নিজস্ব প্রতিবেদক | বুধবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট
বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক চলছে। এরপর আগামী ১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশ বিষয়ে সবকিছু জানানো হবে বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেনন, অন্যায় ও পাশবিকভাবে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও আটক করা হয়েছে। পাঁচ ঘন্টাব্যাপী অভিযান চালিয়ে ৬ শতাধিক নেতাকর্মী আটক করেছে পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিজেরাই ব্যাগে করে বিস্ফোরক এনে এখন মিথ্যা তথ্য দিচ্ছে বলে দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব।
বুধবার (৭ ডিসেম্বর) রাতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
এ সময় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবেদ রাজা, বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার, মহাসচিবের ব্যক্তিগত সহকারী মো. ইউনুস আলী উপস্থিত ছিলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের নীতিনির্ধারকরা নানা উসকানিমূলক বক্তব্যে বলছিলেন যে এমন ঘটনা ঘটাবেন। এটি শুধু বিএনপির ওপর আঘাত নয়, দেশ ও গণতন্ত্রের ওপর আঘাত। সরকার পরিকল্পিতভাবেই এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
তিনি জানান, (পুলিশ) সব ডকুমেন্ট নিয়ে গেছে, লাইট এবং সিসি ক্যামেরা ভেঙেছে। কোনো গণতান্ত্রিক দেশে এমন ঘটনা ঘটতে পারে না।
বিকেল সাড়ে ৪টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আসেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পরে রাত ৮টার দিকে নয়াপল্টন থেকে চলে যান তিনি।
এর আগে, দুপুর আড়াইটার দিকে রাজধানীর নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্য সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। সংঘর্ষ শেষে গ্রেফতার অভিযান চালায় পুলিশ।
এদিন দুপুর ১২টার নয়াপল্টন এলাকায় একাধিক সাজোয়া যান, প্রিজনভ্যান এবং অতিরিক্ত স্ট্রাইকিং ফোর্স মোতায়েন করে পুলিশ।
নয়াপল্টনে সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ২০ জনকে ঢামেক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আহতরা হলেন- বোরহান উদ্দিন কলেজ ছাত্রদলের কর্মী আনোয়ার ইকবাল, পল্টন থানা যুবদলের কর্মী মো. খোকন, মো. মনির হোসেন, মো. রাশেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসীম উদদীন হলের ছাত্রদল নেতা মো. ইয়াসির আরাফাত, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদলের নেতা মো. সুমন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতা মো. জহির হাসান, রূপনগর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মো. শামীম, কদমতলী থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মো. হানিফ, মো. হৃদয়, মো. মকবুল হোসেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. ফারহান আরিফ, শাহবাগ থানা যুবদল নেতা মো. নূরনবী, মনির, শাহ আলী থানা যুবদলের নেতা মো. সুলতান আহমেদ, শেরেবাংলা নগর যুবদলের নেতা মো. আমিনুল ইসলাম, গুলশান থানা ছাত্রদলের নেতা আশরাফুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রদলের বিপ্লব হাওলাদার, মো. আসাদুজ্জামান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের নেতা মো. মেহেদী হাসান নয়ন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা বুধবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল থেকে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন। দুপুরে নেতাকর্মীদের বেশ ভিড় দেখা যায়। এসময় পুলিশ তাদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে।
এসময় পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে। বিএনপির নেতাকর্মীরাও লাঠিসোঁটা নিয়ে পুলিশকে ধাওয়া করে। দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে নয়াপল্টন রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
পরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে বিএনপির নেতাকর্মীরা দফায় দফায় মিছিল করেন। সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে আগুন লাগিয়ে দেন।
এদিকে, বিকেল ৪টার কিছু সময় পর পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলে কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে বেরিয়ে সামনের সড়কে আসেন বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী ও সদস্য আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েলসহ বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা।
এসময় গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সদস্যরা এ্যানী ও জুয়েলকে তুলে নিয়ে যায়। তবে সাংবাদিকরা ডিবির কর্মকর্তাদের কাছে তাদের আটক করা হয়েছে কি না, জানতে চাইলেও কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
অন্যদিকে রাজধানীর নাইটিঙ্গেল মোড়ে ব্যারিকেড দিয়েছে পুলিশ। ফলে রাস্তার দুপাশেই যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। নয়াপল্টনসহ নাইটিঙ্গেল মোড় ও কাকরাইলে অবস্থান নিয়েছে পুলিশ।
নয়াপল্টনে পুলিশের ওপর বিএনপি নেতাকর্মীরাই চড়াও হয়েছিল বলে দাবি করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম-কমিশনার মেহেদী হাসান।
Posted ১৫:৫৪ | বুধবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২২
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain