বৃহস্পতিবার ১৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাহরি খাওয়া সম্পর্কে যা বলেছেন বিশ্বনবি

  |   মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০১৯ | প্রিন্ট

সাহরি খাওয়া সম্পর্কে যা বলেছেন বিশ্বনবি

নিউজ ডেস্ক : রোজার উদ্দেশ্যে ভোর রাতে খাবার গ্রহণই সাহরি। সাহরি খাওয়া সুন্নত। প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ঘোষণায় সাহরিতে রয়েছে বরকত ও কল্যাণ। অমুসলিমরাও রোজা পালন করে, তাদের রোজায় সাহরি নেই। তাই প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহরি গ্রহণ করতে বিশেষ তাগিদ দিয়েছেন।

সাহরি সম্পর্কে বিশ্বনবির ঘোষণা-
– ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা সাহরি খাও। কেননা, সাহরিতে বরকত রয়েছে।’ (মুসলিম)

অন্য হাদিসে এসেছে
– রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘সাহরি খাওয়া বরকতময় কাজ। সুতরাং তোমরা তা পরিত্যাগ করো না। এক ঢোক পানি দিয়ে হলেও সাহরি কর। কারণ যারা সাহরি খায় আল্লাহ তাদের ওপর রহমত বর্ষণ করেন এবং ফেরেশতারা তাদের জন্য রহমতের দোয়া করেন।’ (মুসনাদে আহমদ, মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা, ইবনে হিব্বান)

– রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আমাদের রোজা এবং আহলে কিতাব তথা ইয়াহুদি ও খ্রিস্টানদের রোজার মধ্যে পার্থক্য হলো সাহরি খাওয়া। (অর্থাৎ মুসলিমরা সাহরি খায় আর ইয়াহুদি ও খ্রিস্টানরা সাহরি খায় না)।’ (মুসলিম, নাসাঈ)

সাহরি খাওয়ার সময়
ভোর রাতের শেষ মুহূর্তে সাহরি খাওয়া উত্তম। তা পেট ভরে খেতে হবে এমন নয় বরং অল্প হলেও তা অনেক বরকত ও কল্যাণের। কারো যদি পেট ভরা থাকে তাহলে তার অন্তত এক ঢোক পানি পান করে হলেও সাহরি গ্রহণ করা উচিত। হাদিসে এসেছে-

সাহরি খাওয়ার সময় শুরু হয় মধ্যরাত থেকে। আর শেষ হয় ফজরের আগে। তবে ফজরের আগে তথা শেষ রাতে সাহরি গ্রহণ করাই সর্বোত্তম।

যদি কেউ মধ্যরাতের আগে খাওয়া-দাওয়া করে ঘুমিয়ে পড়ে; তবে তাকে সাহরি গ্রহণের জন্য শেষ রাতে উঠতে হবে। আর মধ্য রাতের পর খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লে সাহরি খাওয়ার বরকত ও হুকুম আদায় হয়ে যাবে।

– হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, যায়েদ বিন সাবেত তাকে জানিয়েছেন যে, তাঁরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে সাহরি খেয়ে (ফজরের) নামাজ পড়তে ওঠে গেছেন।

– হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু জিজ্ঞাসা করলেন, ‘সাহরি খাওয়া ও ফজরের আজান হওয়ার মধ্যে সময়ের ব্যবধান কতটুকু? উত্তরে যায়েদ বিন সাবেত রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ’৫০ অথবা ৬০ আয়াত পড়তে যতক্ষণ সময় লাগে।’ (বুখারি, মুসলিম, তিরমিজি)

৫০/৬০ আয়াত বলতে মধ্যম ধরনের আয়াত। যা তেলাওয়াতে ১৫/২০ মিনিট সময় লাগবে। সে আলোকে ফজরের আজানের ১৫ থেকে ২০ মিনিট আগে সাহরি খাওয়া। অতএব সাহরি খাওয়ার সুন্নাত সময় হলো ফজরের ১৫/২০ মিনিট আগে সাহরি খাওয়া।

সাহরি গ্রহণের উপকারিতা
প্রিয় নবি বলেছেন, ‘তোমরা সাহরি খাওয়ার অভ্যাস গঠন কর। কারণ সাহরি বরকতময় খাদ্য।’ (মুসনাদে আহমদ, নাসাঈ) যেহেতু সাহরি বরকতময়। তাই সাহরিতে বরকত থাকার অর্থই হলো-
– সাহরি গ্রহণে রোজাদার সারাদিন সুস্থ ও সবল থাকবে।
– ইবাদত-বন্দেগিতে আগ্রহের কমতি থাকে না।
– রোজার কষ্ট হালকা হয়।
-প্রিয়নবির নির্দেশ পালন করা হয়। এবং
– ইয়াহুদি-খ্রিস্টানসহ অমুসলিমদের অনুসরণ থেকে মুক্ত থাকা যায়।

ক্ষুধা না থাকলেও সাহরিতে যা খাবেন
সাহরি খাওয়া বরকতের, তাই বলে সাহরি খাওয়া নিয়ে বাড়াবাড়ি একদমই ঠিক নয়। বিশাল আয়োজনে পেট ভরে সাহরি গ্রহণের কোনো দিক-নির্দেশনাও নেই। বরং অতিরিক্ত খাবার গ্রহণে ইবাদত-বন্দেগিতে অলসতা চলে আসে। রমজানের কাঙ্ক্ষিত ফল লাভে বঞ্চিত হয় মুমিন মুসলমান।

তাই অল্প-বিস্তর যে কোনো খাবার গ্রহণেই সাহরি খাওয়ার বিধান পালিত হয়ে যাবে। কেউ যদি খেজুর কিংবা এক ঢোক পানি বা দুধ পান করে অথবা ২/১টি বিস্কুট বা এ পরিমাণ সামান্য খাবারও খায়; তাতেও সাহরি খাওয়ার বরকত অর্জিত হয়ে যাবে।

– হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘সাহরি খাওয়ায় বরকত আসে। সুতরাং তোমরা তা (সাহরি) খেতে ছেড়ো না; যদিও তোমরা তাতে এক ঢোক পানিও খাও। কেননা যারা সাহরি খায়, তাদের জন্য আল্লাহ রহমত নাজিল করেন এবং ফেরেশতারা দোয়া করতে থাকেন।’ (মুসনাদে আহমাদ)

– হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহুর বর্ণনায় এসেছে, প্রিয়নবি বলেছেন, ‘মুমিনের শ্রেষ্ঠ সাহরি হলো খেজুর।’

এমন যেন না হয়-
সাহরিতে বিভিন্ন খাবার গ্রহণের ফলে শ্বাস কষ্ট হওয়ার মতো অবস্থা যেন না হয়। যার ফলে দিনের শুরুতে ফজর সালাত আদায়ে কষ্ট হয়ে যায়। ফজর পরবর্তী সময়ে আল্লাহর জিকিরে বসার আগ্রহ ও মনোযোগ হারিয়ে না যায়।

আল্লাহ তাআলা সব রোজাদারকে প্রতিদিন সাহরি খাওয়ার তাওফিক দান করুন। সাহরির বরকত লাভের তাওফিক দান করুন। ফেরেশতাদের মাগফেরাত লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৪:২৯ | মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০১৯

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com