| বৃহস্পতিবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ | প্রিন্ট
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের ইউএনও ওয়াহিদা খানমের সরকারি বাসভবনে ঢুকে তার ওপর হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। হামলায় গুরুতর আহত ওয়াহিদার অবস্থা সংকটাপন্ন।
বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সাংবাদিকদের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের প্রধান অধ্যাপক ডা. কাজী দীন মোহাম্মদ গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ইউএনও ওয়াহিদা খানমের মাথায় আঘাতের কারণে হাড় ভেঙে সেটা ব্রেনে ঢুকে গেছে। তার এক সাইড অবশ হয়ে আছে। তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে। আমরা একটি অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। রাত ৯টার দিকে এটা করা হতে পারে।
হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. জাহিদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ইউএনও আশঙ্কাজনক অবস্থাতেই আছেন। ব্লাডপ্রেসার, পালস এগুলোর উন্নতি না হলে এবং উনার যদি জ্ঞানের মাত্রার আরো অবনতি হয় তাহলে কিন্তু… উনি যথেষ্ট বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে আছেন। যেকোনো সময় একটা দুর্ঘটনা ঘটতেও পারে।
পরিস্থিতির উন্নতি না হলে ইউএনওর অস্ত্রোপচার করা সম্ভব নয় জানিয়ে চিকিৎসক আরো বলেন, উনার চিকিৎসার জন্য সাত সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে।
এর আগে রংপুর কমিউনিটি হাসপাতালের চিকিৎসাধীন ওয়াহিদা খানমের অবস্থা সংকটপন্ন হওয়ায় তাকে ঢাকায় পাঠান চিকিৎসকরা।
জঘন্যতম এই হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানিয়েছেন ওয়াহিদা খানমের মা। তিন বছরের নাতিকে নিয়ে বর্তমানে তিনি রংপুর সার্কিট হাউসে অবস্থান করছেন।
তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, যে আক্রমণ করেছেন; সে বাথরুমের ভেন্টিলেটর দিয়ে ভেতরে ঢুকেছে; আমার মেয়ে ঘুমে ছিল। সে সময়ে আক্রমণ করেছে। তখন সে (ওয়াহিদা) চিৎকার করে বলেছে, আব্বা দেখেন-তো কোন বেয়াদব বাসায় ঢুকেছে। যখন গেটের কাছে এসেছে, তখন তারা বাবাকে ধরেছে।
তিনি আরো বলেন, তার চেহারা দেখতে পারেনি, মুখ ঢাকা ছিল। তার সাইজ-টা খাটো। একজনই ভেতরে ঢুকেছে।
ইউএনওর শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ শেষে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, বাসার সামনের সিসিটিভি ফুটেজে হালকা গড়নের কমবয়সী দুইজনকে প্রবেশ করতে দেখা গেছে। তবে তাদের চেহারা অস্পষ্ট, চেনা যাচ্ছে না। তারা ইউএনওকে হাঁতুড়ি জাতীয় কিছু দিয়ে আঘাত করেছে বলে মনে হচ্ছে।
জড়তিদের গ্রেপ্তারে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, স্থানীয় পুলিশ সুপার আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। আশা করছি, খুব দ্রুত হামলাকারীদের গ্রেপ্তার সম্ভব হবে।
এর আগে বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) রাত আড়াইটা থেকে ৩টার দিকে দৃর্বৃত্তরা উপজেলা পরিষদ চত্বরে প্রবেশ করে। এ সময় তারা ইউএনও’র বাসার নাইটগার্ডকে বেঁধে রেখে পেছন দিকের ভেন্টিলেটর ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে। কিছু বুঝার আগেই দৃর্বৃত্তরা ইউএনও ওয়াহিদা ও তার বাবা উমরকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে জখম করে। পরে তারা জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে দৃর্বৃত্তরা চলে যায়।
সকাল ৭টার দিকে ইউএনও’র বাবার জ্ঞান ফিরলে লোকজনকে ডাকাডাকি করেন। পরে স্থানীয়রা এসে তাদের উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
ওমর আলী পুলিশকে বলেছেন, রাতে বাথরুমের ভেন্টিলেটর ভেঙে কেউ একজন বাসায় ঢোকে। ওয়াহিদা খানম টের পেয়ে এগিয়ে গেল তার মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে। এ সময় ওমর আলী এগিয়ে গেলে তাকেও হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে হামলাকারী পালিয়ে যায়।
ঘোড়াঘাট থানার ওসি আমিরুল ইসলাম বলেন, ওই বাসা থেকে কোনো কিছু খোয়া যায়নি। এটি ডাকাতির চেষ্টা, না ‘আক্রোশ’ থেকে কেউ হামলা করেছে, সেটা পুলিশ খতিয়ে দেখছে।
Posted ২০:৩২ | বৃহস্পতিবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২০
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain