| শনিবার, ১৮ জানুয়ারি ২০১৪ | প্রিন্ট
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা : ‘সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হলে রাষ্ট্রীয়ভাবে আমরা এর কোনো বিচার হতে দেখি না। এসবের মাধ্যমে রাষ্ট্র হামলাকারীদের আরো উসকে দিচ্ছে।’ বুধবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ‘ডায়ালগ অন পিস সিকিউরিটি অ্যান্ড ডেমোক্রেসি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় আলোচকরা এ মন্তব্য করেন।
তারা আরো বলেন, দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক ইস্যুকে কেন্দ্র করে সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ করা হয়। বিশেষ করে, নির্বাচনোত্তর সময়েই এটি বেশি ঘটে। তবে এর কোনো বিচার সঠিকভাবে আমরা হতে দেখি না। এ কারণেই হামলাকরীরা আরো সাহসী হয়ে ওঠে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ বিভাগ এবং অক্সফামের যৌথ উদ্যোগে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
আলোচনা সভায় ‘রিলিজিয়াস মাইনরিটিস বিফোর অ্যান্ড আফটার ন্যাশনাল ইলেকশন ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রবন্ধ পাঠ করেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান।
ড. মিজানুর রহমান বলেন, সাম্প্রদায়িক হামলা মূলত বড় ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। আজ রাষ্ট্রের যেকোনো সমস্যায় সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ চালানো হয়। রাজনীতিবিদরা তাদের নিজেদের উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য সংখ্যালঘুদের রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। এটি কখনো মেনে নেওয়া যায় না। তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালে আমরা পাকিস্তানিদের দেশ থেকে বিতাড়িত করেছি। কিন্তু তারা তাদের বীজ জামায়াতে ইসলামকে এ দেশের মাটিতে রেখে গেছে। তারা এখন বাংলাদেশকে আবার অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য নানা পাঁয়তারা করছে। এর জন্য অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণকে বেছে নিয়েছে। এ ব্যাপারে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’
অন্য বক্তারা বলেন, ‘এসব হামলায় শুধু বিএনপি-জামায়াত নয়। বারবার তাদের কথা বলে মূল দোষীদের এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে। এসব হামলার সঙ্গে সরকারদলীয় লোকজনও জড়িত রয়েছে। ঐসব এলাকায় কর্তব্যরত গোয়েন্দাদের কাছে এর যথেষ্ট তথ্যও রয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। জাতি হিসেবে আমাদের জন্য এটি অত্যন্ত লজ্জাজনক।
অবিলম্বে প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতার করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।’ বক্তারা বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে সংখ্যালঘুদের ওপর সাম্প্রদায়িক হামলা হয়ে আসছে। বর্তমানে এর মাত্রা আরো বেড়ে গেছে। এর মূল কারণ সাম্প্রদায়িক শক্তির প্রকটতা। এই সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী গোষ্ঠীকে অবিলম্বে দেশ থেকে বিতাড়িত করতে হবে। অন্যথায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বেড়েই চলবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শান্তি ও সংঘর্র্ষ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জাহিদ আরেফিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. এম এম আকাশের সঞ্চালনায় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, সম্প্রীতি মঞ্চের সভাপতি ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. অজয় রায়, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর, দৈনিক সমকালের অ্যাসোসিয়েট এডিটর অজয় দাশগুপ্তসহ ঢাবির বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকগণ।
Posted ০৯:২৫ | শনিবার, ১৮ জানুয়ারি ২০১৪
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin