| শুক্রবার, ২০ জুন ২০১৪ | প্রিন্ট
চট্টগ্রাম: বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত লাগাতার ভারী বর্ষণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে নগরবাসীর দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। কোথাও কোমর, কোথাও হাঁটু পানিতে তলিয়ে গেছে বাসা বাড়ি। পানি ঢুকে মালামাল নষ্ট হয়েছে অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের। প্রতি বছর পাহাড় ও ভূমিধসে মৃত্যু ও সম্পদহানির মতো ঘটনা এ পর্যন্ত না ঘটলেও নগরীতে দুই জায়গায় পাহাড় ধসে পড়েছে। এতে অবশ্য কেউ হতাহত হননি। তবে দেয়াল ধসে আহত হয়েছেন দুইজন। নগরীর বেশ কয়েকটি এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
গতরাত থেকে কখনো ভারী কখনো হালকা বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় নগরজুড়ে ব্যাপক জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে মহানগরীর বহদ্দার হাট, মুরাদপুর, শুলকবহর, পাথারঘাটা, ষোলশহর ২ নম্বর গেট এলাকা, চান্দঁগাও আবাসিক, বাদুরতলা, চকবাজার, বাকলিয়া, চাক্তাই, আসাদগঞ্জ, বিবিরহাট, আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক, হালিশহর, ছোটপোল, বড়পোল এলাকায় বৃষ্টির পানিতে রাস্তা ডুবে যায়। এসব এলাকার কোথাও হাঁটু পরিমাণ কোথাও কোমর সমান পানিতে তলিয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার মধরাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত আগ্রবাদ এক্সেস রোড়ের ছোটপোল, বড়পোল, হালিশহর, মুরাদপুর, বিবিরহাট এবং চকবাজার এলাকায় যানচলাচল বন্ধ থাকে। এতে এসব জায়গায় বসবাসকারীদের দুর্ভোগের মাত্রা কয়েকগুণ বেড়ে যায়।
শুক্রবার ভোররাতে নগরীর লালখান বাজার ও টাইগার পাস এলাকায় বাটালী হিলের বেশ বড় একটি অংশ গাছ-গাছালিসহ ধসে পড়ে। এতে কেউ হতাহত হননি। তবে ভেঙে যায় সড়ক রেলিং ও মাটিতে ভরাট হয়ে যায় এলাকার নর্দমা।
শুক্রবার ভোরে নগরীর কোতোয়ালী থানাধীন চেরাগী পাহাড় এলাকায় দয়াময়ী কলোনির একটি দেয়াল ধসে পড়লে সুমন নামে এক যুবক ও তার মা আহত হন।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্মকর্তারা জানান, অব্যাহত বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ার কারণে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরে পণ্য উঠানামা বিশেষ করে বহিঃনোঙরে অবস্থানরত জাহাজের পণ্য খালাস কাজ ব্যাহত হয়েছে।
নগরীর অধিকাংশ খাল, নালা নর্দমা ভরাট ও বেদখল হয়ে যাওয়ার কারণে অতিবৃষ্টিতে দ্রুত পানি নিষ্কাষণে বিঘ্ন ঘটায় জলাবদ্ধতা এখন নগরবাসীর নিত্য দুর্ভোগের প্রধান কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন কার্যকর কোনো পদক্ষেপই নিতে পারেনি বলে নাগরিক সমাজ থেকে বার বার অভিযোগ করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মনজুর আলম এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলছেন, সিটি করপোরেশন সীমিত ক্ষমতা নিয়ে জলাবদ্ধতা নিরসনে পদক্ষেপ গ্রহণ করে আসছে। তবে, নতুন খাল খনন, পুরোনো খাল সংস্কার, বেদখল মুক্ত করতে করপোরেশন কর্তৃক নেয়া প্রকল্পগুলো মন্ত্রণালযের পক্ষ থেকে সময়মত অনুমোদন প্রদান ও প্রয়োজনীয় বরাদ্দ প্রদানে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে জলাবদ্ধতা দূরীকরণে স্থায়ী ও কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি জলাবদ্ধতাকে ‘সাময়িক জলজট” হিসেবে অভিহিত করে বলছেন, করপোরেশনের নেয়া নানা পদক্ষেপের কারণে দ্রুত সরে যাচ্ছে পানি, ক্ষয়-ক্ষতি এখন আগের তুলনায় অনেক কম ও সাময়িক। সচেতনতামূলক কর্মসুচি ও পাহাড়ের তলদেশে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে পুনর্বাসনের পদক্ষেপ গ্রহণের কারণে পাহাড় ধসের ঘটনাও কমে আসছে।
প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালের জুনে চট্টগ্রাম অঞ্চলে ব্যাপক পাহাড় ও ভূমি ধসের কারণে ১২৭ জনের প্রাণহানি ঘটে, আহত হয় আরো শতাধিক।
Posted ১০:০৬ | শুক্রবার, ২০ জুন ২০১৪
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin