| শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০১৪ | প্রিন্ট
ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগে তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে বিচার করার জন্য যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের দাবির মুখে বিষয়টি উপেক্ষার (চিল্লাচিল্লি না করার) পরামর্শ দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফ। তিনি বলে, ইতিহাস কেউ বদলাতে পারে না।
নিজ দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের তীক্ষ এবং ক্ষেত্রবিশেষে ‘অশ্রাব্য’ সমালোচনার বিপরীতে ইতিহাস তুলে ধরে যুক্তির ভাষায় বিএনপির সমালোচনার জবাব দেওয়ার পরামর্শ দেন সৈয়দ আশরাফ। তারেক রহমানের নাম উচ্চারণ না করে তিনি বলেন, তাঁর বয়স কম; তাঁর ও তাঁর পরিবারের ভালো যাঁরা চায় না, তাঁরাই তাঁকে এ ধরণের বিতর্কের পরামর্শ দিয়েছেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কখনও নিজেকে বাঙালির নেতা দাবি করে কোনো ঘোষণা করেননি। ৭০-এর নির্বাচনে দুটি বাদে সবকটি আসনে বিজয়ী দলের নির্বাচিত নেতা তিনি। তিনিই হলেন বাঙালি জাতির প্রথম নির্বাচিত নেতা। অনেকেই অনেক কিছু দাবি করতে পারেন কিন্তু তা ইতিহাসে টেকেনি এবং টিকবে না।’
সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘মুজিবনগর দিবস পালনের গুরুত্ব হচ্ছে স্বাধীনতার ঘোষণাকে স্মরণ করা, যেটি বাংলাদেশের স্বাধীনতার দলিল এবং প্রস্তাবনা হিসাবে সংবিধানের অংশ। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা ওই স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র অনুমোদন করেছিলেন এবং তার ভিত্তিতেই স্বাধীনতাযুদ্ধ পরিচালিত হয়েছে। যে কারণে, মুক্তিযুদ্ধের বৈধতা নিয়ে বিদেশে কোনো প্রশ্ন ওঠেনি এবং আমাদেরকে কেউ সন্ত্রাসী বলেনি।’
সৈয়দ আশরাফ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর সরকার, জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়া কেউই ওই স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র সংশোধন করেননি। তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, এখন তাহলে কেন এই বিতর্ক? স্বাধীনতার বিরোধীতাকারীরা বাংলাদেশকে মেনে নিতে পারেনি বলেই এখনও ষড়যন্ত্র করছে এবং এটি সেই ষড়যন্ত্রের অংশ। তিনি বলেন, ‘এটা নিয়ে বেশি চিল্লাচিল্লি, ঝগড়াঝাটি করা উচিত নয়। তবে, এটাও লক্ষ্য রাখার বিষয় যে যাঁরা এগুলো বলেন তাঁরা সবাই কিন্তু পাগল নয়। অনেকে সুপরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্র করছেন।’
মুজিবনগর দিবসের এই আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর যুক্তরাজ্য শাখার প্রায় ডজনখানেক নেতা বক্তব্য দেন। তাঁরা প্রায় সবাই তারেক রহমানকে ‘কুলাঙ্গার’ অভিহিত করে তাকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে বিচারের দাবি জানান।
উল্লেখ্য, গত ৮ এপ্রিল লন্ডনে এক মতবিনিময় সভায় তারেক রহমান ৭২ এ বঙ্গবন্ধু ‘অবৈধ প্রধানমন্ত্রী’ ছিলেন বলে মন্তব্য করেন। এর পর আওয়ামী লীগের শীর্ষনেতারা কঠোর ভাষায় তাঁর ওই মন্তব্যের সমালোচনা করে আসছেন। তবে, সৈয়দ আশরাফ এই প্রথম এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করলেন।
দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে সৈয়দ আশরাফ বলেন, দেশের অবস্থা এখন নিরাপদ এবং সরকার এখন উন্নয়নের দিকেই নজর দিচ্ছে। তবে বাংলাদেশের সংবিধান অনুসারে সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর এবং প্রধানমন্ত্রী চাইলে পুরো পাঁচ বছরই ক্ষমতায় থাকতে পারেন। কোনো অবৈধ পন্থায় তাঁকে অপসারণ করা যাবে না।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী দাবি করেন, বিএনপি নির্বাচনে না গিয়ে যে ভুল করেছে সেটা বুঝতে পেরে পরে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। সামরিক শাসনের অধীনেসহ সবসময় নির্বাচনে অংশ নিয়েছে বলেই জনগণের কাছে আওয়ামী লীগের বার্তা পৌঁছে দেওয়া গেছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর নেতা মওলানা ভাসানী নির্বাচন বর্জন করায় তাঁর দল ন্যাপ নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। একইভাবে বিএনপিকেও নির্বাচন বর্জনের মূল্য দিতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
Posted ০৮:৪৮ | শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০১৪
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin