বুধবার ১৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১লা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মহিলা আ.লীগের কমিটিতে কেন্দ্রীয় জামায়াত নেতার মেয়ে

  |   মঙ্গলবার, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ | প্রিন্ট

মহিলা আ.লীগের কমিটিতে কেন্দ্রীয় জামায়াত নেতার মেয়ে

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে সাংগঠনিক সম্পাদক পদ পেয়েছেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা মুমিনুল হক চৌধুরীর মেয়ে রিজিয়া চৌধুরী।  সোমবার চট্টগ্রামের চকবাজার আনিকা কমিউনিটি সেন্টারে দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে এ কমিটি ঘোষণা করা হয়। মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি বেগম সাফিয়া খাতুন সম্মেলন উদ্বোধন করেন। প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় মহিলা বিষয়ক সম্পাদক বেগম ফজিলাতুন্নেছা ইন্দিরা।

ঘোষিত কমিটিতে সভাপতির পদ পান গত সংসদের সংরক্ষিত নারী সাংসদ চেমন আরা তৈয়ব। সাধারণ সম্পাদক পদ পেয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন নেতা প্রয়াত আবদুল্লাহ আল হারুনের মেয়ে শামীমা হারুন লুবনা। আর সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ পয়েছেন রিজিয়া চৌধুরী।

দলের নেত্রীরা জানান, রিজিয়া চৌধুরীর নাম ঘোষণার পর সম্মেলনে তুমুল হৈ-চৈ শুরু হয়। আলোচনায় যোগ হয় রিজিয়া চৌধুরীর বাবা ও স্বামীর অতীত ইতিহাস। এ নিয়ে প্রতিবাদ করার সময় কমিটির সহসভাপতির পদ পাওয়া শাহিদা আক্তার জাহান অজ্ঞান হয়ে পড়েন।

তবে গুজব ছড়ানো হয় সভাপতির পদ না পেয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়েন শাহিদা আক্তার জাহান। মূলত তিনি অজ্ঞান হন জামায়াত নেতার কন্যা ও স্ত্রীকে কমিটিতে রাখার কারণে। তবে শাহিদা আক্তার জাহান সভাপতি প্রার্থী ছিলেন।

এ ব্যাপারে মুঠোফোনে জানতে চাইলে নগরীর সার্জিস্কোপ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শাহিদা আক্তার জাহান জামায়াত নেতার কন্যা ও স্ত্রী রিজিয়া চৌধুরীকে পদ দেয়া নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করলেও তেমন কিছু বলতে চাননি। বিষয়টিকে তিনি দলীয় ব্যাপার বলে এড়িয়ে যান।

এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় মহিলা বিষয়ক সম্পাদক বেগম ফজিলাতুন্নেছা ইন্দিরার মোবাইলফোনে বারবার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নেত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে  বলেন, রিজিয়া চৌধুরী জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা মুমিনুল হক চৌধুরীর মেয়ে। মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত গোলাম আযমের শীষ্য আবু রেজা নদভীর স্ত্রী। নদভী চট্টগ্রাম-১৪ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে আওয়ামী লীগের সাংসদ। মমিনুল হক চৌধুরী সাতকানিয়া লোহাগাড়া আসন থেকে ১৯৯১ সালে এবং পরে বাঁশখালী আসন থেকে জামায়াতের পক্ষে নির্বাচন করেন।

খোলস পাল্টে নদভী আওয়ামী লীগের এক প্রভাবশালী নেতার আশীর্বাদে নিবেদিতপ্রাণ কর্মীদের হটিয়ে নৌকায় মনোনয়ন পান। এ নিয়ে দলের নেতাকর্মী থেকে শুরু করে প্রগতিশীল মানুষের মধ্যে এখনো হতাশা ও ক্ষোভ রয়েছে।

নেত্রীদের অভিযোগ, গত চারদলীয় জোট সরকারের সময় সাতকানিয়া আসনে জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরীকে বিজয়ী করার পেছনে নদভীর বিশেষ ভূমিকা ছিল। আবু রেজা নদভীর সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের বিশেষ যোগাযোগ আছে অভিযোগ রয়েছে।

২০০১ সালের নির্বাচনে সাতকানিয়া আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন চেয়ে কর্নেল অলির কাছে হার মেনেছিলেন নদভী। এরপর কিছুদিন চুপসে থাকলেও পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে খোলস পাল্টে তিনি দলের প্রভাবশালী এক মন্ত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এক্ষেত্রে মধ্যমণির দায়িত্ব পালন করেন ঘোষিত কমিটির সভাপতি চেমন আরা তৈয়ব।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভারতের একটি মাদ্রাসা থেকে আরবি ভাষায় উচ্চ শিক্ষা নেয়ার পর নগরীর চান্দগাঁও থানাধীন হাজিরপুল নামক এলাকায় দারুল মাআরিফ কওমি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা শুরু করেন নদভী। সেখান থেকে চাকরিচ্যুত হওয়ার পর জামায়াতি কানেকশনের মাধ্যমে ইসলামী ইউনিভার্সিটিতে প্রভাষক পদে চাকরি নেন তিনি। সেখানেও বেশিদিন স্থায়ী হননি। এরপর তিনি নিজেই আল্লামা ফয়জুল্লাহ ফাউন্ডেশন নামে একটি এনজিওর কার্যক্রম শুরু করেন। গত ১/১১ সরকারের সময় গোয়েন্দা সংস্থা এই ফাউন্ডেশনের বিরুদ্ধে জঙ্গি পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগ তোলে।

ঢাকাটাইমস

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১০:০৫ | মঙ্গলবার, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com