| বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০১৪ | প্রিন্ট
ঢাকা, ২৭ মার্চ : বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান প্রসঙ্গে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেয়া বক্তব্যের তীর্যক সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে যারা মিথ্যাচার করছে তারাই প্রথম রাষ্ট্রপতি নিয়ে নতুন ফর্মুলা দিচ্ছে। ঘোষক ফর্মুলা পাল্টে এখন রাষ্ট্রপতি বানিয়ে ফেলেছে। তিনি বলেন, কিছু অর্বাচীন উদ্দেশ্যমূলকভাবে কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। বিএনপি এখন ফর্মুলা পাল্টেছে। এতোদিন বলেছে, জিয়া স্বাধীনতার ঘোষক, এখন বলছেন প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি।
বৃহস্পতিবার কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আওয়ামী লীগ আয়োজিত স্বাধীনতা দিবসের আলোচনায় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা।তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রথম রাষ্ট্রপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমার, প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ।
শেখ হাসিনা বলেন, ইতিহাসে স্পষ্ট আছে কার নেতৃত্বে স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়েছে, দেশ স্বাধীন হয়েছে। কিন্তু কিছু লোক জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য মিথ্যা অপপ্রচার চালায়। তারা বিকৃতভাবে ইতিহাস লিখে। কিন্তু ইতিহাস এবং সত্য কেউ চাপা দিয়ে রাখতে পারে না ।
তিনি বলেন, একাত্তরের ১০ এপ্রিল মুজিবনগরে প্রথম অস্থায়ী সরকার গঠিত হয়েছিল। সেখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতি, তার অবর্তমানে সৈয়দ নজরুল ইসলাম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি এবং তাজউদ্দিন আহমেদ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। শেখ হাসিনা বলেন, বিদেশী বিভিন্ন সংস্থা, দেশী-বিদেশী পত্রপত্রিকা সব জায়গাতেই আছে ২৬ মার্চ কে স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে দেশি-বিদেশি চাপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনেক প্রেসার ছিল। আমিও তো বঙ্গবন্ধু মুজিবের সন্তান। আল্লাহ ছাড়া কারো কাছে মাথা নিচু করব না। কেউ এত চাপ সহ্য করতে পারত কি না, জানি না।
উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা আন্তঃদলীয় কলহের জন্য অনেক জায়গায় পরাজিত হলেও উপজেলা নির্বাচনে বিরোধী প্রার্থীদের চেয়ে অনেক বেশি ভোট পেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এককভাবে প্রার্থী দিতে পারলে উপজেলাগুলোতে বিজয় সুনিশ্চিত করতে পারতো। কিন্তু উপজেলা নির্বাচন রাজনৈতিক নয় বলে দলের অনেক আকাঙ্খী প্রার্থীদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা রোধ করা যায়নি। ভবিষ্যতে স্থানীয় সকল নির্বাচন দলীয়ভাবে অনুষ্ঠানের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, এই ধরনের ব্যবস্থা রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অসুস্থ প্রতিযোগিতা বন্ধ করতে সহায়ক হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, আগামীতে সকল নির্বাচন দলীয়ভাবে করতে হবে। দলীয়ভাবে নির্বাচন না হলে প্রার্থীদের ওপর নিয়ন্ত্রণ থাকে না। দলীয়ভাবে প্রার্থী মনোনয়ন দেয়া যায় না, অথচ গণনার সময় হিসেব করা হয় দলীয়ভাবে। সবাই সবাইকে চিনে, তাই দলীয়ভাবে হিসেব করে ফলাফল লিখে দেয়া হয়। নির্বাচনের কারচুপি ও অনিয়ম বন্ধ করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনিয়ম বন্ধ করতে ইলেক্ট্রনিক ভোটিংয়ে যেতে হবে, তাহলে অনিয়ম বন্ধ হবে। এখন যেসব অবৈধ ভোট পড়ে তা বন্ধ হবে। উন্নত দেশে আধুনিক পদ্ধতিতে ভোট অনুষ্ঠানের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘চিরদিনের জন্য রিগিং বন্ধ করার লক্ষ্যে আধুনিক পদ্ধতিতে যেতে হবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বিশাল দল এবং বর্তমানে ক্ষমতায়ও রয়েছে। ক্ষমতায় থাকার কারণেই অনেক আসনেই অনেক প্রার্থী। যদিও উপজেলা নির্বাচন দলীয়ভাবে অনুষ্ঠিত হয় না- তার পরেও এসব আসনে একজন প্রার্থী দেয়া গেলে ফলাফল আরো অনেক ভালো হতো। শেখ হাসিনা বলেন, যখনই একজন প্রার্থী দেয়া শুরু হলো তখন ফলাফল ভালো হতে শুরু করলো। সাথে সাথেই শুরু হয়ে গেলো নেতিবাচক প্রচারণা। তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ যদি রিগিং করতো তাহলে জামায়াত একটা উপজেলাতেও জিততে পারতো না। অথচ তারা বিভিন্ন জায়গায় চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে জিতেছ।
সংসদ উপনেতা ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। আলোচনা সভায় অন্যানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, সাবেক মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, গৃহায়ন ও পূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, দলের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, উপ-দপ্তর সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস এমপি ।
Posted ১৮:৩৭ | বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০১৪
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin