| বুধবার, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ | প্রিন্ট
নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি বলে দাবি করেছে নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষিত জামায়াতে ইসলামী। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদাকে আওয়ামী লীগ ঘরনার দাবি করে দলটি বলেছে, নির্বাচন কমিশনে নিয়োগে প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছারই প্রতিফলন হয়েছে। এমনটিই যদি হবে তাহলে নির্বাচন কমিশনে নিয়োগ নিয়ে ৩১টি দলের সঙ্গে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ কেন সংলাপ করলেন, সে প্রশ্নও তুলেছে বিএনপির শরিক দলটি।
এক মাসের সংলাপ শেষে গঠন করা সার্চ কমিটির সুপারিশ কার ১০ জনের তালিকা থেকে গত সোমবার নির্বাচন কমিশন গঠন করেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। পাঁচ সদস্যেও এই কমিশনে একজন নিয়োগ পেয়েছেন বিএনপির সুপারিশে, একজন নিয়োগ পেয়েছেন আওয়ামী লীগের সুপারিশে। আর বাকি তিন জনের মধ্যে দুই জনের নাম ছিল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শরিক দুটি দলের প্রস্তাবে।
রাষ্ট্রপতির এই সিদ্ধান্তের দুই দিন পর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল শফিকুর রহমান। এতে বলা হয়, ‘জনাব খান মোহাম্মদ নূরুল হুদাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিযুক্ত করে যে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে তাতে জাতির প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। জাতি আশা করেছিল মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সংলাপ করে সৎ, দক্ষ, দল নিরপেক্ষ, সাহসী ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিগণকে নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন।’
সিইসিকে বিতর্কিত দাবি করে জামায়াত বলেছে, ‘তাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিযুক্ত করে প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছাই পূরণ করা হয়েছে। এতে জনগণ হতাশ হয়েছেন।’
জামায়াতের দাবি নবনিযুক্ত সিইসি ১৯৯৬ সালে বিএনপিবিরোধী আন্দোলনের সময় সচিবালয়ের কর্মকর্তাদের গঠন করা জনতার মঞ্চের একজন নেতা ছিলেন।
জামায়াতের শরিক বিএনপির নতুন সিইসিকে জনতার মঞ্চের নেতা বলে দাবি করেছে। তবে একটি গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে সিইসি বলেন, যখন এই মঞ্চ করা হয় তখন তিনি কুমিল্লার জেলা প্রশাসক ছিলেন। সেখান থেকে ঢাকার এই মঞ্চে যোগ দেয়ার অভিযোগ অসত্য।
ওই সাক্ষাৎকারেই সিইসি বলেন, তিনি যখন ছাত্র ছিলেন তখন সবাই কোনো না কোনো সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকতেন এবং তিনি একটি ছাত্র সংগঠনের হয়ে ফজলুল হক হল ছাত্র ইউনিয়নে নির্বাচিত নাট্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক ছিলেন।
একেই জামায়াত সিইসির দলীয় সম্পৃক্ততা হিসেবে দেখছে। দলের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘তাকে (নুরুল হুদা) প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিযুক্ত করে গঠিত নির্বাচন কমিশন কখনো নিরপেক্ষ হতে পারে না। এ নির্বাচন কমিশনের প্রতি দেশের জনগণের আস্থা নেই। জনগণের আস্থাহীন নির্বাচন কমিশনের দ্বারা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়।’
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে রাষ্ট্রপতির সংলাপের কথা উল্লেখ করে জামায়াত নেতা বলেন, ‘সরকারের ইচ্ছামতই যদি নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে, তাহলে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে অর্থহীন সংলাপের কি প্রয়োজন ছিল?’।
জামায়াতের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘মহামান্য রাষ্ট্রপতির সাথে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপে এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সাথে সার্চ কমিটির বৈঠকে যে সব ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠনের মূল্যবান প্রস্তাব করা হয়েছিল তাদের নাম প্রকাশ করা হলে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো এবং জনগণ তাদের সম্পর্কে সঠিকভাবে জানতে পারতেন ও মতামত প্রকাশের সুযোগ পেতেন। ফলে একটি দল নিরপেক্ষ কার্যকর নির্বাচন কমিশন গঠনে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো এবং জনগণের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন সম্ভব হতো। কিন্তু তা না করে তড়িঘড়ি করে বিতর্কিত ব্যক্তিদের নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করে এটাই প্রমাণ করা হলো যে, বর্তমান সরকার দেশের জনগণের মতামত ও রায়ের কোন তোয়াক্কাই করে না।
Posted ০৯:৪৯ | বুধবার, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain