শুক্রবার ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সব রেকর্ড ভেঙে একদিনে সর্বোচ্চ ৩৪৭১ জনের করোনা শনাক্ত

  |   শুক্রবার, ১২ জুন ২০২০ | প্রিন্ট

সব রেকর্ড ভেঙে একদিনে সর্বোচ্চ ৩৪৭১ জনের করোনা শনাক্ত

গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে মৃত্যু ও শনাক্তে নতুন রেকর্ড হয়েছে। এ সময় মারা গেছে একদিনে সর্বোচ্চ ৪৬ জন। এ নিয়ে দেশে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১ হাজার ৯৫ জনে। এছাড়া এসময়ে নতুন শনাক্তের তালিকায় ৩ হাজার ৪৭১ জন মানুষ যুক্ত হয়েছেন, যা একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের সংখ্যা। এ নিয়ে মোট শনাক্ত হলেন ৮১ হাজার ৫২৩জন। আর নতুন সুস্থ হয়েছেন ৫০২ জন।

আজ শুক্রবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে যুক্ত হয়ে করোনাভাইরাস সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরেন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা।

তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৯ টি ল্যাবে ১৬ হাজার ৯৫০টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় ১৫ হাজার ৯৯০টি। এতে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে একদিনে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৪৭১জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়। পরীক্ষা যত বেশি হচ্ছে শনাক্তের সংক্তের সংখ্যাও বাড়ছে। এর আগে গতকাল (১১ জুন) একদিনে ৩ হাজার ১৮৭ জন ও তার আগের দিন (১০ জুন) একদিনে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ১৯০ জনের দেহে করোনা শনাক্তের কথা জানানো হয়। এর আগে গত ৯ জুন সর্বোচ্চ শনাক্ত হয়েছিলেন ৩ হাজার ১৭১জন। এ পর্যন্ত ৪ লাখ ৭৩ হাজার ৩২২ জনের করোনা পরীক্ষা করে দেশে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৮১ হাজার ৫২৩ জনে।

এদিকে করোনাভাইরাসে দেশে মৃতের সংখ্যা দৈনিক ৫০ জনে ছুঁতে চলেছে। নাসিমা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন একদিনে সর্বোচ্চ ৪৬ জন। এর আগে গত ৯ জুন একদিনে সর্বোচ্চ ৪৫ মৃত্যু, ৭ ও ৮ জুন টানা দুদিন ৪২ মৃত্যুর কথা জানানো হয়। তার আগে গত ৩১ মে একদিনে সর্বোচ্চ ৪০ জনের মৃত্যুর কথা জানানো হয়। এ নিয়ে মোট মৃত্যু ১ হাজার ৯৫ জনের। নতুন মৃতদের মধ্যে পুরুষ ৩৭ জন ও নারী ৯ জন। নতুন মৃতদের মধ্যে ঢাকা বিভাগ ১৯ জন ও চট্টগ্রামে ১১ জন, বরিশাল ৩, খুলনা ১ রাজশাহী ৪ জন।

নাসিমা আরও বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন সুস্থ হয়েছেন ৫০২ জন। এ নিয়ে মোট ১৭ হাজার ২৪৯ জন সুস্থ হয়েছেন। ব্রিফিংয়ের করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পরামর্শ দেন অধ্যাপক নাসিমা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, করোনা মোকাবিলায় তরল খাবার, কুসুম গরম পানি ও আদা চা পান করতে হবে। সম্ভব হলে মৌসুমী ফল খাওয়া ও ফুসফুসের ব্যায়াম করা। এ সময় ধূমপান ত্যাগ করতে হবে। কারণ, এটি ফুসফুসের কার্যকারীতা নষ্ট করে দেয়।

চীনের উহান থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী ভাইরাস করোনা বাংলাদেশে প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। সেদিন তিনজনের শরীরে করোনা শনাক্তের কথা জানিয়েছিল আইইডিসিআর।

এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। দিন দিন করোনা রোগী শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ায় নড়েচড়ে বসে সরকার।

ভাইরাসটি যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য ২৬ মার্চ থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয় সব সরকারি-বেসরকারি অফিস। কয়েক দফা বাড়ানো হয় সেই ছুটি, যা এখনও অব্যাহত আছে। ৭ম দফায় বাড়ানো ছুটি চলে ৩০ মে পর্যন্ত। ৩১ মে থেকে সাধারণ ছুটি নেই। তাই অফিস আদালতে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় সরঞ্জামাদি রাখা ও সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার উপর গুরত্ব দেয়া হচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে।

এদিকে, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সংখ্যা ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডওমিটারের পরিসংখ্যান বলছে, শুক্রবার সকাল আটটা পর্যন্ত কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে ৪ লাখ ২৩ হাজার ৮১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে আক্রান্ত হয়েছেন ৭৫ লাখ ৯৫ হাজার ৭৯১ জন। আর সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৩৮ লাখ ৪১ হাজার ৩৩৮ জন।

চীন উহান থেকে শুরু হয়ে ইউরোপে তাণ্ডব চালানোর পর ভাইরাসটির সংক্রমণের কেন্দ্র দক্ষিণ এশিয়া ও আমেরিকা। আক্রান্ত ও মৃত্যুতে দীর্ঘদিন ধরে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

করোনাভাইরাসের আক্রমণে সবচেয়ে বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ২০ লাখ ৮৯ হাজার ৭০১। দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ১৬ হাজার ৩৪ জনের। আক্রান্ত ও মৃত্যুর তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের ধারেকাছে নেই কোনো দেশ।

করোনায় শনাক্ত মানুষের সংখ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের পরপরই রয়েছে লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। সেখানে এখন মোট আক্রান্ত ৮ লাখ ৫ হাজার ৬৪৯। দেশটিতে করোনায় মৃত্যু ৪১ হাজার রপানরঢরছ। দেশটিতে করোনায় মোট ৪১ হাজার ৫৮ জন মারা গেছেন।

করোনা রোগী শনাক্তের দিক দিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে রাশিয়া। দেশটিতে ৫ লাখ ২ হাজার ৪৩৬ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৬ হাজার ৫৩২ জনের।

যুক্তরাজ্যজুড়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত মানুষের সংখ্যা প্রতিনিয়ত কমছে। দেশটিতে মোট ২ লাখ ৯১ হাজার ৪০৯ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৪১ হাজার ৪০৯ জনে।

এদিকে বাংলাদেশের প্রতিবেশি ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে করোনার সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ২ লাখ ৯৮ হাজার ২৮৩ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ৮ হাজার ৫০১ জনের মৃত্যু হয়েছে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৮:০৯ | শুক্রবার, ১২ জুন ২০২০

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com