শনিবার ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

আসুন একসঙ্গে তরী ভাসাই, শেখ হাসিনা

  |   মঙ্গলবার, ০৭ মার্চ ২০১৭ | প্রিন্ট

আসুন একসঙ্গে তরী ভাসাই, শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ ভারত মহাসাগরের জন্য সামুদ্রিক সহযোগিতা জোরদার করে নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করতে ভারত মহাসাগর রিম অ্যাসোসিয়েশন (আইওআরএ) নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি এ অঞ্চলের জন্য দক্ষ নাবিক তৈরিতে বাংলাদেশে ভারত মহাসাগর কারিগরি ও বৃত্তিমূলক একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনেরও প্রস্তাব করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অভীষ্ট লক্ষ্য হচ্ছে মহাসাগর ও সমুদ্রপথ উন্নয়নের মাধ্যমে রিম দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশকে রূপান্তরের প্রচেষ্টা চালানো। আসুন সামুদ্রিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করে শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল এবং সমৃদ্ধ ভারত মহাসাগরের জন্য নিজেদেরকে উৎসর্গ করি। আসুন একসঙ্গে তরী ভাসাই।’

মঙ্গলবার ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় ভারত মহাসাগর রিম অ্যাসোসিয়েশন সামিটে ‘একটি শান্তিপূর্ণ স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধ ভারত মহাসাগরের জন্য রিম সামুদ্রিক সহযোগিতা জোরদারকরণ’ শীর্ষক সাধারণ বিতর্ক অধিবেশনে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। খবর বাসসের।

শেখ হাসিনা আইওআরএ নেতাদের প্রতি সমুদ্রগামী নাবিকদের নিরাপত্তা এবং পেশাগত অধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, তাদের দক্ষতা এবং নিবেদিত কার্যপ্রণালী কখনো কখনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরীক্ষার সম্মুখীন হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী এ অঞ্চলের জন্য দক্ষ নাবিক পুল তৈরিতে বাংলাদেশে ভারত মহাসাগর করিগরি ও বৃত্তিমূলক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেন।

বাংলাদেশকে বঙ্গোপসাগর এবং ভারত মহাসাগরের উপকূলবর্তী দেশ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে এর সমুদ্রসম্পদ টেকসইভাবে ব্যবহারের ওপরই ভবিষ্যতের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, খাদ্য নিরাপত্তা এবং সামাজিক কল্যাণ নিহিত রয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এজন্য আমরা এসডিজি-১৪কে আমাদের ৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় সম্পৃক্ত করেছি এবং সমুদ্র অর্থনীতির দিকে আমাদের মনসংযোগকে নবায়ন করেছি।’

প্রধানমন্ত্রী এ সময় সমুদ্রসীমানা নিয়ে পাশ্ববর্তী দেশের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ বিরোধ মীমাংসা আমাদের অর্থনৈতিক সম্ভবনার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে বলেও উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যদিও আমরা এ বিষয়টিতে সম্পূর্ণভাবেই অবগত যে, সমুদ্র এলাকার সম্পদ আহরণের সামর্থে্যর ওপরই আমাদের এই সাফল্য নির্ভর করছে।’

‘ভারত মহাসাগর রিম অ্যাসোসিয়েশন এবং সদস্যভুক্ত দেশগুলোকে আমরা আমাদের আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবে রূপ দেয়ার প্রকল্পের জন্য একটি প্রাকৃতিক বাসস্থান হিসেবেই আমরা দেখছি,’ উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

ভারত মহাসাগরকে আমাদের নিরাপত্তা, যোগাযোগ, শান্তি এবং সমৃদ্ধির জন্য অন্যতম মাধ্যম হিসেবে আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটা বিশ্বায়নের এই যুগে একটি লাইফলাইন যার মাধ্যমে বিশ্বের প্রায় অর্ধেক কনটেইনার জাহাজ, তিনভাগের একভাগ বাল্ক কার্গো এবং তিনভাগের দুইভাগ তেলের চালান পরিবাহিত হয়।

এর আগে সকালে আইওআরএ’র ২০তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত লিডারস সামিটে যোগ দেন শেখ হাসিনা। শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধ ভারত মহাসাগরের জন্য মেরিটাইম সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্য নিয়ে এই সম্মেলন শুরু হচ্ছে। ভারত মহাসাগরের তীরবর্তী ২১টি দেশ নিয়ে গঠিত আন্তর্জাতিক এই জোটের শীর্ষ নেতারা সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন।

ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো মঙ্গলবার সকালে জাকার্তা কনভেনশন সেন্টারে ‘লিডারস সামিটের’ উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

লিডারস সামিটে যোগ দিতে তিন দিনের সফরে সোমবার জাকার্তায় পৌঁছান শেখ হাসিনা। মধ্য জাকার্তার সাংরি-লা হোটেল থেকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সকালে সম্মেলন কেন্দ্রে পৌঁছালে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট তাকে স্বাগত জানান।

পরে জোটভুক্ত দেশগুলোর নেতারা একসঙ্গে দাঁড়িয়ে ফটোসেশনে অংশ নেন। জোকো উইদোদোর উদ্বোধন ঘোষণার পর অনুষ্ঠানে ঢোল বাদ্যের সহযোগে ইন্দোনেশিয়ার ঐতিহ্যবাহী নৃত্য পরিবেশন করা হয়।

ভারত, বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া, কমোরস, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, কেনিয়া, মাদাগাস্কার, মালয়েশিয়া, মরিশাস, মোজাম্বিক, ওমান, সেসলস, সিঙ্গাপুর, সোমালিয়া, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, তানজানিয়া, সংযুক্ত আরবআমিরাত, ইয়েমেন ও দক্ষিণ আফ্রিকা আইওআর-এর সদস্য। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, জাপান ও মিশর এই জোটের ডায়লগ পার্টনার।

ওমানের সুলতান ও ইন্দোনিয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট ছাড়াও সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন দক্ষিণ আফ্রিকা, ইয়েমেন, শ্রীলঙ্কা, তানজানিয়া, সোমালিয়া, মাদাগাস্কার ও মোজাম্বিকের প্রেসিডেন্ট।

সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠান ও সংবাদ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনদিনের সফর শেষে বুধবার শেখ হাসিনা জাকার্তার হালিম পারদনা কুসুমা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সকালে রওয়ানা হয়ে অপরাহ্নে ঢাকায় পৌছবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন। এফবিসিসিআই সভাপতি আবদুল মতলুব আহমেদের নেতৃত্বে ৬০ সদস্যের একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলও এই সফরে গেছেন।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ০৯:৩৭ | মঙ্গলবার, ০৭ মার্চ ২০১৭

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com