শুক্রবার ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজশাহীর একটি স্কুলে টেন্ডার ছাড়ায় অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে ভবন নির্মাণ, প্রধান শিক্ষকের স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ

  |   শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০১৯ | প্রিন্ট

রাজশাহীর একটি স্কুলে টেন্ডার ছাড়ায় অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে ভবন নির্মাণ, প্রধান শিক্ষকের স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ

শামীম পারভেজ-  স্বাীধনদেশ  : রাজশাহীর একটি স্কুলে টেন্ডার ছাড়ায় অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে ভবন নির্মাণের ঘটনায় প্রধান শিক্ষকের স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। পাবলিক প্রকিউরমেন্টের (পিপিআর) নিয়ম অনুযায়ী একসঙ্গে ৫ লাখ টাকার বেশি কেনাকাটা করতে পারবে না সরকারের নিয়ন্ত্রাধিন কোনো প্রতিষ্ঠান। কিন্তু এই নিয়ম লঙ্ঘন করে রাজশাহী মহানগরীর একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রায় অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে একটি ভবন সংস্কার ও বর্ধিতকরণ কাজ করেছেন। কাজের নামে বিদ্যালয়ের লাখ লাখ টাকা তোছরুপ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। বর্ধিত অংশের একটি কক্ষ করেছেন শিক্ষকদের জন্য। আরে ওপরে দোতলায় নিজের বাসভবন গড়ে তুলেছেন। সেই বাসভবনে আবার নিয়েছেন এসি। যার বিদ্যুৎ বিলও যায় স্কুলের টাকা থেকে। রাজশাহী লক্ষীপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আইরিন জাফরের এমন স্বেচ্ছাচারিতা নিয়ে চরম ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে ওই স্কুলের অন্যান্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে। কিন্তু হয়রানির ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না। তবে প্রধান শিক্ষক আইরিন জাফর দাবি করেছেন, ওই স্কুলের শিক্ষকদের দিয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির অনুমতি নিয়ে তিনি ভবনটির বর্ধিতকরণ কাজ করেছেন। ফলে এখানে কোনো অনিয়ম হয়নি।

পিপিআর নিয়ম অনুযায়ী কোনো সরকারি নিয়ন্ত্রণাধিন কোনো প্রতিষ্ঠান একসঙ্গে সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকার কেনাকাটা বা ব্যয় করতে পারবে। তবে এর জন্যেও কোটেশন আহ্বান করতে হবে। কোটেশন আহ্বান করে সর্বনি¤œ দরদাতাকে দিয়ে ওই কাজটি করাতে বা কেনাকাটা করতে পারবে। আর ৫ লাখ টাকার ওপরে কোনো কাজ করাতে টেন্ডারের মাধ্যমে করাতে হবে। কিন্তু রাজশাহী নগরীর লক্ষীপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এই দুটি নিয়মের একটিও না মেনে তিনি স্কুলের ভিতরে একটি হলরুমের পাশে আরেকটি কক্ষ নির্মাণ এবং হলরুমের ওপরে আরেক তলা নির্মাণকাজ সম্পন্ন করেছেন। এছাড়াও বেশকিছু আসবাবপত্র এবং আনুসঙ্গিক জিনিপত্র ক্রয় বাবদ সব মিলিয়ে প্রায় ৫০ লাখ টাকা ব্যয় করেছেন। প্রধান শিক্ষক আইরিন জাফর নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে এসব কাজ করিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

বিদ্যালয়ের একাধিক সূত্র জানায়, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে উত্তোলনকৃত অর্থ দিয়ে তাঁর ব্যক্তি স্বাথে প্রধান শিক্ষক এসব কাজ করেছেন। তিনি তাঁর নিজের জন্য বাসা তৈরী করতেই আনুসঙ্গি কিছু কাজের পাশাপাশি একসঙ্গে প্রায় ৫০ লাখ টাকা ব্যয় করেছেন অবৈধভাবে।

প্রধান শিক্ষক আইরিন জাফরের দেওয়া তথ্য মতে, হলরুমের সঙ্গে শিক্ষকদের বসার জন্য যে কক্ষটি তৈরী করা হয়েছে তার জন্য ব্যয় হয়েছে ১৩ লাখ টাকা। আর হলরুমের ওপরে দোতাল নির্মাণের জন্য ব্যয় হয়েছে ১৯ লাখ টাকা। সবমিলিয়ে তাঁর হিসেবেই ব্যয় হয়েছে ৩২ লাখ টাকা। তবে স্কুলের একাধিক শিক্ষক-কর্মচারী জানান, আসবাবপত্রসহ আনুসঙ্গিক জিনিসপত্র কিনতে আরো ব্যয় হয়েছে প্রায় ১০-১৫ লাখ টাকা। সবমিলিয়ে প্রায় অর্ধকোটি টাকা ব্যয় হয়েছে এ কাজে। যা তিনি করতে পারেন না। এটি সম্পূর্ণ সরকারি নীতি বিরোধী।

বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হলে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক প্রফেসর দেবাশীষ রঞ্জন রায় বলেন, ‘৫ লাখ টাকার ওপরে কখনোই কোনো বিদ্যালয় টেন্ডার ছাড়া কোনো কাজ করতে পারবে না। আর ৫ লাখ টাকার নিচে করতে হলে অবশ্যই কোটেশন করতে হবে। সেটিও বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা করতে পারনে না। এই ধরনের অনিয়মের অভিযোগ পেলে অবশ্যই ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৮:৩৯ | শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০১৯

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com