ঢাকা, ৭ আগস্ট: কুষ্টিয়ায় রহস্যজনকভাবে খুন হওয়া বিএনপি নেতা ও ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম মজুমদারের শাশুড়িকে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রফিকের শাশুড়ি লিপি আক্তার বলেছেন, নিখোঁজ বিএনপি নেতা চৌধুরী আলম হত্যার সঙ্গে রফিকুল ইসলাম জড়িত ছিলেন। রফিকুলের শাশুড়ির দেয়া এমন তথ্যের পর চৌধুরী আলমের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা নিয়ে নতুন গুঞ্জণ শুরু হয়েছে।
তবে বিএনপি নেতারা মনে করেন, সরকার চৌধুরী আলমের ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে নতুন কৌশল অবলম্বন করছে। যদি রফিকুল ইসলাম সত্যিই চৌধুরী আলম হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকে তবে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি করেছেন তারা।
বুধবার উত্তরায় র্যারের সদরদপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ‘রফিকুল ইসলামের শাশুড়ি লিপি আক্তার জানিয়েছেন রফিক বেঁচে থাকতে তার শাশুড়িকে বলেছেন চৌধুরী আলম হত্যার সঙ্গে সে জড়িত।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান মনে করেন চৌধুরী আলমকে সরকার গুম করেছেন। তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমরা এখনও চৌধুরী আলমের খোঁজের অপেক্ষায় আছি। আর যদি রফিকের শাশুড়ির কথা সত্যি হয় তবে এ ঘটনার তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। যদি চৌধুরী আলমকে হত্যাই করা হয়ে থাকে তবে এ হত্যার সুষ্ঠু বিচারও দাবি করছি।’
তবে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইকবাল হাসান মাহমুদ ঢাকা টাইমসকে বলেন, সরকার চৌধুরী আলমের ঘটনাকে ভিন্নখাতে নিতে নতুন কৌশল বেছে নিয়েছে। সরকারের নির্দেশেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এসব বিষয় জনগণের সামনে আনছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
জানতে চাইলে চৌধুরী আলমের ছেলে আবু সাঈদ হিমু বলেন, ‘তিনবছরের বেশি সময় হল আব্বুর কোনো খোঁজ পাচ্ছি না। তিনবছর নয় তিন যুগ পার হলেও আমরা আব্বুর প্রতীক্ষায় থাকব। আর যদি তাকে সত্যি মেরে ফেলা হয় তবে আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই। তবে আমাদের বিশ্বাস আব্বু এখনও বেঁচে আছেন। তাকে এমন জায়গায় আটকে রাখা হয়েছে যে তিনি আসতে পারছেন না।’
২০১০ সালের ২৫ জুন সন্ধ্যায় ফার্মগেটের ইন্দিরা রোড থেকে অপহরণ করা হয় সাবেক ৫৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর চৌধুরী আলমকে। কিন্তু ওই ঘটনার পর তিনবছরেরও বেশি সময় পার হয়ে গেলেও ব্যবসায়ী চৌধুরী আলমের কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। রাজধানীর একই ওয়ার্ডের বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল ইসলামকে এবছরের ৫ জানুয়ারি কুষ্টিয়ার ঝিনাইদহে শশুড় বাড়ি থেকে র্যাব পরিচয়ে একদল লোক ধরে নিয়ে যায়। পরে ওই রাতেই কুষ্টিয়ার কুমারখালী থানার আদাবাড়ীয়া গ্রামের মাঠে হাতে হ্যান্ডকাপ পরা অবস্থায় রফিকুলের মরদেহ পাওয়া যায়। ওই হত্যায় র্যাবের জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে। পরে র্যাব নিজেরাই এ ঘটনার তদন্ত শুরু করে। র্যাব লিপির ওপর নজরদারি করে ও প্রযুক্তির সাহায্যে জানতে পারে রফিকুল হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তার শাশুড়ি জড়িত। রফিকুলের শাশুড়ি লিপি আক্তারও র্যাবের কাছে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে দাবি করেছে র্যাব।
For News : news@shadindesh.com
Like this:
Like Loading...
Related