শুক্রবার ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিশ্বে শান্তি বিনির্মাণ প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   সোমবার, ২৯ মে ২০২৩ | প্রিন্ট

বিশ্বে শান্তি বিনির্মাণ প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্বব্যাপী শান্তিরক্ষা ও শান্তি বিনির্মাণ প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশ আজ সারা বিশ্বে শান্তিরক্ষায় সক্রিয় অংশগ্রহণকারী দেশ হিসেবে গৌরব ও মর্যাদা লাভ করেছে।

 

তিনি বলেন, আমরা জাতিসংঘে সর্বোচ্চ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ। নারীর অধিকার এবং জেন্ডার সমতা নিশ্চিতকরণে আমাদের প্রচেষ্টা উইম্যান পিস এন্ড সিকিউরিটি এজেন্ডা বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখছে। শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নারীদের অংশগ্রহণ ও সুরক্ষা নিশ্চিতকরণে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।

আজ (২৯ মে) আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস উপলক্ষে আজ দেয়া এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও ‘আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস-২০২৩’ পালিত হচ্ছে জেনে তিনি আনন্দিত। এ দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা তিনি গর্বভরে স্মরণ করেন এবং শান্তিরক্ষা মিশনে কর্মরত বাংলাদেশের সকল সদস্যকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।

 

তিনি গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন সেই সকল শান্তিরক্ষীদের যারা বিশ্বশান্তির জন্য অকাতরে নিজেদের জীবন বিসর্জন দিয়ে বিশ্ব দরবারে দেশের পতাকাকে উজ্জ্বলতর করেছেন। প্রধানমন্ত্রী তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

 

শেখ হাসিনা বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে আজ সর্বাধিক শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশসমূহের অন্যতম বাংলাদেশ। জাতিসংঘ মিশন এবং বহুজাতিক বাহিনীতে আমাদের শান্তিরক্ষীদের অনন্য অবদান বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে এবং এদেশকে বিশ্বের বুকে একটি মর্যাদাসম্পন্ন রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। একইসঙ্গে বিশ্বের অর্থনৈতিক ও সামরিকভাবে শক্তিশালী দেশসমূহের সঙ্গে আমাদের পারস্পরিক কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

 

করোনা মহামারির মধ্যেও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে শান্তি স্থাপনে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীগণ পেশাদারিত্ব, দক্ষতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে ওই সকল দেশের জনগণের আস্থা অর্জন করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজ সারা বিশ্বে শান্তিরক্ষায় সক্রিয় অংশগ্রহণকারী দেশ হিসেবে যে গৌরব ও মর্যাদা লাভ করেছে, তা আমাদের শান্তিরক্ষীদের অসামান্য পেশাদারিত্ব, সাহস, বীরত্ব ও দক্ষতারই অর্জিত ফসল।

 

বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের প্রতি প্রধানমন্ত্রী তার সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীগণ যাতে আরও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জাতিসংঘের আহ্বানে সাড়া দিতে পারেন, সে জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের সকল প্রয়াস অব্যাহত থাকবে।

তিনি আশা প্রকাশ করেন, শান্তিরক্ষী সদস্যগণ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে তাদের দক্ষতা, পেশাদারিত্ব, সাহস ও নিষ্ঠা দ্বারা বাংলাদেশকে বিশ্বে একটি শক্তিশালী শান্তি প্রতিষ্ঠাকারী দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবেন এবং দেশের ভাবমূর্তিকে উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর করবেন।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ১৯৭৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করে এবং একই বছর ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলায় প্রদত্ত তার ঐতিহাসিক ভাষণে বলেছিলেন, ‘মানবজাতির অস্তিত্ব রক্ষার জন্য শান্তি অত্যন্ত জরুরি এবং তাহা সমগ্র বিশ্বের নর-নারীর গভীর আকাঙ্ক্ষারই প্রতিফলন ঘটাইবে।’ সাধারণ অধিবেশনে তিনি বিশ্বের সর্বত্র শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের অব্যাহত সমর্থনের বিষয়ে দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তখন থেকেই বাংলাদেশ বিশ্বের শান্তিপ্রিয় ও বন্ধুপ্রতীম সকল রাষ্ট্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলছে এবং বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘের অধীনে পরিচালিত সকল শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে আসছে। বিশ্ব শান্তি ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বঙ্গবন্ধুকে ১৯৭৩ সালের ২৩ মে ‘জুলিও-কুরি শান্তি পদক’-এ ভূষিত করা হয়।

সরকারপ্রধান বলেন, জাতির পিতার দর্শন অনুসরণ করে বাংলাদেশ বিশ্ব শান্তির একনিষ্ঠ প্রবক্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। আমরা ১৯৯৭ সালে জাতিসংঘে ‘শান্তির সংস্কৃতি’ সংক্রান্ত ঘোষণা এবং কর্মসূচি রেজ্যুলেশন আকারে উত্থাপন করি যা সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। পরবর্তীতে, জাতিসংঘ ২০০০ সালকে ‘ইন্টান্যাশনাল ইয়ার অভ কালচার অভ পিস’ হিসেবে ঘোষণা করে এবং ২০০১-২০১০ সালকে দ কালচার অভ পিচ এন্ড দ্যা ডিকেড অভ ননভায়োলেন্স হিসেবে ঘোষণা করে। শান্তির বার্তাকে সর্বাত্মকভাবে সুসংহত করতে এবং এজেন্ডা ২০৩০ বাস্তবায়নে ‘কালচার অভ পিস’ প্রতিষ্ঠা অপরিহার্য বলে বাংলাদেশ মনে করে ।

 

প্রধানমন্ত্রী ‘আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস-২০২৩’ উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য এবং সকল শান্তিরক্ষীর সাফল্য ও মঙ্গল কামনা করেন। সূএ :বাসস।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ০৫:৩০ | সোমবার, ২৯ মে ২০২৩

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com