এম এম হারুন আল রশীদ হীরা, নওগাঁ : নওগাঁর মহাদেবপুরের মহিনগর দিঘীপাড়া গ্রামে ১১ এপ্রিল গ্রামের রাস্তা দিয়ে মসজিদের ছাঁদ ঢালাই কাজে বালি নিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় আবদুল আজিজ (৫৫) নামে আরো একজন মুসল্লীর মৃত্যু হয়েছে। নিহত আবদুল আজিজের মস্তিকে রক্ত জমাট বাঁধা থাকা জটিলতার জন্য ঘটনার পর থেকেই রাজশাহীতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। চিকিৎসারত অবস্থায় তিনি গত শুক্রবার রাত আনুমানিক ১১টায় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। এর আগে ১২ এপ্রিল একই ঘটনায় মাহমুদ আলী (৭৫) নামে এক মুসল্লী নিহত হন। নিহতরা একে অপরের চাচা-ভাতিজা বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মহাদেবপুর থানা পুলিশ ১২ এপ্রিল রাতেই রাজশাহী হতে একই গ্রামের মৃত আবজাল হোসেনের ৪ পুত্র বেলাল, মামুন, রেজাউল ও হেলালকে আটক করে জেল হাজতে পাঠান । এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে এবং এলাকাবাসী দোষীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবী করেছেন।
উল্লেখ্য, মহিনগর দিঘী পাড়া গ্রামে মসজিদের ছাঁদ ঢালাই এর কাজের জন্য ট্রলি যোগে বালি নিয়ে যাবার সময় গত ১১ এপ্রিল সোমবার দুপুর আনুমানিক ১টা ৪৫মিনিটে নিজেদের জমির উপর দেয়া বেড়ার পাশ দিয়ে বালি না নিয়ে যাওয়ার জন্য মৃত আবজাল হোসেনের ৪ ছেলে বেলাল, মামুন, রেজাউল ও হেলাল বাঁধা প্রদান করেন। যোহরের নামাজ শেষে মসজিদ থেকে বের হয়ে মুসল্লী আবদুল আজিজ ও মাহমুদ আলী এর প্রতিবাদ করলে ৪ভাই এর সাথে তাদের কথা কাটাকাটি শুরু হয়।
একপর্যায়ে তা হাতাহাতিতে রুপ নেয়। মারামারির একপর্যায়ে বেলাল হোসেন আবদুল আজিজের মাথায় এবং মামুন হোসেন মাহমুদ আলীর মাথায় কোদাল ও সুড়কি দিয়ে আঘাত করেন। আঘাতের ফলে আবদুল আজিজ ও মাহবুদ আলী মারাত্বক জখম হয় এবং মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে এলাকাবাসী তাদের উদ্ধার করে প্রথমে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। কিন্তু সেখানে আইসিইউ ফাঁকা না থাকায় চিকিৎসকদের পরামর্শে উভয়কেই রাজশাহী পপুলার ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে ভর্তি করে আইসিইউতে রাখা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১২ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেল ২.৩০ মিনিটে মাহমুদ আলী মারা যান।
এদিকে মাথায় রক্ত জমাট বেঁধে থাকায় আবদুল আজিজের অবস্থাও আশংকাজনক হওয়ায় ১২ এপ্রিল রাতেই পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার তার অস্ত্রোপাচার করা হয় এবং সেখান থেকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আবদুল আজিজ ১৫ এপ্রিল শুক্রবার রাত আনুমানিক ১১টায় মারা যান। শনিবার বাদ আছর মরহুমের নামাজের জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়েছে। এ ঘটনায় মরহুমের পরিবারে শোকের মাতম বিরাজ করছে। দোষীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবীতে এলাকাবাসী সংশ্লিষ্টদের প্রতি জোর দাবী জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে মহাদেবপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজম উদ্দিন মাহমুদ জানান, রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেই লাশের ময়নাতদন্ত করে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। মামলার ৪জন এজাহারভুক্ত আসামীকে আটক করে জেলা হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
Like this:
Like Loading...
Related