বৃহস্পতিবার ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অনেক উন্নত দেশের চেয়েও বেশি’

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   শুক্রবার, ০৫ মে ২০২৩ | প্রিন্ট

‘বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অনেক উন্নত দেশের চেয়েও বেশি’

তথ্যমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর জাপান আমেরিকা ও যুক্তরাজ্য সফরের অর্জনে বিএনপি নেতাদের গাত্রদাহ শুরু হয়েছে। তাদের হতাশা এবং গাত্রদাহ থেকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মিথ্যাচারের অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছেন।

 

আজ (৫ মে) বিকেলে চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রের মাল্টিপারপাস ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

 

গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান আফগানিস্তানের নিচে দেখানো ফ্রান্সভিত্তিক সংস্থা রিপোর্টার্স স্যান্স ফ্রন্টিয়ার্স- এর রিপোর্টকে ভুয়া এবং বিদ্বেষপ্রসূত উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এ রিপোর্টটি একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং গাঁজাখুরি গল্প ছাড়া অন্য কিছু নয়। বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা আজ পৃথিবীতে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য উদাহরণ। অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অনেক উন্নত দেশের চেয়েও বেশি।

 

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী  বলেন, ‘আফগানিস্তানে কেউ স্কুল-ইউনিভার্সিটিতে যেতে পারে না, কেউ কথাই বলতে পারে না। সেটার নিচে বাংলাদেশকে দেখিয়েছে তারা। এতেই তো প্রমাণিত হয় এ রিপোর্টটি ভুয়া।

 

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘শেখ হাসিনা তো সেখানে দেশের জন্য গেছেন। জাপান আমাদের ৩০ বিলিয়ন ইয়েন বিভিন্ন প্রকল্পে সহায়তা করার চুক্তি করেছে। যে বিশ্বব্যাংক আমাদের পদ্মা সেতু থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল, সেই বিশ্বব্যাংক তাদের ভুল বুঝে প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ওয়াশিংটনে নিয়ে গেছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে তারা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে এবং ২ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। সে অর্জনগুলো বিএনপি মানুষের কাছে বিকৃতভাবে কেন মিথ্যাচার করছে সেটিই আমার প্রশ্ন?

 

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী আরও বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম সাহেবদের অনুরোধ জানাব, দেশের জন্য শেখ হাসিনা যে সাহায্য-সহযোগিতা এবং সম্মান বয়ে এনেছেন, সেজন্য চাইলে তারাও সম্মানিত বোধ করতে পারেন।

 

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘আইএমএফ-এর প্রধান আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রগতির জন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্ব প্রয়োজন। তিনি প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এগুলো দেখে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবের গাত্রদাহ হচ্ছে। তাই তিনি মিথ্যাচার করছেন। একইসঙ্গে তিনি তার মিথ্যাচারের ইতোপূর্বের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছেন।

 

চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রকে ঐতিহাসিক বেতার কেন্দ্র উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু গ্রেপ্তার হওয়ার পূর্ব মুহূর্তে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা যেটি ওয়ারলেসের মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হয়েছিল, সেটি এ চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রে পাঠ করে প্রথম শুনিয়েছিলেন তৎকালীন চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ হান্নান। চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র থেকে ২৬ মার্চ সারাদিন এটি প্রচার করা হয়। পরবর্তীতে ২৭ মার্চ চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের নেতারা যখন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন একজন সেনাবাহিনীর অফিসার দিয়ে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণাটি পাঠ করা প্রয়োজন। তখন প্রথম ইপিআরের অফিসার মেজর রফিক বীর উত্তমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার হয়েছিলেন। তিনি তখন বলেছিলেন, তিনি এমবুশ নিয়ে বসে আছেন, তিনি যদি এখান থেকে সরেন, তাহলে মুক্তিযুদ্ধের ক্ষতি হতে পারে। পাকিস্তানিদের আক্রমণ করতে সুবিধা হবে। তাই তিনি তার এমবুশ অবস্থান থেকে সরতে চায়নি। এছাড়া তিনি জিয়াউর রহমানের খোঁজ দিয়েছিলেন।

 

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘মেজর রফিকের একটি বই আছে, যার শিরোনাম ‘লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে’। সেই বইয়ে সবিস্তারে বর্ণিত আছে। মেজর রফিক বইটিতে লিখেছেন ২৫ মার্চ রাতে জিয়াউর রহমান সোয়াত জাহাজ থেকে পাকিস্তানিদের অস্ত্র খালাস করতে যাচ্ছিলেন। পথে বাধা পেয়ে তিনি ফেরত আসেন। পরে ২৭ মার্চ জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণাটি পাঠ করেন। আজ অনেক ইতিহাসের বিকৃতি ঘটানো হয়েছে। ইতিহাস বিকৃতি চিরদিনের জন্য বন্ধ করার লক্ষ্যে আমরা সমগ্র পৃথিবীর আর্কাইভ থেকে তথ্য সংগ্রহের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছি।

 

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘আমি কিছুদিন আগে ইংল্যান্ড গিয়েছিলাম। আমাদের টিম ফ্রান্সেও গিয়েছিল। পৃথিবীর বিভিন্ন আর্কাইভে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা, আমাদের স্বাধিকার আদায়ের আন্দোলন, স্বাধীনতা যুদ্ধ, সেগুলো সংরক্ষিত আছে। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা পৃথিবীর বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ২৬ মার্চ এবং ২৭ মার্চ প্রচারিত হয়। এগুলো পৃথিবীর বিভিন্ন আর্কাইভে সংরক্ষিত আছে। আমরা সেগুলো সংগ্রহ করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। পৃথিবীর অন্যতম সেরা আর্কাইভ ব্রিটিশপাতে, সেখান থেকে এরকম ১৫৬টি ডকুমেন্ট সংগ্রহ করার জন্য আমরা চুক্তিবদ্ধ হয়েছি।

 

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী আরও বলেন, ‘যারা ইতিহাসের বিকৃতি ঘটিয়েছে, তারা জানে না বাংলাদেশে বিকৃতি ঘটালেও সারা পৃথিবীতে সত্য ইতিহাস সংরক্ষিত আছে। সেটা তো বিকৃত করা সম্ভবপর হয়নি। আমরা সেটিই সংগ্রহ করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৬:০৯ | শুক্রবার, ০৫ মে ২০২৩

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

(732 বার পঠিত)
advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com