সীমান্তে বাংলাদেশী নির্যাতন নিয়ে সরকারের অবস্থানের সমালোচনা করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগের পদলেহী ও নতজানু অবস্থানকে ধিক্কার দেই। সৈয়দ আশরাফ সীমান্ত হত্যাকে স্বাভাবিক বলেছেন। তাকে ধিক্কার দেই। আওয়ামী লীগকে ধিক্কার দেই। গতকাল বিকালে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপি এ আলোচনার আয়োজন করে।
এদিকে অন্য এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘সীমান্তে হত্যা একটি স্বাভাবিক ঘটনা। এটা আগেও হয়েছে, এখনও হচ্ছে, ভবিষ্যতেও হবে। রাষ্ট্র এতে উদ্বিগ্ন নয়।’
জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকীর আলোচনায় মির্জা ফখরুল ইসলাম ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, আমার ভাইকে সীমান্তে নির্মম নির্যাতন করা হচ্ছে, আমাদের বোন ফেলানীকে কীভাবে হত্যা করা হলো, আজও (শনিবার) এক বাংলাদেশীকে হত্যা করা হয়েছে। একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশের নাগরিককে হত্যা কেউ মেনে নিতে পারে না। এরপরও আওয়ামী লীগ নাগরিকদের বিরুদ্ধে কথা বলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যারা জনগণের অধিকার নিয়ে ন্যূনতম প্রতিবাদ করতে পারে না তাদের রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকার কোনো অধিকার নেই।
মির্জা আলমগীর বলেন, একদলীয় শাসন নিশ্চিত করতে বর্তমান সরকার বিভিন্ন ‘কল্পকাহিনী’ তৈরি করছে। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। তারা ’৭৪ সালে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করে দেশে একদলীয় শাসন কায়েম করেছিল। এবার ভিন্ন লেবাসে তারা একই কাজ করছে। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার জন্য আজ তারা বিভিন্ন কল্পকাহিনী এবং ঘটনার সৃষ্টি করছে। আমাদের এ ব্যপারে সতর্ক থাকতে হবে। দেশের ‘স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র’ রক্ষায় খালেদা জিয়ার ‘লড়াইয়ের ডাকে’ সাড়া দিয়ে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে ভারতকে সুবিধা দিচ্ছে—এমন অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ভারতকে সরকার করিডোর দিয়ে দিয়েছে। বন্দর সুবিধাও দিয়েছে। আমাদের নদ-নদীর উজানে তারা (ভারত) বাঁধ নির্মাণ করছে। সীমান্তে প্রতিনিয়ত হত্যাকাণ্ড হচ্ছে। কিন্তু কোনো কিছুর বিষয়ে সরকার প্রতিবাদ করছে না।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে আলোচনায় আরও অংশ নেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. এম এ মাজেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ, দৈনিক আমার দেশ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক প্রকৌশলী মাহমুদুর রহমান, সাবেক সচিব আসাফউদ্দৌলাহ, অর্থনীতিবিদ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. খন্দকার মোস্তাহিদুর রহমান। সভা পরিচালনা করেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক জয়নুল আবদিন ফারুক। বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
For News : news@shadindesh.com
Like this:
Like Loading...
Related