মস্কো: রাশিয়া মঙ্গলবার ইউক্রেনকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছে যে, তারা দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলে সামরিক প্রস্তুতি বন্ধ না করলে সেখানে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়ে যেতে পারে।
মস্কো অভিযোগ করছে, ইউক্রেন সেখানে যে সৈন্য পাঠানোর পরিকল্পনা করছে, তাদের মধ্যে অনেক মার্কিন বেসরকারি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজনও আছে।
এদিকে ইউক্রেন জানিয়েছে, খারকিভে আঞ্চলিক সরকারি দফতর দখল করে নেয়া মস্কোপন্থীদের অন্তত ৭০ জনকে তারা গ্রেফতার করেছে।
অন্যদিকে নেটোর মহাসচিব হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, রাশিয়া যদি ইউক্রেনে আর কোনো হস্তক্ষেপ করে, সেটা হবে এক ঐতিহাসিক ভুল এবং এর পরিণতি হবে ভয়ানক।
পর্যবেক্ষকদের আশঙ্কা মতোই ইউক্রেনের জাতিগত রুশ অধ্যুষিত এলাকাগুলো নিয়ে উত্তেজনা বিপজ্জনক মোড় নিচ্ছে।
সোমবার পূর্ব ইউক্রেনের খারকিভ, দনিয়েৎস্ক এবং লুহান্স্ক শহরে বহু সরকারি ভবন রুশপন্থী লোকজন দখল করে নেয়। এবং দাবি করতে থাকে রাশিয়ার সাথে যুক্ত হওয়ার দাবিতে ক্রাইমিয়ার মত গণভোট দিতে হবে।
দনিয়েৎস্ক শহরে রুশপন্থীরা আঞ্চলিক সার্বভৌমত্ব ঘোষণা করে ১১ মে গণভোটে দাবি করেছে।
তবে মঙ্গলবার ইউক্রেনের সরকার জানিয়েছে, খারকিভের আঞ্চলিক সরকারের ভবনটি রুশপন্থীদের নিয়ন্ত্রণমুক্ত করা হয়েছে। প্রায় ৭০ জনকে আটক করা হয়েছে। অন্য দুটো শহরেও একই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে সরকার বলছে। তবে তারপরই শুরু হয়েছে হুমকি পাল্টা হুমকি।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এক বিবৃতিতে ইউক্রেনের সরকারকে সাবধান করেছে রুশ অধ্যুষিত এলাকায় কোন ধরনের সামরিক তৎপরতা যেন তারা না চালায়। যদি তা হয়, তাহলে গৃহযুদ্ধ বেঁধে যাবে।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাবরভ বলেন, “রাশিয়া দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে কিয়েভের সরকার যতোদিন দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের মানুষজনের স্বার্থকে উপেক্ষা করতে থাকবে ততোদিন এই অস্থিরতা প্রশমিত হবে না।”
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরো দাবি করেছে, ইউক্রেনের সরকার মার্কিন একটি বেসরকারি নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানের লোকজনকে ইউক্রেনের নিরাপত্তা বাহিনীর পোশাক পরিয়ে পূর্বাঞ্চলের শহরগুলোতে মোতায়েন করছে।
রাশিয়ার এই হুমকি ধামকির জবাবে, ন্যাটো সামরিক জোটের মহাসচিব আ্যান্ডারস ফো রাসমুসেন হুশিয়ার করেছেন, মস্কো যদি ইউক্রেনে আবারো সরাসরি হস্তক্ষেপ করে, তাহলে সেটা হবে একটি ঐতিহাসিক ভুল। প্যারিসে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সেরকম কোনো পদক্ষেপের পরিণতি হবে ভয়াবহ।
“ইউক্রেনে রাশিয়ার অবৈধ হস্তক্ষেপ এক প্রজন্মে ইউরোপের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে।” বলেন তিনি।
তিনি বলেন, পূর্ব ইউক্রেনে অস্থিরতা না ছড়াতে আমি রাশিয়াকে অনুরোধ করছি।
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে এক গণবিক্ষোভের পর রুশপন্থী প্রেসিডেন্টের পতনের পর থেকে পূর্ব এবং দক্ষিণ সীমান্তে রাশিয়া হাজার হাজার সৈন্য মোতায়েন করেছে।– বিবিসি।
Like this:
Like Loading...
Related