রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ এবং বাতিল ঘোষণা করেছে হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার দুপুরে হাইকোর্টের বিচারপতি এম মোয়াজ্জেম হোসেন, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি কাজী রেজাউল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে এ রায় দেন। একজন বিচারপতি এই রায়ের বিপক্ষে অবস্থান নিলেও বাকি দুজন পক্ষে ছিলেন।
শুধু রায়ের অংশই পড়ে শোনানো হয়। পূর্ণাঙ্গ রায় পরবর্তীতে প্রকাশ হবে। রায়ে বলা হয়, জামায়াতের নিবন্ধন আইন কর্তৃত্ববর্হিভূত। তাই তাদের নিবন্ধনের কোন আইনী ভিত্তি নেই। রায়ে বলা হয়, সংবিধানের ১০৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ি আপিল দায়েরের ক্ষেত্রে জামায়াতকে সার্টিফিকেট দেয়া হয়। যে কারণে নিবন্ধনের বিষয়টি চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হবে আপিল বিভাগে।
এর আগে ১২ জুন দুই পক্ষের শুনানি শেষে বিষয়টি রায়ের জন্য অপেক্ষমান (সিএভি) রাখা হয়।
আদালতে জামায়াতের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক। অপরদিকে রিট আবেদনের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন ব্যারিস্টার তানিয়া আমির এবং ইসির পক্ষে শুনানি করেন এডভোকেট মহসিন রশিদ।
এখন জামায়াতে ইসলামি এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবে এবং আপিল বিভাগ যদি হাইকোর্টের এই রায় বহাল রাখেন, সেক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনকে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করতে হবে।
গত ১০ মার্চ জামায়াতের নিবন্ধনের বৈধতা নিয়ে করা রিটের ওপর শুনানির জন্য বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করেন প্রধান বিচারপতি মোঃ মোজাম্মেল হোসেন। এরপর বিচারপতি এম মোয়াজ্জাম হোসেন, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহীম ও ও বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে এর উপর শুনানি হয়।
এর আগে রিট আবেদনটিতে সাংবিধানিক ও আইনের প্রশ্ন জড়িত থাকায় বৃহত্তর বেঞ্চে শুনানির জন্য তা প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারপতি এম মোয়াজ্জাম হোসেন ও বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ।
বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের তৎকালীন মহাসচিব ও বর্তমান প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীসহ ২৫ আবেদনকারী ২০০৯ সালে রিটটি দায়ের করেন। প্রাথমিক শুনানির পর ওই বছরের ২৭ জানুয়ারি বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক ও বিচারপতি আবদুল হাইয়ের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বিষয়টির ওপর সংশ্লিষ্টদের প্রতি কারণ দর্শাতে রুল জারি করেন।
রাজনৈতিক দল হিসেবে ২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের সঙ্গে পরিপন্থী ঘোষণা করা হবে না রুলে তা জানতে চাওয়া হয়। এরপর দীর্ঘদিন রিটের বিষয়ে শুনানি হয়নি। ৫ ফেব্রুয়ারির পর কথিত শাহবাগ আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে বিষয়টি আবার সামনে নিয়ে আসা হয়।
For News : news@shadindesh.com
Like this:
Like Loading...
Related