| শনিবার, ১৪ জুন ২০১৪ | প্রিন্ট
নোমান বিন আরমান : দশদিন বন্ধ থাকার পর আগামিকাল রোববার খুলছে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ। কলেজ শাখা ছাত্রদলের আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম হত্যার পর পরিস্থিতি সামাল দিতে কর্তৃপক্ষ কলেজটি বন্ধ ঘোষণা করেছিল। কলেজ খোলার বিষয়টি শনিবার বেলা সোয়া ২টায় সিলেটের সকালকে নিশ্চিত করেছেন কলেজের প্রিন্সিপাল অধ্যাপক ডা. মুর্শেদ আহমদ চৌধুরী।
ছাত্রদল ও বিএনপির সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আন্দোলন থেকে বিএনপির পর এবার রণভঙ্গ দিয়েছে ছাত্রদল। কলেজ খুললেও তৌহিত হত্যার বিচার নিশ্চিত ও খুনিদের গ্রেফতার দাবিতে তাদের নতুন কোনো কর্মসূচি নেই।
ছাত্রদলের ওসমানী মেডিকেল কলেজ শাখার সভাপতি আসলামুল হক রুদ্র বলেছেন, কাল (রোববার) কলেজ খুলছে বলে শুনেছি। তৌহিদ হত্যার বিচার দাবিতে নতুন কোনো কর্মসূচি আপাতত দেওয়া হচ্ছে না বলেও তিনি জানিয়েছেন। হত্যার পরপরই ঘোষিত ওসমানী মেডিকেল কলেজে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটও তাদের থাকছে না।
৪ জুন রাতে তৌহিদ হত্যার পর পুরো দেশে তোলপাড় শুরু হয়। অভিযোগ ছিলো, ছাত্রলীগই তৌহিদকে খুন করেছে। সরকারি উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে মামলাও হয় কলেজ শাখার সভাপতিসহ ২০ ছাত্রলীগ ক্যাডারের বিরুদ্ধে। বিএনপি, ছাত্রদল ও সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সরাসরি বিচার দাবিতে সোচ্চার হন। তাদের এমন অবস্থানের প্রেক্ষিতে প্রশাসনও হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে তড়িত অ্যাকশনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু এ পর্যন্ত এ ঘটনায় অভিযুক্ত ওসমানী মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি সৌমেন দে’র গ্রেফতার ও ১০জনকে বহিষ্কার ছাড়া দৃশ্যত আর কোনো অর্জন নেই। এই অবস্থায় তৌহিদ হত্যার বিচার দাবিতে রণডঙ্কা বাজিয়ে সূচাগ্র অর্জন ছাড়াই বিএনপির পর পিছু হটলো ছাত্রদলও।
তৌহিদ হত্যার পর ছাত্রদল তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে। এগুলোর মধ্যে ছিলো মিলাদ ও দোয়া মাহফিল, শ্যোকর্যালি এবং সিলেটের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র ধর্মঘট। প্রথম দু’টো কর্মসূচি পালন হলেও পরের কর্মসূচিতে তেমন সাফল্য আসেনি। উল্টো ৮ জুনের ঘোষিত বিএনপির হরতাল ৭জুন বিকেল ৫টায় প্রত্যাহার করায় ধর্মঘট কর্মসূচি ম্লান হয়ে যায়।
প্রসঙ্গত, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের আবু সিনা ছাত্রাবাসের ১০০৩ নম্বর রুমে ডেকে নিয়ে ৪জুন রাতে তাওহীদুল ইসলামকে নির্মমভাবে পেটায় ছাত্রলীগ। এরপর ওসমানীতে নিয়ে তার নিথর দেহ ফেলে রাখলে সেখানে মৃত্যু হয়। তিনি এমবিবিএস ৪৯তম ব্যাচের ছাত্র ছিলেন। তার বাড়ি শরীয়তপুর জেলায়। এঘটনায় তৌহিদের চাচা আনোয়ার হোসেন মাতব্বর বাদী হয়ে ছাত্রলীগের কলেজ শাখা সভাপতি সৌমেন ছাড়াও সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হাই, রাফি, ফাহিম, জুবায়ের, শরীফ, অন্তর, হাফিজ, পাঠান ও আশিষসহ আর অজ্ঞাত ৮/১০জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামরা দায়ের করেন। ‘পালানোর সময়’ পুলিশ সিলেট রেলস্টেশন থেকে সৌমেনকে ৭ জুন রাতে গ্রেফতার করে। পরদিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন সৌমেন।
৭ জুন হরতাল কর্মসূচি প্রত্যাহারের সময় সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি এমএ হক বলেছিলেন, প্রশাসন খুনিদের গ্রেফতারে এক সপ্তাহের সময় চেয়েছে। তাই আমরা হরতাল প্রত্যাহর করে নিচ্ছি। এরমধ্যে গ্রেফতার করা না হলে, হরতাল অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। এর আগে অবশ্য, ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়ে হরতাল কর্মসূচি দিয়েছিলেন তিনি। এখন দ্বিতীয় আল্টিমেটাম শেষ হওয়ার সময়ও বিএনপির নতুন কোনো কর্মসূচির কথা জানা যায়নি।
Posted ১৪:৪৬ | শনিবার, ১৪ জুন ২০১৪
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin