বৃহস্পতিবার ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বান্দরবানে জি কে শামীমের আরেক সম্পদের পাহাড় সন্ধান

  |   বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | প্রিন্ট

বান্দরবানে জি কে শামীমের আরেক সম্পদের পাহাড় সন্ধান

যুবলীগের নেতা পরিচয় দিয়ে ঠিকাদারি চালিয়ে আসা গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীম, নামে বেনামে বিভিন্ন কম্পানি গঠন করে সম্পদের পাহাড় বানিয়েছে। বান্দরবান সদরের মৌজায় প্রায় ৬০ একর জমি কেনা হয়েছে সিলভান ওয়াই রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা লিমিটেডের নামে।

এই সিলভান ওয়াই রিসোর্ট অ্যান্ড স্পার পরিচালকদের একজন ঢাকায় গ্রেপ্তার হওয়া টেন্ডার মাফিয়া যুবলীগ নেতা গোলাম কিবরিয়া শামীম (জি কে শামীম)। অগাধ বিত্ত-বৈভব আর প্রভাবশালী এই যুবলীগ নেতার আয়ের টাকা বিনিয়োগ হয়েছে পার্বত্য জেলা বান্দরবানেও।

কম্পানির রেজল্যুশন কপির তথ্য অনুযায়ী, সিলভান ওয়াই রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা লিমিটেড নামে বান্দরবান সদরে এই কম্পানির কোনো অফিস নেই। ২০১৮ সালের ৫ এপ্রিল সিলভান ওয়াই রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা লিমিটেডের একটি বোর্ড মিটিং বান্দরবান সদরের ৩১৩ নম্বর রেজি. অফিসে অনুষ্ঠিত হয়। এ কারণেই মূলত বান্দরবান সদরের ৩১৩ নম্বর মৌজা এলাকায় রেজি. অফিস ঠিকানা দেওয়া হয়েছে।

জি কে শামীম এখানেও কায়েম করেছেন তাঁর দখলদারি। সাইঙ্গ্যা মারমা পাড়া, হাতিভাঙা ত্রিপুরা পাড়া ও লাইমী (বম) পাড়ার বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই সিলভান ওয়াই রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা লিমিটেড এখানে কমপক্ষে ১০০ একর জমি জবরদখল করেছে। নানাভাবে নাজেহাল করা হচ্ছে স্থানীয় লোকজনকে। পাশাপাশি প্রশাসনকে নিজের স্বার্থসিদ্ধির কাজে লাগাতে পুলিশ ফাঁড়ির জন্য জমি দান করে সেখানে পাকা ভবনও করে দেওয়া হচ্ছে। দ্বিতল ভবনটি নির্মাণের কাজ এখন অনেকটাই এগিয়ে গেছে। শিগগিরই এই ভবনে পুলিশ ফাঁড়ি স্থানান্তরিত হওয়ার কথা রয়েছে বলে জেনেছে স্থানীয় লোকজন।

রেজল্যুশনের তথ্য অনুযায়ী, ওই দিন কম্পানির চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন মন্টুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় কম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলুল করিম চৌধুরী স্বপন, পরিচালক গোলাম কিবরিয়া (জি কে) শামীম, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক জামিল উদ্দিন শুভ, অপর চার পরিচালক যথাক্রমে এস এইচ এম মহসিন, উম্মে হাবিবা নাসিমা আক্তার, জিয়া উদ্দিন আবির ও জাওয়াদ উদ্দিন আবরার উপস্থিত ছিলেন।

সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সিলভান ওয়াই রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা লিমিটেডের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন মন্টুকে বান্দরবান সদরের ৩১৩ মৌজার ৮০৭ নম্বর হোল্ডিংয়ের ০.১৮৩৭ একর (প্রায় সাড়ে ১৮ শতক) তৃতীয় শ্রেণির জমি বিক্রি সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম সম্পাদনে ক্ষমতা প্রদান করা হয়।

পরে এই সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, জেলা পুলিশ সুপার বরাবরে জমি রেজিস্ট্রি করে দেওয়া হয়। কিন্তু বাস্তবে ওই জমি দান করা হয়েছে বলে জানা গেছে। আবার বোর্ডসভায় ‘পুলিশ সুপার, বান্দরবান পার্বত্য জেলা’কে জমি হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত হলেও বাস্তবে রেজিস্ট্রিকৃত দলিলে ‘মোহাম্মদ জাকির হোসেন মজুমদার, পুলিশ সুপার, বান্দরবান পার্বত্য জেলা’ বরাবরে রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ক্ষেত্রে ‘পুলিশ সুপার’ পদের বিপরীতে রেজিস্ট্রেশন না করে ব্যক্তি ‘মোহাম্মদ জাকির হোসেন মজুমদার’ লেখা হয়েছে।

আবার এই কম্পানির বোর্ডসভায় জমি বিক্রির সিদ্ধান্ত হলেও ‘দান’ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি এবং সেই জমিতে পুলিশ ফাঁড়ির জন্য ভবন নির্মাণ করে দেওয়ার কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে জমি দানের পর কম্পানির টাকায় ভবন নির্মাণ করে দেওয়া হচ্ছে বলে বান্দরবান জেলা পুলিশের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, জি কে শামীম সিন্ডিকেটের প্রতিষ্ঠানটি শুরুতে ৬০ একর জমি কেনার কথা প্রচার করে। কিন্তু এখন কম্পানির দখলে আছে প্রায় ১০০ একর জমি। বর্তমানে সেখানে প্রতি একর জমির গড় মূল্য প্রায় পাঁচ লাখ টাকা। সেই হিসাবে বাড়তি ৪০ একর জমি দখল করে প্রায় দুই কোটি টাকার জমির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে কম্পানি। তারা আরো দখলপ্রক্রিয়া চালাচ্ছে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১২:৩২ | বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com