উন্নত চিকিৎসার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়া প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘চিকিৎসকরা বিএনপি চেয়ারপারসনকে বিদেশে পাঠিয়ে চিকিৎসার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন। দল ও পরিবারের পক্ষ থেকে বহুবার খালেদা জিয়াকে দেশের বাইরে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছে। আমরা এ বিষয়ে আলোচনা করবো। এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি। জনগণের দাবি তার চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠানো হোক।

শনিবার বিকালে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী তার (খালেদা জিয়া) চিকিৎসার জন্য, তাকে যে বিদেশে পাঠানো দরকার সেই বিষয়টাকে সম্পূর্ণ বাতিল করে দিয়ে যে ব্যবস্থার কথা বলেন, সেটা সম্পূর্ণভাবে সঠিক নয়। আজ আবার তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ায় আরও প্রমাণিত হলো, অবিলম্বে বিদেশে উন্নত চিকিৎসাকেন্দ্রে পাঠিয়ে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে না পারলে তার জীবন হুমকির মুখে পড়বে।

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘যদিও তারা অনির্বাচিত, তবুও আজ আমি আবার তাদের কাছে আহ্বান জানাতে চাই, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার জীবন রক্ষার জন্য দেশের বাইরে তার চিকিৎসা করার ব্যবস্থা নেওয়া হোক। অন্যথায় আমরা আবারো বলছি, সব দায়দায়িত্ব কিন্তু এই সরকারকে বহন করতে হবে।

খালেদা জিয়ার বর্তমান অবস্থা নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ডাক্তারদের কাছে যতটুকু শুনেছি, তার (খালেদা জিয়ার) একটা মাইল্ড হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। হাসপাতালে থাকতে থাকতেই তার আরেকটা উপসর্গ এসে যায়। সেটা হচ্ছে তার সাফোকেশন শুরু হয়, শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তখন ডাক্তাররা সিদ্ধান্ত নেন যে, আর বিলম্ব না করে তার এনজিওগ্রাম করবেন।’ তিনি জানান, এনজিওগ্রাম করে দেখা গেছে তার মেইন আর্টারিটা ৯৯ পারসেন্ট ব্লক। সেখানে সফলভাবে স্টেইন্ট করেছেন। ডাক্তাররা আশাবাদী, এই ট্রিটমেন্টের ফলে তিনি আপাতত হার্টের যে সমস্যা সেটা থেকে সাময়িকভাবে রিলিভড হলেন।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, মির্জা আব্বাস, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও বেগম সেলিমা রহমান উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে দুপুরে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার এনজিওগ্রাম করা হয়েছে। তার হার্টে ব্লক ধরা পড়ায় সেখানে একটি রিং পরানো হয়।

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, বিএনপি চেয়ারপারসনের এনজিওগ্রাম করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের বোর্ডে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

খালেদা জিয়ার হৃদযন্ত্রের সমস্যা দেখা দিলে শুক্রবার রাত ৩টা ২০ মিনিটে তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খবর পেয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের নেতাকর্মীরা রাতেই হাসপাতালে ছুটে যান।