রাজশাহী, ২১ জুন: প্রধানমন্ত্রী শেখা হাসিনার বিশেষ দূত, জাতীয় পার্টির চেয়্যারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘দেশে আইন বলতে কিছুই নেই। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হলে জাতীয় পার্টির বিকল্প আর কিছুই নেই। একমাত্র জাতীয় পার্টিই পারে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে।’

শনিবার দুপুরে রাজশাহী জেলা জাতীয় পার্টির (জাপা) সম্মেলনে সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ একথা বলেন।

বিএনপির সমালোচনা করে এসময় জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিএনপি’র সাংগঠনিক অবস্থা দুর্বল হয়ে গেছে। আন্দোলন করে সরকার পতন ঘটাতে পারবে এমন অবস্থানে তারা নেই।’ এরশাদ আরো বলেন, ‘দেশে এতো কিছু হচ্ছে কিন্তু কোথাও বিএনপির কোনো মিছিল-মিটিং বা আন্দোলন করতে দেখা যাচ্ছে না। আসলে দলটি দুর্বল হয়ে পড়েছে।’

জাপা নেতাকর্মীদের পরামর্শ দিয়ে এরশাদ বলেন, ‘নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব মিটিয়ে ফেলুন। জনগণের কাছে যান। জনগণ আবার ভোট দিয়ে জাতীয় পার্টিকে বিজয়ী করবে।’

সরকারি দল সম্পর্কে এরশাদ আরো বলেন, ‘সরকারি দলের জনপ্রিয়তা তলানিতে ঠেকেছে। অন্যদিকে বিএনপি তাদের শক্তি হারিয়েছে। এ দুই দলের বিকল্প মানুষ খুঁজছে। আর সেই দল হচ্ছে জাতীয় পার্টি। মানুষ গুম, হত্যা, খুন, হরতাল, ফরমালিন চায় না। মানুষ শান্তি চায়। আর তা পেতে হলে জাতীয় পার্টির বিকল্প কিছু নেই।’

সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- পানি সম্পদমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়া উদ্দিন বাবলু, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভুঁইয়া, জাতীয় যুবসংহতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি হেলাল উদ্দিন হেলাল, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবু সাইদ স্বপন প্রমুখ। এতে ৫৯০ জন কাউন্সিলর ও ৫ হাজার ডেলিগেট  অংশ নেন।

জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাবুদ্দিন বাচ্চু জানান, এরই মধ্যে জাতীয় পার্টির জেলার ৯টি উপজেলার মধ্যে আটটি এবং ১৩টি পৌরসভার মধ্যে ১০টি কমিটির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া নির্বাচনের মাধ্যমে ৭২টি ইউনিয়নসহ ৫১৩ টি ওয়ার্ড কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর আগে ২০১১ সালের অক্টোবরে জেলা জাতীয় পার্টির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

২০১২ সালে কমিটি অনুমোদন পায়। সারা দেশের মধ্যে প্রথমে রাজশাহী জেলা জাতীয় পার্টির সম্মেলন শুরু হয়। এবারো রাজশাহী থেকে জাতীয় পার্টির জেলা পর্যায়ের সম্মেলন শুরু হতে যাচ্ছে। শনিবারের ওই সম্মেলন সফল করতে চলতি মাসের শুরু থেকেই জেলা জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। এরই মধ্যে সম্মেলন আয়োজনের সকল প্রস্তুতি সম্পূর্ণ হয়েছে উল্লেখ করে সম্মেলন সফল করতে সকলের সহযোগীতা চান তিনি।

এদিকে, জাতীয় পার্টির এ সম্মেলকে কেন্দ্র করে রাজশাহীজুড়ে ব্যানার-ফেস্টুন, লিফলেট ও পোস্টার সাটানো হয়েছে। এ সম্মেলন ঘিরে পুরোদমে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে জেলা জাতীয় পার্টি। নেতা-কর্মীদের মধ্যে ফিরে এসেছে প্রাণচাঞ্চল্য। এতে জাতীয় পার্টির স্থানীয় রাজনীতিতে তৈরি হয়েছে ভিন্ন মাত্রা।

উল্লেখ্য, প্রথম ধাপে ১২টি জেলায় জাতীয় পার্টির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এরমধ্যে রাজশাহী জেলার সম্মেলনই প্রথম। এর আগে গেলবারও রাজশাহী থেকে দলটির জেলা সম্মেলন শুরু হয়।