রবিবার ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

সাবেক সেনা কর্মকর্তার বুকে-পিঠে জখমের দাগ ছিল

  |   মঙ্গলবার, ০৪ আগস্ট ২০২০ | প্রিন্ট

সাবেক সেনা কর্মকর্তার বুকে-পিঠে জখমের দাগ ছিল

কক্সবাজারের টেকনাফে শুক্রবার (৩১ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশের গুলিতে নিহত হন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান (৩৬)।

নিহত সেনা কর্মকর্তা সিনহার বাড়ি যশোরের বীর হেমায়েত সড়কে। তার বাবা অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাবেক উপসচিব মুক্তিযোদ্ধা মরহুম এরশাদ খান। সিনহা ৫১ বিএমএ লং কোর্সের সঙ্গে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কমিশন লাভ করেন। ২০১৮ সালে সৈয়দপুর সেনানিবাস থেকে তিনি স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় নিয়োজিত স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সেও (এসএসএফ) দায়িত্ব পালন করেন।

গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে ওই দিনের ঘটনা সম্পর্কে বর্ণনায় জানা গেছে, ঘটনার দিন টেকনাফ থেকে মেরিন ড্রাইভ সড়ক দিয়ে নিজস্ব প্রাইভেট কারে কক্সবাজারের দিকে যাচ্ছিলেন সিনহা মো. রাশেদ খান (৩৬)। সঙ্গে গাড়িতে ছিলেন সিফাত নামের আরেকজন। ৮৪ কিলোমিটার দীর্ঘ কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কটির পশ্চিম পাশে উত্তাল বঙ্গোপসাগর, আর পূর্ব পাশে উঁচু সবুজ গাছপালার পাহাড়সারি।

সেনাবাহিনী কর্তৃক নির্মিত দৃষ্টিনন্দন মেরিন ড্রাইভ সড়কটি আগে পর্যটকদের ভ্রমণে উৎকৃষ্ট স্থান হলেও এখন আতঙ্কের এলাকায় পরিণত হয়েছে। এ সড়কে বন্দুকযুদ্ধে মানুষের মৃত্যুর সারি লম্বা হতে থাকায় সন্ধ্যার পর কেউ মেরিন ড্রাইভে উঠতে ভয় পান। সন্ধ্যা থেকে ভোররাত পর্যন্ত সড়কটি ফাঁকাই পড়ে থাকে।

মেজর (অব.) সিনহার গাড়িটি প্রথমে বিজিবির একটি চেকপোস্ট এসে থামে। পরিচয় পাওয়ার পর বিজিবি সদস্যরা তাদের ছেড়ে দেন। এরপর রাত ৯টার দিকে সিনহার গাড়িটি এসে পৌঁছায় দ্বিতীয় চেকপোস্ট টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর পুলিশ চেকপোস্টে। পুলিশের নির্দেশনা পেয়ে গাড়ি থেকে প্রথমে হাত উঁচু করে নামলেন সিফাত। এরপর নিজের পরিচয় দিয়ে হাত উঁচু করে গাড়ি থেকে নামলেন মেজর (অব.) সিনহা।

সিফাতের ভাষ্য, কোনও রূপ জিজ্ঞাসাবাদ ছাড়াই মেজর (অব.) সিনহার বুকে একে একে তিনটি গুলি ছোড়েন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলী। মুহূর্তেই তিনি মাটিতে ঢলে পড়েন। সিনহার ব্যক্তিগত পিস্তল থাকলেও সেটি গাড়িতে ছিল।

তবে পুলিশের ভাষ্য অন্য রকম। পুলিশ বলছে, চেকপোস্টে পুলিশ গাড়িটি থামিয়ে তল্লাশি করতে চাইলে অবসরপ্রাপ্ত ওই সেনা কর্মকর্তা বাধা দেন। এই নিয়ে তর্কবিতর্কের একপর্যায়ে অবসরপ্রাপ্ত ওই সেনা কর্মকর্তা তার কাছে থাকা পিস্তল বের করলে পুলিশ গুলি চালায়। এতে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা গুরুতর আহত হন। তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পর সিনহা যে গেস্টহাউসে উঠেছিলেন সেই গেস্টহাউসে সিনহার কক্ষে তল্লাশি করে পুলিশ। পুলিশের দাবি, সেখান থেকে বিদেশি মদ ও গাঁজা উদ্ধার করা হয়।

ঘটনার পর কক্সবাজারের পুলিশ সুপার (এসপি) এ বি এম মাসুদ হোসেন বলেছিলেন, শামলাপুরের লোকজন ওই গাড়ির আরোহীদের ডাকাত সন্দেহ করে পুলিশকে খবর দেন। এই সময়ে তল্লাশি চেকপোস্টে গাড়িটি থামানোর চেষ্টা করে পুলিশ। কিন্তু গাড়ির আরোহী একজন তার পিস্তল বের করে পুলিশকে গুলি করার চেষ্টা করেন। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ গুলি চালায়। এতে ওই ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) শাহীন আবদুর রহমান চৌধুরী বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই অবসরপ্রাপ্ত ওই সেনা কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছিল। শনিবার সকালে তার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। সাবেক ওই সেনা কর্মকর্তার বুকে ও পিঠে জখমের দাগ আছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে এলে বলা যাবে জখমের চিহ্ন গুলির কি-না।

সিনহার শরীরের ওপরের অংশ কর্দমাক্ত এবং বুক ও গলা গুলিবিদ্ধ ছিল। হাতে হাতকড়া লাগানোর দাগ ছিল বলে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে।

পূর্বপশ্চিমবিডি

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১১:০০ | মঙ্গলবার, ০৪ আগস্ট ২০২০

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com