শনিবার ৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

এ কেমন ঈদ?

  |   মঙ্গলবার, ১৩ আগস্ট ২০১৯ | প্রিন্ট

এ কেমন ঈদ?

গুমরে গুমরে বেরিয়ে আসছে কথাগুলো। ‘‘আসলে কাশ্মীরে কোনও ঈদ উদ্‌যাপন হচ্ছে না। কাশ্মীরে কোনও ঈদ উদ্‌যাপন হতে পারে না। কিছু উদ্‌যাপন করার নেই। ছোট্ট ভাইঝিটা সবে কথা বলতে শিখেছে। ঈদের দিনে ওর সঙ্গেও কথা বলতে পারিনি।’’

যন্তরমন্তরের ফুটপাতে শাকিরা আমিনের পিছনে সাদা কাপড়ে কালো রঙে জম্মু-কাশ্মীরের মানচিত্র। শুধুই জম্মু-কাশ্মীর। তার এক পাশে লেখা ‘আনহ্যাপি’ (বিষণ্ণ), অন্য পাশে লেখা নির্বাসিত। কাশ্মীরি ছাত্রছাত্রীদের ভিড়টাকে ঘিরে লোহার ব্যারিকেড। সতর্ক খাকি উর্দির পুলিশ। কালাশনিকভ উঁচিয়ে আধাসেনা।

জুবের রশিদ বললেন, সকাল থেকে দিল্লির বন্ধুদের ফোন করছিলাম, জানেন! ঈদ মুবারক বলছিলাম। বেশ একটা ঈদ-ঈদ ভাব আনার চেষ্টা করছিলাম। হল না। নিজেকে বোকা বানানোর চেষ্টা করছিলাম আসলে। সাত দিন আম্মি-আব্বুর সঙ্গে কথাই হয়নি!’’ দিল্লিতে ইউপিএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে আসা জুবেরের বাবা জম্মু-কাশ্মীর পুলিশে কাজ করেন। তিনিও বারামুলা থেকে ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। ‘‘এখানে কাঁদতে চাই না। দেখাতে চাই না আমি দুর্বল। পরে কাঁদব।’’ বলতে বলতেই জুবের ঝরঝর করে কেঁদে ফেলেন।

দিল্লিতে পড়াশোনা করতে আসা কাশ্মীরি ছাত্রছাত্রীদেরই কয়েক জন আজ সকলকে জড়ো করেছিলেন। পুলিশের অনুমতি নিয়েই। আনন্দ নয়, দুঃখ ভাগ করে নেওয়া। শাকিরার কথায়, ‘‘বাধ্য না-হলে কি ঈদের দিনে যন্তরমন্তরের ফুটপাতে এসে বসি? আজকের উদ্‌যাপন আমাদের ধৈর্যের। মনের জোরের।’’

পুলিশের চিন্তা ছিল, বিক্ষোভ না শুরু হয়ে যায়! কিন্তু শাকিরা-জুবেররা বললেন, ‘‘আমরা ৩৭০ অনুচ্ছেদ নিয়ে কথা বলতে চাই না। সংবিধানে কী রয়েছে, সংসদে কী হয়েছে, আদালতে কী হবে, কিচ্ছু জানি না। শুধু বাড়িতে একটু কথা বলার সুযোগ করে দিন। ফোনগুলো চালু করে দিন। এই ‘কমিউনিকেশন ব্ল্যাকআউট’ তুলে দিন।’’ মন্তাশা, মন্নত— দুই বোন সবে শ্রীনগর থেকে এসেছেন। মন্তাশার ক্ষোভ, ‘‘টিভিতে দেখছি, কাশ্মীরের পরিস্থিতি নাকি শান্ত! ভোর ৫টায় কিছু দোকান খোলে। আলো ফোটার আগেই সব বন্ধ হয়ে যায়। দু’পা অন্তর কাঁটাতার। এটাই স্বাভাবিক?’’

যন্তরমন্তরের উদ্‌যাপনে আর্জি ছিল, সবাই নিজের নিজের খাবার নিয়ে আসবেন। কিন্তু ঈদের দিনে কি কেউ শুধু নিজের জন্য খাবার আনে? দুপুর গড়াতে বিরিয়ানি-কাকোরি কাবাব-শাহি টুকরা-ফিরনিতে টেবিল উপচে পড়ল। দিল্লির বহু মানুষই খাবার নিয়ে চলে এসেছিলেন। তাদের অনেেকই কাশ্মীরি নন, সকলে মুসলিমও নন। লেখিকা অরুন্ধতী রায় শুরু থেকেই হাজির ছিলেন। সমাজকর্মী হর্ষ মন্দার পরিবেশনে হাত লাগালেন। দু’-এক জন নিজে থেকেই বিরিয়ানির হাঁড়ি আর প্লেট নিয়ে এগিয়ে গেলেন পুলিশ-আধাসেনাদের দিকে। অন্যতম উদ্যোক্তা ফায়েক ফয়জান বলছিলেন, ‘‘ভালবাসা অনেক, কিন্তু রাখার জায়গা অল্প।’’

শুধুই ভালবাসা? জামিয়া মিলিয়ার সদ্য স্নাতক ফায়েক বলেন, যারা হোস্টেলে বা পেয়িং গেস্ট থাকে, তাদের কাছে পুলিশ ঢুঁ দিচ্ছে। পরিচয় যাচাই হচ্ছে।’’ আর কিছু?

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

বিডি প্রতিদিন

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৩:১৮ | মঙ্গলবার, ১৩ আগস্ট ২০১৯

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com