বুধবার ১৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১লা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সরকারের সঙ্গে জামায়াতের সমঝোতা!

  |   শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০১৪ | প্রিন্ট

সরকারের সঙ্গে জামায়াতের সমঝোতা!
al-jamat
নিজস্ব প্রতিবেদক, 

ঢাকা: রাজনৈতিক মহলে আবারো গুঞ্জন উঠেছে সরকারের সঙ্গে জামায়াতের সমঝোতার চেষ্টা চলছে। দলটির নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আপিল বিভাগের রায়কে ঘিরেই এমন গুঞ্জন উঠেছে। মিডিয়ার সঙ্গে জামায়াত নেতারা যোগাযোগ না রাখায় এ গুজব-গুঞ্জনের নানা ডালপালা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে। জোটের প্রধান শরিক বিএনপিও অনেকটা অস্বস্তি বোধ করছে এই গুঞ্জনে। সরকারও এ বিষয়ে কোনো কথা বলছে না।

গনজাগরণ মঞ্চকে থামিয়ে দেয়ার পেছনে হেফাজত ও জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতার বিষয়টি কারণ হিসেবে ধরা হচ্ছে। বিশেষ করে হেফাজতের সঙ্গে সমঝোতার পরেই গণজাগরণ মঞ্চ থেকে ইমরান এইচ সরকারকে সরিয়ে দেয়ার বিষয়টি নিয়ে সংবাদপত্রে অসংখ্য প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে। সূত্র জানাচ্ছে, মাওলানা সাঈদীর বিষয়টি নিয়ে গণজাগরণ মঞ্চ যাতে ‘বাড়াবাড়ি’ না করতে পারে সে কারণেই সরকার এ উদ্যোগ নিয়েছে। আর এতে করে জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতার পথটি সুগম হতে পারে বলে সরকার পক্ষের ধারণা।
তবে সম্ভাব্য মধ্যবর্তী নির্বাচনকে ঘিরে নীরবে কিছু একটা হচ্ছে বা চেষ্টা চলছে এমন ধারণা অনেকের। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ অতিগোপনে অভিযুক্ত জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। আর এতে তারা বিদেশীদের সহায়তা নিচ্ছে। জামায়াতকে ‘ম্যানেজ’ করতে কাজ করছেন প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী। আর জামায়াতের পক্ষে কাজ করছেন দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক। তিনি এখন দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। সমঝোতা না হওয়া পর্যন্ত তিনি দেশে ফিরতে পারছেন না বলে জানা গেছে। কারণ রাজ্জাক বাইরে যাওয়ার পরদিন ১৮ ডিসেম্বর কলাবাগান থানায় তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
জামায়াতের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সরকারের চোখ ফাঁকি দিয়ে কেমন করে দেশের বাইরে গেলেন এমন প্রশ্ন সবার। একটি সূত্র জানিয়েছেন, ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাককে বাইরে যেতে সহযোগিতা করেছেন প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী ও একজন বিদেশী রাষ্ট্রদূত। ওই রাষ্ট্রদূতের গাড়িতে করেই তিনজন এয়ারপোর্টে যান।
রাজনৈতিক অঙ্গনে চাউর রয়েছে, ৮৬’র নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি ঘটতে যাচ্ছে কিনা। ওই নির্বাচনে বিএনপি যায়নি, কিন্তু জামায়াত আওয়ামী লীগের সঙ্গে নির্বাচনে গিয়ে এরশাদকে বৈধতা দিয়েছিল। ১৯৯১ সালের নির্বাচনের পর জামায়াত বিএনপি’র সঙ্গে দু’টি মহিলা এমপি ‘পুরস্কার’ নিয়ে অবস্থান নিলেও অল্প দিনের মধ্যে তারা রাস্তায় আবার আওয়ামী লীগের সঙ্গী হয়। তারাই কেয়ারটেকারের ফর্মুলা দিয়ে সেটি আওয়ামী লীগের মাধ্যমে জোর করে বাস্তবায়ন করে।
আওয়ামী লীগ-জামায়াত সমঝোতা নিয়ে সর্বমহলে তোলপাড় চলছে।  তবে জামায়াতের তরুণ প্রজন্ম বিষয়টিকে মোটেই ভালোভাবে দেখছে না। তারা বলছেন, যে আওয়ামী লীগের কারণে দলের শীর্ষ নেতারা মিথ্যা অভিযোগে কারারুদ্ধ, একজনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়েছে, হাজার হাজার নেতাকর্মীকে পুলিশ দিয়ে হত্যা, গুম, পঙ্গু করেছে, তাদের সঙ্গে কোনো ধরনের সমঝোতা নয়।  তাদের  রাজনৈতিক শক্তি দিয়ে মোকাবেলা করতে হবে।
তবে বিএনপির আশঙ্কা, যদি আওয়ামী লীগ- জামায়াত সমঝোতা হয়, তা হবে মূলত বিএনপিকে বাইরে রেখে আরেকটি বিতর্কিত নির্বাচন করার নীলনকশার সমঝোতা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির সিনিয়র এক নেতা বলেন, “আওয়ামী লীগের সঙ্গে জামায়াতের আঁতাত বা সমঝোতা নতুন কিছু নয়। ক্ষমতার লোভে আওয়ামী লীগ পারে না এমন কোনো কাজ নেই। ঠিক একইভাবে নিজেদের প্রয়োজনে জামায়াতের পক্ষে কোনো কিছুই অসম্ভব নয়। তাদের অতীত বিশ্লেষণ করে সতর্কতার সঙ্গে সামনের দিকে এগুচ্ছে বিএনপি।”
কিছুদিন ধরেই শোনা যাচ্ছে, জামায়াত আপাতত সরকারবিরোধী আন্দোলনের কথা ভাবছে না। বিশেষ করে উপজেলা নির্বাচনে অভাবনীয় বিজয়ের পর জামায়াত নতুন করে দল সাজানোর কথা ভাবছে। ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপির চেয়ে এগিয়ে থাকার বিষয়টিকে জামায়াত নিজেদের শক্ত অবস্থান বলে ভাবছে। জামায়াত মনে করছে, বিএনপির দ্বারা আন্দোলন হবে না। তাই আগ বাড়িয়ে নিজেদের শক্তি ক্ষয়ের কোনো মানে হয় না।
এ বিষয়ে জামায়াত নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১১:২৮ | শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০১৪

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com