| বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০১৯ | প্রিন্ট
প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, যেকোনো বড় দুর্যোগ-দুর্বিপাক মোকাবিলায় “জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিল” আছে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে। উনি এই কাউন্সিলের বৈঠক না করেই বিদেশ চলে গেলেন। কোন আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা নেই। উপকূলীয় জেলা পর্যায়ে জরুরি সভা নেই। তিন বাহিনী, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সমূহ, গোয়েন্দা সংস্থা, কোস্টগার্ড, আনসার এদের নিয়ে কোনো সভা করা হয়নি। উদ্ধার কাজে কোনো প্রস্তুতিই গ্রহণ করা হয়নি।
বৃহস্পতিবার (২ মে) দুপুরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই কথা বলেন।
উদ্ধারকর্মী, উদ্ধারযান, খাবার, পানি এসবের কোনো প্রস্তুতিই দেখা যাচ্ছে না। বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে সফলতার সাথে সরকার পরিচালনা করেছে। কিন্তু বিপদ দেখলে পালিয়ে যায়নি। বেগম খালেদা জিয়া ৪ বার প্রধানমন্ত্রীর শপথ নিয়ে দেশসেবা করেছেন। পুরো শাসন পিরিয়ডে জাতীয় দুর্যোগ-দুর্বিপাকে প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তৎপর থাকতেন। মিটিংয়ের পর মিটিং, নির্দেশনা, এমনকি রাতভর সজাগও থেকে উদ্ধারকর্মে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের মনিটরিং করতেন। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া গেলেন চীনে রাষ্ট্রীয় সফরে। এমন সময় খবর পেলেন জেএমবির সিরিজ বোমা হামলার। সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরে আসেন।
তিনি বলেন, দেশ শাসনে কর্তৃত্ববাদী কর্তৃপক্ষ থাকলে জনকল্যাণমূলক কোন কাজ হয় না। জনগণের প্রতি ভোটারবিহীন সরকারের কোন দায়-দায়িত্ব থাকে না। দেশের মানুষ বাঁচলো কি মরলো তাতে স্বৈরাচারী সরকারের কোন যায়-আসে না। দেশের গণতান্ত্রিক পরিকাঠামো ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। তাই দুর্যোগ-দূর্বিপাকে সরকারের অমনযোগিতার কারণে মানুষ দুর্বিষহ অবস্থার মধ্যে পড়ে। জীবন-সহায়-সম্বল নিশ্চিহ্ন হওয়ার উপক্রম হয়। কারণ এ ধরণের সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণে জনগণের অংশগ্রহণ থাকে না। অবৈধ ক্ষমতাসীনরা প্রাকৃতিক দুর্যোগে পতিত হওয়ার সম্ভাবনাকে প্রতিহত করতে আগাম কোন প্রস্তুতি গ্রহণ করে না। লুট ও দখলের প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ বর্তমান সরকারের আমলে চারিদিকে শুধু মৃত্যুরই ছবি। আগুনে পুড়ে, ভবন ধ্বসে, সড়কে-মহাসড়কে বেপরোয়া যানবাহনের চাকায় প্রতিনিয়ত শুধু লাশেরই সারি। নারী ও শিশু নির্যাতনের নারকীয় তাণ্ডবে জাতি বেদনার্ত ও স্তম্ভিত। তাই প্রাকৃতিক দুর্যোগে উপদ্রুত মানুষের জীবনের নিরাপত্তা বিধানে সরকারের ভ্রুক্ষেপহীন থাকাটাই স্বাভাবিক।
রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা নিয়ে সুপার সাইক্লোনে পরিণত হচ্ছে সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’। প্রলয়ঙ্ককারী দুর্যোগের আলামত সুস্পষ্ট হলেও সরকার তা মোকাবিলা করতে কোনো কার্যকর প্রস্তুতি গ্রহণ করেনি। তাই এই মূহুর্তে সকলকে পুর্ণ সতর্ক হতে হবে। বিপর্যয় মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিতে হবে। সমগ্র উপকূল অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, বিমান, তেল রিজার্ভার, বিদ্যুৎকেন্দ্র, ঘুর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র-এসব নিরাপদ করার এখনি সময়।
তিনি বলেন, আমরা ‘ফনীর ন্যায় একটি বড় দুর্যোগ মোকাবিলায় উপকূলীয় এলাকায় বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের আগাম প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। তারা যেন সকলেই উদ্ধারকর্মীর মতো প্রস্তুত থাকে। ঝড় আঘাত হানার পূর্বেই উপকূলীয় অসহায় মানুষকে নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেয়ার জন্য দলের নেতাকর্মীদের আহ্বান জানাচ্ছি। তারা নিজেদের নিরাপত্তাসহ অন্যদের নিরাপত্তা বিধানে সচেষ্ট থাকবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি। আমরা উপকূলীয় এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীসহ উদ্ধারকর্মীদের প্রস্তুত থাকার জন্য দলের পক্ষ থেকে আহ্বান জানাচ্ছি।
Posted ১৫:৪৯ | বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০১৯
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain