নিজস্ব প্রতিবেদক | বুধবার, ২৪ মে ২০২৩ | প্রিন্ট
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) আওতাধীন ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলো ধাপে ধাপে সংস্কার, সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে বলে জানিয়েছেন মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
বুধবার (২৪ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ নেতার মাজার সংলগ্ন ঢাকা ফটকের সংস্কার কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে গণমাধ্যমের সাথে মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন তিনি।
তাপস বলেন, দীর্ঘদিন পরে হলেও ঐতিহ্যবাহী একটি স্থাপনার সংস্কার শুরু করা হয়েছে। আমরা লালকুঠিতেও সংস্কার শুরু করেছি। ধাপে ধাপে আমাদের ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলো সংস্কার, সংরক্ষণ, রক্ষণাবেক্ষণ এবং পরিচালনা করব। যাতে বহির্বিশ্বের পর্যটকরা এসে ঢাকাকে বুঝতে, জানতে ও শিখতে পারে।
ঢাকার ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনা অন্যতম লক্ষ্য জানিয়ে মেয়র বলেন, নির্বাচনের সময় আমি বলেছিলাম- ঢাকার ঐতিহ্যকে আমাদের ধারণ ও সংরক্ষণ করতে হবে। শুধু দেশবাসী নয়, বহির্বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে হবে। তারই একটি শুভ সূচনা আজকে আমরা করতে পারছি। ঢাকা ফটক, যেটা রমনা ফটক নামেও পরিচিত ছিল। বাংলার সুবেদার মীর জুমলা এটি নির্মাণ করেছিলেন। সেই সময়ের চিত্র যদি আপনারা দেখেন, এই ফটকই ছিল ঢাকার মূল প্রবেশদ্বার। বুড়িগঙ্গা নদী দিয়ে আসার পরই এই প্রবেশদ্বার দিয়েই সবাই ঢাকায় প্রবেশ করতো। এই ফটকের চারপাশে হাতি পাহারারত অবস্থায় থাকতো। এরকম চিত্রও আমরা দেখেছি। আমরা সেই ইতিহাস ও ঐতিহাসিক চিত্রকে ফিরিয়ে আনতে চাই।
এ সময় ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন বলেন, ঢাকার ঐতিহ্য সংরক্ষণে মেয়র যে উদ্যোগগুলো নিয়েছেন তা অত্যন্ত সময়োচিত। কারণ এই ঢাকা কেবলমাত্র রাজধানী হিসেবেই নয়, এর একটা ঐতিহ্য রয়েছে। ৪০০ বছরের ইতিহাস রয়েছে। ইতিহাসের সাথে অনেক কিছু জড়িত। ছাত্রজীবনে আমরা এই রমনা গেট দিয়ে ঢুকতাম। ৬২’র সেই সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলনের সময় এখানে মিলিটারি এসে রেইড দিয়েছিল, যাতে আমরা অগ্রসর হতে না পারি। এখানেই মিলিটারিদের সাথে আমাদের সংঘর্ষ হয়েছিল। এখানে ঐতিহাসিক ৩ নেতার মাজার রয়েছে। এখানে যে মসজিদটি রয়েছে, যেটাকে গরম মসজিদ বলে সবাই আমরা জানি। আর এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ মসজিদ।
তিনি আরও বলেন, মুনতাসির মামুন ঢাকা নিয়ে বহু কাজ করেছেন। আমি আশা করব, তার সাথে সহযোগিতার ভিত্তিতে এই ঢাকার পুরনো ঐতিহ্যগুলো আমরা ফিরিয়ে নিয়ে আসবো। পৃথিবীর সব দেশেই ঐতিহ্য সংরক্ষণ একটি বড় বিষয়। আমরাই কেবল আমাদের ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে পারছি না। আমি আশা করব, এর ফলে ঢাকার ঐতিহ্য ফিরে আসবে এবং ঢাকাবাসী আরও উপকৃত হবে।
ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, ৫০ বছর ধরে আমরা চেষ্টা করছি ঢাকার ঐতিহ্যকে রক্ষা করতে। আজকে খুবই আনন্দের দিন এজন্য যে আমাদের বর্তমান মেয়র ঢাকার ঐতিহাসিক কীর্তিগুলো সংরক্ষণের ব্যবস্থা নিয়েছেন।
নিজের জন্মদিনে ঢাকা ফটকের সংস্কার কাজ শুরু হওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, দুই সপ্তাহ আগে আমরা ঢাকেশ্বরী থেকে লালবাগ এলাকায় সরেজমিনে গিয়েছি। নর্থব্রুক হলের কাজ শুরু হয়েছে। আজকে ঐতিহাসিক ঢাকা গেট, তথা রমনা গেটের সংস্কার কাজ শুরু হলো। আমার আজকে বেশি আনন্দ লাগছে এই কারণে যে,আজকের এই শুভ উদ্বোধনের মাধ্যমে ৫০ বছর পরে (ঐতিহ্য রক্ষার) এই আন্দোলন সফল হতে যাচ্ছে। আমার জন্মদিনেই এই কাজটা শুরু হলো। এটা ভেবে আমার কি যে আনন্দ হচ্ছে তা বলার বাইরে।
এ সময় ঢাদসিক মেয়র, ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য, উপস্থিত সাংবাদিক এবং করপোরেশনের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাসহ সকলেই খ্যাতনামা ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুনকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান।
এ সময় অন্যের মধ্যে ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন, বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদ, সচিব আকরামুজ্জামান, পরিবহন মহাব্যবস্থাপক মো. হায়দর আলী, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমান, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন, প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মো. সিরাজুল ইসলাম, নির্বাহী প্রকৌশলী মিঠুন চন্দ্র শীল এবং কাউন্সিলরদের মধ্যে ২১ নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান আসাদ ও সংরক্ষিত আসনের নারগীস মাহতাব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সূএ : ঢাকা মেইল ডটকম
Posted ০৯:৫৬ | বুধবার, ২৪ মে ২০২৩
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain