| রবিবার, ০৮ এপ্রিল ২০১৮ | প্রিন্ট
মুহাম্মাদ আবু আখতার: ঈমান মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শক্তি। ঈমানি শক্তির মোকাবেলায় দুনিয়ার কোন শক্তি টিকে থাকতে পারে না। সত্যিকার ঈমানদারগণের কোন দুশ্চিন্তা ও দুর্ভাবনা নেই। তারা সর্বদা আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করে থাকে। তাদের বিজয় সুনিশ্চিত। আল্লাহ তায়ালা এ ব্যাপারে ঘোষণা করেছেন, ‘আর তোমরা নিরাশ হয়ো না এবং দুঃখ করো না। যদি তোমরা সত্যিকার ঈমানদার হও তবে, তোমরাই বিজয়ী হবে।’
(সুরা আলি ইমরান: ১৩৯)
ইসলামের ইতিহাসে বর্ণিত অসংখ্য ঘটনায় আল্লাহ তায়ালার এ বাণীর সত্যতা বারবার প্রমাণিত হয়েছে। স্বয়ং রাসুলুল্লাহ (সা) ও খোলাফায়ে রাশিদার যুগে প্রায় প্রতিটি যুদ্ধে মুসলমানদের লোকসংখ্যা ও অস্ত্রসস্ত্র অনেক কম হওয়া সত্ত্বেও মুসলমানগণ কাফির-মুশরিকদের ওপর বিজয় লাভ করে। ঈমানি শক্তির জোরে বদর যুদ্ধে মাত্র ৩১৩ জন সাহাবী ১০০০ কাফির সৈন্যের মোকাবেলায় বিজয়ী হয়। মুতার যুদ্ধে মাত্র তিন হাজার সাহাবী এক লক্ষ রোমান সৈন্যবাহিনীর বিরুদ্ধে বিজয় লাভ করে। এরূপ আরো অনেক দৃৃষ্টান্ত ইসলামের ইতিহাসে আছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে নবী, আপনি মুসলমানগণকে উৎসাহিত করুন জেহাদের জন্য। তোমাদের মধ্যে যদি বিশজন দৃঢ়পদ ব্যক্তি থাকে, তবে জয়ী হবে দু’শর মোকাবেলায়। আর যদি তোমাদের মধ্যে থাকে একশ লোক, তবে জয়ী হবে হাজার কাফিরের ওপর। কারণ ওরা জ্ঞানহীন।’ (সূরা আনফাল: ৬৫)
ঈমান গ্রহণের পর যারা আল্লাহ ও তার রাসুলের নির্দেশ অনুযায়ী সৎকর্ম করবে তাদের জন্য আল্লাহ তায়ালা ৩ টি বিষয়ের ওয়াদা করেছেন। এ ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান গ্রহণ করে ও সৎকর্ম করে, আল্লাহ তায়ালা ওয়াদা করছেন যে, তাদের অবশ্যই পৃথিবীতে শাসনকর্তৃত্ব দান করবেন যেমন তিনি শাসনকর্তৃত্ব দান করেছেন তাদের পূর্ববতীদের এবং তিনি অবশ্যই প্রতিষ্ঠিত করবেন তাদের ধর্মকে, যা তিনি তাদের জন্যে পছন্দ করেছেন এবং তাদের ভয়-ভীতির পরিবর্তে অবশ্যই তাদের শান্তি ও নিরাপত্তা দান করবেন। তারা আমার ইবাদত করবে এবং আমার সাথে কাউকে শরীক করবে না। এরপর যারা অকৃতজ্ঞ হবে, তারাই অবাধ্য।’ (সুরা নুর: আয়াত নং ৫৫)
সাহাবায়ে কিরাম (রা) ঈমান গ্রহণের পর আল্লাহ ও তার রাসুলের প্রতিটি হুকুম অক্ষরে অক্ষরে পালন করতেন। এ কারণে আল্লাহ তায়ালা তাদের সাথে কৃত ওয়াদা পূর্ণ করেছিলেন। খুব অল্প সময়ের মধ্যে তাদেরকে পৃথিবীতে অন্যান্য জাতির ওপর শাসনকর্তৃত্ব দান করেছিলেন। ইসলামকে সকল ধর্মের ওপর প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। আর কাফির বেঈমানদের জুলুম নির্যাতন থেকে তাদেরকে নিরাপত্তা দান করেছিলেন। বর্তমান যুগের অধিকাংশ মুসলমান সাহাবায়ে কিরাম (রা) এর অনুসৃত পথ থেকে দূরে সরে আসায় তাদের অধঃপতন শুরু হয়েছে। বর্তমান মুসলিম বিশ্বের কোন রাষ্ট্রই পরিপূর্ণভাবে ইসলাম অনুযায়ী পরিচালিত হয় না। অধিকাংশের ঈমান ও আমলের অবস্থা অত্যন্ত করুণ। তাদের অবস্থা এমন যে, ইসলামের যেসব বিধান তাদের নফসের কাছে পছন্দনীয় ও পালন করা সুবিধাজনক সেসব মেনে চলে। পক্ষান্তরে যেসব বিধান পালন করা নফসের কাছে অপছন্দনীয় এবং কষ্টসাধ্য সেসব বিধান মানতে তারা অবহেলা করে। এর ফলে তারা দুনিয়াতেও কাফির বেঈমানদের দ্বারা লাঞ্চিত হচ্ছে। পরকালীন জীবনেও আল্লাহর কঠিন শাস্তির যোগ্য হয়ে উঠছে। এ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তবে কি তোমরা কিতাবের কিছু অংশ বিশ্বাস কর এবং কিছু অংশ অবিশ্বাস কর? যারা এরূপ করে পার্থিব জীবনে তাদের জন্য রয়েছে চরম লাঞ্চনা। আর কিয়ামতের দিন তাদের কঠোরতম শাস্তির দিকে পৌঁছে দেয়া হবে। আল্লাহ তোমাদের কাজ-কর্ম সম্পর্কে বে-খবর নন। (সুরা বাকারা: আয়াত নং ৮৫)আমাদের সময়.কম
Posted ২৩:০৫ | রবিবার, ০৮ এপ্রিল ২০১৮
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain