো বরাদ্দ গ্রহীতা সাময়িক বরাদ্দ প্রাপ্তির পর যৌক্তিক কারণ ছাড়া প্রথম কিস্তির অর্থ যথাসময়ে পরিশোধ না করলে আত্মপক্ষ সমর্থনের যুক্তিসঙ্গত সুযোগ দিয়ে বরাদ্দপত্র বাতিল করা যাবে।

 

ভূমি বা আবাসিক প্লট বরাদ্দ গ্রহীতাকে আবশ্যিকভাবে ইজারা দলিল রেজিস্ট্রেশন করার পর ও বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের তারিখ থেকে সর্বোচ্চ চার বছরের মধ্যে বসবাস উপযোগী করে বাড়ি নির্মাণ করতে হবে। কেউ বাড়ি নির্মাণ করতে ব্যর্থ গহলে প্রতি বছর প্রতি কাঠার জন্য ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা দিতে হবে।

বাণিজ্যিক প্লট বা বাণিজ্যিক স্পেস, শিল্প প্লট, প্রাতিষ্ঠানিক প্লট, বরাদের আবেদন, বরাদ্দের পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত বলা হয়েছে বিধিমালায়।

 

ফ্ল্যাট বরাদ্দের বিষয়ে বিধিমালায় বলা হয়েছে, রাজউক কোনো আবাসিক প্রকল্পে অধিক সংখ্যক জনগণের আবাসন ব্যবস্থা করার জন্য উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত, নিম্ন-মধ্যম ও স্বল্প আয়ের জনগোষ্ঠীর জন্য এক বা একাধিক এলাকা বা ব্লক আকারে ভবন নির্মাণ করে ফ্ল্যাট বরাদ্দ করতে পারবে।

 

কর্তৃপক্ষের আওতাধীন যে কোনো প্রকল্পে নির্মিত ফ্ল্যাটের মোট সংখ্যার ১০ শতাংশ সরকারি কর্মচারীদের জন্য, ৩ শতাংশ গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিবের মাধ্যমে বরাদ্দের জন্য, ৩ শতাংশ চেয়ারম্যানের মাধ্যমে বরাদ্দের জন্য এবং ২ শতাংশ কর্তৃপক্ষের কর্মচারীদের জন্য সংরক্ষণ করতে হবে।

 

বরাদ্দপ্রাপ্ত ব্যক্তি ফ্ল্যাটের ৫০ শতাংশ মূল্য কিস্তিতে পরিশোধের পর অবশিষ্ট ৫০ শতাংশ মূল্য কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত ফি পরিশোধ করে পরবর্তী ১৫ বছরের কিস্তিতে বা কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরিশোধ করতে পারবে। কর্তৃপক্ষ আবাসিক ফ্ল্যাটের মূল্য নির্ধারণের জন্য এক বা একাধিক কমিটি গঠন করতে পারবে।

 

রাজউক নিম্ন-আয়ের জনগোষ্ঠীর জন্য বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় চিহ্নিত এলাকায় বা কর্তৃপক্ষের কোনো আবাসন প্রকল্পের অনুমোদিত লে-আউট প্ল্যানে চিহ্নিত স্থানে ভবন নির্মাণ করে সাশ্রয়ী ভাড়া বা মূল্য পরিশোধের ভিত্তিতে ফ্ল্যাট বরাদ্দ দিতে পারবে বলে বিধিমালায় জানানো হয়েছে।

বিধিমালার বিভিন্ন তফসিলে সংশ্লিষ্ট আবেদন ফরমগুলোর নমুনাও দিয়ে দেওয়া হয়েছে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১০:৫০ | শনিবার, ০৪ মে ২০২৪

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com