সোমবার ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পিন্টুর আইনজীবীর দাবি জজ মিয়াই সত্য, আর সব বানোয়াট!

  |   বুধবার, ০১ আগস্ট ২০১৮ | প্রিন্ট

পিন্টুর আইনজীবীর দাবি জজ মিয়াই সত্য, আর সব বানোয়াট!

‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় প্রকৃত তথ্য উদ্ঘাটিত হয়েছিল। কিন্তু তা ধামাচাপা দিয়ে মামলা অন্য খাতে প্রবাহিত করা হয়। জজ মিয়া, রানা, শফিকুল—এরাই ছিল প্রকৃত অপরাধী। তাদের মামলার মূল ধারায় না এনে বানোয়াট সাক্ষ্যের ভিত্তিতে আবদুস সালাম পিন্টুসহ অনেককে আসামি করা হয়েছে।’

গতকাল মঙ্গলবার আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনকালে এই দাবি করেছেন পিন্টুর আইনজীবী রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘জজ মিয়াদের সহযোগী হয়ে থাকতে পারেন কারারক্ষী সোহেল মণ্ডলও, যাঁর ট্রাঙ্কে ১৩ লাখ টাকা এবং বিছানার পাশে একটি আর্জেস গ্রেনেড পাওয়া গিয়েছিল। তাঁকে এই মামলায় অন্তর্ভুক্ত না করে পালানোর সুযোগ দেওয়া রহস্যজনক।’

রফিকুল ইসলামের উপস্থাপনা শেষে আদালতের নির্দেশে পিন্টু নিজে গতকাল তাঁর বক্তব্য শুরু করেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘মামলার সুষ্ঠু ও যথাযথ তদন্ত হয়নি। ঘটনা রহস্যাবৃতই রয়ে গেছে। প্রকৃত অপরাধীদের বাঁচাতে মামলা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করা হয়েছে।’ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী আজ বুধবারও পিন্টু আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য দেবেন।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্যাহর সাক্ষ্য উদ্ধৃত করে আইনজীবী রফিকুল ইসলাম বলেন, কাজী সাহেব ঘটনার একজন প্রত্যক্ষদর্শী। তিনি একই স্থান থেকে দুজনকে গ্রেনেড ছুড়তে দেখেছেন। তাঁদের চেহারারও বর্ণনা দিয়েছেন। পরে জেরার জবাবে বলেছেন, ওই দুজনকে দেখলে তিনি চিনতে পারবেন।

আইনজীবী বলেন, কাজী সাহেব যে স্থান থেকে যেভাবে দুজনকে গ্রেনেড ছুড়তে দেখার বর্ণনা দিয়েছেন, তার সঙ্গে হুবহু মিল পাওয়া যায় জজ মিয়া, রানা ও শফিকুলের ১৬৪ ধারায় দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির। এই মিলের বিষয়টি পর্যালোচনা করে যদি কাজী জাফর উল্যাহর সামনে জজ মিয়া, রানা ও শফিকুলকে উপস্থিত করা হতো, তাহলে হয়তো রহস্যের অনেকটাই উন্মোচিত হতে পারত।

সাবেক উপমন্ত্রী পিন্টুর বিরুদ্ধে অন্তত ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য উদ্ধৃত ও পর্যালোচনা করে রফিকুল ইসলাম আদালতে বলেন, এসব সাক্ষ্য যে বানানো হয়েছে, তা স্পষ্ট। প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা পরিদপ্তর (ডিজিএফআই), র‌্যাব ও পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও সিপাহি সবাই একই রকম শিখিয়ে দেওয়া সাক্ষ্য দিয়েছেন।

আইনজীবী বলেন, ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার পেছনে কলকাঠি নেড়েছেন ডিজিএফআইয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা। তাঁদের ইন্ধনে অথবা চাপে বানোয়াট সাক্ষ্য সৃজন করেছেন মামলার দুই তদন্ত কর্মকর্তা—ফজলুল কবির এবং আবদুল কাহার আকন্দ।

আইনজীবী আরও বলেন, পিন্টুর বিরুদ্ধে কোনো তথ্য-প্রমাণ ছিল না। সাক্ষীরা সবাই তাঁর সম্পর্কে শোনা কথা বলেছেন। যেমন, মেজর আতিকুর রহমান তাঁর সাক্ষ্যে বলেছেন, তিনি ২০০৬ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কানাডায় ছিলেন। সেখান থেকে দেশে এসে শুনেছেন যে মুফতি হান্নান স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে পিন্টুকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত করেছেন। কিন্তু তিনি কার কাছে শুনলেন, কবে শুনলেন তার কোনো উল্লেখ নেই। তা ছাড়া তিনি যত দিন কানাডায় ছিলেন, তার মধ্যে মুফতি হান্নানকে রিমান্ডে নেওয়া হয়নি বা মুফতি হান্নান ওই সময়ে কোনো জবানবন্দিও দেননি। এতে বোঝা যায়, এই সাক্ষীর সাক্ষ্যে সত্যের লেশমাত্র নেই। র‍্যাবের তৎকালীন মহাপরিচালক মো. আবদুল আজিজ সরকারও এভাবে শোনা কথা তাঁর সাক্ষ্যে উল্লেখ করেছেন। এমনকি রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, সাহারা খাতুন—এঁরা পিন্টু সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ করেননি।

ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারকমো. শাহেদ নূর উদ্দিন এই মামলার বিচারকার্য পরিচালনা করছেন। প্রথম আলো

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৪:২৩ | বুধবার, ০১ আগস্ট ২০১৮

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com